দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 19th, February 2025 GMT
দিনাজপুরে এমবিবিএস বা বিডিএস ব্যতীত নামের আগে ডাক্তার না লেখা, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ওষুধের তালিকা প্রণয়ন, চিকিৎসক–সংকট নিরসন, নিম্নমানের মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা ও চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা একটায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে সমাবেশে এসব দাবি তুলে ধরেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন তাঁরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ হাদীউজ্জমান, ইন্টার্ন চিকিৎসক নাজমুল হাসান, তৌফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী আবু সাহেল, গোলাম রব্বানী, মেহেদী হাসান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও অরাজকতার কারণে সাধারণ মানুষ তাঁদের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসক না হয়েও নামের আগে চিকিৎসক ব্যবহার করে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে। ম্যাটস, ডিএমএফ ও এলএমএফ পাস করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিএমডিসি যখন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা হাইকোর্টে রিট করেছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিএমডিসির বিরুদ্ধে তাঁদের করা রিট প্রত্যাহার চাই। একই সঙ্গে সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) বন্ধ ও নতুন ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানাই।’
এ ছাড়া সমাবেশে বক্তারা স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক–সংকট নিরসনে অবিলম্বে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করা, বিসিএসে চিকিৎসকদের বয়সসীমা ৩৪ করা, ফার্মেসিতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত ওষুধ বিক্রি না করা ও চিকিৎসকদের সুরক্ষায় নির্দিষ্ট আইন প্রয়োগ করার দাবি জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম ড ক ল কল জ
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন
কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।
মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপমুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)
নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।
আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)
এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে