দিনাজপুরে এমবিবিএস বা বিডিএস ব্যতীত নামের আগে ডাক্তার না লেখা, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ওষুধের তালিকা প্রণয়ন, চিকিৎসক–সংকট নিরসন, নিম্নমানের মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা ও চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা একটায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে সমাবেশে এসব দাবি তুলে ধরেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন তাঁরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ হাদীউজ্জমান, ইন্টার্ন চিকিৎসক নাজমুল হাসান, তৌফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী আবু সাহেল, গোলাম রব্বানী, মেহেদী হাসান প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও অরাজকতার কারণে সাধারণ মানুষ তাঁদের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসক না হয়েও নামের আগে চিকিৎসক ব্যবহার করে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে। ম্যাটস, ডিএমএফ ও এলএমএফ পাস করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিএমডিসি যখন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা হাইকোর্টে রিট করেছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিএমডিসির বিরুদ্ধে তাঁদের করা রিট প্রত্যাহার চাই। একই সঙ্গে সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) বন্ধ ও নতুন ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানাই।’

এ ছাড়া সমাবেশে বক্তারা স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক–সংকট নিরসনে অবিলম্বে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করা, বিসিএসে চিকিৎসকদের বয়সসীমা ৩৪ করা, ফার্মেসিতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত ওষুধ বিক্রি না করা ও চিকিৎসকদের সুরক্ষায় নির্দিষ্ট আইন প্রয়োগ করার দাবি জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ম ড ক ল কল জ

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসক মাত্র ৩ জন, অন্তঃসত্ত্বাদের সেবায় নার্স, দাঁতের চিকিৎসায় টেকনোলজিস্ট

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামের কিশোরী ইয়াসমিন আখতার (১৫) পেটে ব্যথা নিয়ে রোববার দুপুরে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারীরা রোগীর শয্যায় তাঁকে শুইয়ে রাখেন। কিছু সময় পর জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এভাবে প্রতিদিন তিনজন চিকিৎসক, চার থেকে পাঁচজন স্বাস্থ্য সহকারী ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দিয়ে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫০ থেকে ৩০০ মানুষের চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে। এ উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস।

হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া গেল চিকিৎসক আলমগীর হোসেনকে। তিনি হাসপাতালের ১০ নম্বর কক্ষে বসেন। এ কক্ষের সামনে রোগীদের ভিড় দেখা গেল বেশি। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীর চাপ একটু বেশি। এত সব রোগী সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়। এ ছাড়া বাহুবল দাঙ্গাপ্রবণ এলাকা। হঠাৎ ঝগড়া করে একসঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে লোকজন চলে আসেন। যতটুকু সম্ভব এর মধ্যেই রোগীদের ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।’ তিনি জানান, জরুরি বিভাগের দায়িত্ব, বহির্বিভাগের দায়িত্ব, আবাসিক বিভাগের দায়িত্বসহ মোট ৫টি পদে তাঁকে একাই কাজ করতে হচ্ছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রেষণে তাঁকে এখানে পাঠানো হয়েছে।

শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় রোববার অন্যান্য দিনের তুলনায় বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ অনেক বেশি ছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারে রোগীদের দীর্ঘ সারি। কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা রোগের ধরন অনুযায়ী রোগীদের বিভিন্ন কক্ষে চিকিৎসকদের কাছে পাঠাচ্ছেন।
জরুরি বিভাগ সামলাচ্ছেন একজন চিকিৎসক এবং দুই থেকে তিনজন স্বাস্থ্য সহকারী। তাঁরা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছে, চিকিৎসকের সংকটের কারণে কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। চিকিৎসকদের ১৭টি পদের মধ্যে ১৪টিই শূন্য। শিশুদের জন্য জুনিয়র কনসালট্যান্ট আছেন মাত্র একজন। গাইনি বিভাগের কোনো চিকিৎসক না থাকায় একজন জ্যেষ্ঠ নার্স দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

বেশ কয়েকজন রোগীর সঙ্গে চিকিৎসা নিয়ে কথা হলে তাঁদের অধিকাংশই বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্টির কথা জানালেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিকিৎসক মাত্র ৩ জন, অন্তঃসত্ত্বাদের সেবায় নার্স, দাঁতের চিকিৎসায় টেকনোলজিস্ট