নিজেকে সুখী রাখার পাঁচটি সহজ অভ্যাস
Published: 19th, February 2025 GMT
আমাদের সুস্থতার বেশির ভাগ আমাদের নিজেদের সহজ কিছু অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। নানা কারণে আজকাল চারপাশে অনেকেই অসুখী হয়ে ঘুরে বেড়ান। অথচ ছোট ছোট অভ্যাসের চর্চা করেই আমরা সুখে থাকতে পারি। আমাদের মানসিকভাবে প্রশান্তিতে থাকতে সহযোগিতা করবে, এমন পাঁচটি অভ্যাস নিয়ে আজকের আলোচনা।
মনোযোগিতামনোযোগিতা হলো ‘এখন, এখানে’ কী ঘটছে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকা। অর্থাৎ এ মুহূর্তে কেমন লাগছে, কী করছি, কী চাইছি ও চিন্তা করছি, সে ব্যাপারে সচেতনতা। পুরোনো নানা স্মৃতি মাথায় নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে ছুটতে গিয়ে আমরা যেন বর্তমানের মুহূর্তগুলোকে হারিয়ে না ফেলি, সে ব্যাপারে সচেতন থাকা প্রয়োজন। মনোযোগিতার চর্চা আমরা বিভিন্নভাবে করতে পারি। যেমন খাওয়ার সময় অন্য কোনো কিছুতে নিজেকে ব্যস্ত না রেখে পঞ্চেন্দ্রিয় দিয়ে খাওয়া। মানে খাবার উপভোগ করার জন্য খাবারের বর্ণ, গন্ধ, চিবানোর শব্দ, হাত ও জিহ্বার সঙ্গে খাবারের সংস্পর্শ মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করা। তেমনি অন্যান্য কাজ যেমন গোসল, শরীরচর্চা, ধ্যান, ঘর ও বাইরের বিভিন্ন কাজও পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে করার মাধ্যমে মনোযোগিতার চর্চা করা যেতে পারে। এই চর্চা আমাদের শরীর ও মনকে শান্ত রাখে, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং জীবনকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে সাহায্য করে। আজকাল স্মার্টফোনে আসক্তি আমাদের মনোযোগী জীবনযাপনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারে তাই সংযম ও বিবেচনা থাকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
কাজ ও বিশ্রামের ভারসাম্যকাজ আমাদের সুস্থ রাখে। হোক তা ঘর বা বাইরের কাজ। নিজের পরিচয় তৈরিতে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হতেও কাজ বা কর্মসংস্থান প্রয়োজন। পছন্দের কাজে যুক্ত থাকলে নিজের জীবনে যেমন স্বস্তি ও সচ্ছলতা থাকে, তেমনি পরিবার ও সমাজে অবদান রাখা যায়। কিন্তু কাজের নেশায় অবিরাম ছুটে চলা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে ভীষণভাবে ব্যাহত করে। তাই কখন কোথায় থামতে হবে, জানাটা জরুরি। সারা দিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য হলেও বিরতি নেওয়া, সপ্তাহে অন্তত একদিন ছুটি কাটানো এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের সুস্থ থাকতে সহযোগিতা করে।
পছন্দের বই পড়েও নিজেকে খুশি করা যায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব