‘আমাদের দৃষ্টিটা অনেক তীক্ষ্ণ করতে হবে। আমরা নিজেদের গা বাঁচানোর নীতিতে ছিলাম। তরুণ প্রজন্ম এখন তাদের জায়গা থেকে অন্যের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেবেন। আমাদের দৃষ্টি আর তিন দেশ—ভারত, চীন ও আমেরিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাশিয়া-জাপান-মধ্যপ্রাচ্য ও জিব্রাল্টার প্রণালি হয়ে পানামা খালের দুই পাশের দুই আমেরিকা পর্যন্ত আমাদের দৃষ্টি থাকবে।’ এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রমনায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতি সেল। বিকেলে সংলাপের তৃতীয় পর্বের আলোচনার বিষয় ছিল ‘বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের উদীয়মান অর্থনীতি: পররাষ্ট্রনীতিতে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা’। এই আলোচনায় অংশ নিয়ে সারজিস আলম এসব কথা বলেন।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে পররাষ্ট্রনীতি নতুন করে তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন সারজিস আলম। পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে নাগরিক কমিটির এই নেতা বলেন, ‘কেউ যদি প্রভাবের মানসিকতা খাটাতে চায়, তাদের প্রতি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনাদের অ্যাপ্রোচ আমাদের প্রতি যা হবে, আমাদের মনোভাবও আপনাদের প্রতি একই হবে। আমরা কারও ওপর নির্ভরশীল নই, আমরা মিউচ্যুয়ালি ডিপেনডেন্ট (পরস্পর নির্ভরশীল)।’

‘আমাদের এখন সম্প্রসারণ করতে হবে’ উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘ভূমির সম্প্রসারণ কতটুকু সম্ভব বা সম্ভব নয়, তা সময় নির্ধারণ করবে। কিন্তু সাংস্কৃতিক সম্প্রসারণ আবশ্যক। বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বৈশ্বিক সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে।’

আলোচনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন, বঙ্গোপসাগরে স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি (কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন) বজায় রাখতে হবে। সেখানে বাংলাদেশের রিসোর্স (সম্পদ) আছে, পানি আছে।

মিয়ানমার ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে জাতীয় নাগরিক কমিটিকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ আছে। অথচ বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের স্বার্থ নিয়ে আমরা ভাবিনি। এটা ভাবতে হবে। মিয়ানমারকে স্থিতিশীল করার দায়িত্ব বাংলাদেশের। এটা করার জন্য যা যা করার দরকার, বাংলাদেশকে করতে হবে। সেটা কি রাজনৈতিক, নাকি অরাজনৈতিক, কূটনৈতিক নাকি সামরিক—সেটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে ভবিষ্যতে নির্ধারণ করতে হবে।’

আলোচনায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আকরাম হুসাইন বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত যদি না হয়, তাহলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তও আসবে না। জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা মীর আরশাদুল হকের সঞ্চালনায় আলোচনার এই পর্বে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য এস এম সুজা উদ্দীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র দ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ