‘কুয়েটের হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সম্পৃক্ত হয়েছিল’
Published: 20th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (কুয়েট) কোথাও ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে তার জন্য ছাত্রদল দায়ী থাকবে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি আজ বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ওই দাবি করেন।
এক প্রশ্নের জাবাবে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ফুটেজে দেখেছি, ওই হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সম্পৃক্ত হয়েছিল।’
মতবিনিময় সভা নাম দেওয়া হলেও সেটি ছিল মূলত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ওই সভায় ঘুরেফিরে কুয়েট পরিস্থিতি ও গত বুধবার ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে আসে। এসব প্রশ্নের জবাব দেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি।
কুয়েট ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার পেছনে দায়ী কে, এমন প্রশ্ন করা হলে কৌশলে উত্তর দেন জাহিদুল ইসলাম। গত বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়া কুয়েটের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেটের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল দুই-তিন দিন আগ থেকে ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাচ্ছে। এ ঘটনা থেকেই সূত্রপাত হয়েছে। এরপর তাদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছে। তারপর বাইরে থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছে। এর জন্য দায়ী স্পষ্ট হয়েছে।’
কুয়েট ক্যাম্পাসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনে ছাত্রশিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেন জাহিদুল। তিনি বলেন, ওই ঘটনার জন্য ছাত্রশিবিরের কোনো দায় নেই।
কুয়েটসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধ হলে এর জন্য ছাত্রদল দায়ী থাকবে। কুয়েটে যে ঘটনাটা ঘটল, আমি মনে করি কোথাও সামনে যদি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়, এর জন্য স্পষ্ট, প্রমাণসহকারে ছাত্রদল দায়ী থাকবে।’
শিবির সভাপতি বলেন, ‘কুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠনকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। যদি এমন ঘটনা না ঘটত, তাহলে কি আজকে লাল কার্ডের ঘটনা ঘটত! আজকে কি এই অস্থিতিশীল পরিবেশ সারা দেশে তৈরি হতো! তাহলে এর জন্য দায়ী কে?’
কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতির সজ্ঞায়ন হলো, সেখানে শিক্ষামূলক কার্যক্রম থাকবে, জ্ঞানচর্চার প্রতিযোগিতা থাকবে, সেবামূলক কার্যক্রম থাকবে। শিক্ষার্থীদের মতের বাইরে ছাত্রশিবির কোনো মত চাপিয়ে দেয়নি, দেবেও না। শিক্ষার্থীরা যা চাইবে, ক্যাম্পাসে তাই হবে।’
গত বুধবার ছাত্রদলের করা একটি প্রশ্ন আজ ছাত্রশিবির সভাপতির কাছে করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি হয়েছেন, তিনি কি তাঁর শিক্ষাজীবনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন? অথবা তিনি কি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছেন? তিনি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েই তাঁর কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যে ছাত্ররাজনীতির কারণে মানুষ হত্যা করতে হয়, যে ছাত্ররাজনীতির কারণে মায়ের বুক খালি হয়, সেই ছাত্ররাজনীতি আমরাও চাই না।’
সভার শুরুতেই খুলনা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি খুলনা সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত হওয়া সায়েন্স ফেস্ট পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসেছেন। যেহেতু খুলনায় এসেছেন তাই তিনি খুলনার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে চান। তারই অংশ হিসেবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নোমান মোর্শেদ, খুলনা মহানগরের সভাপতি আরাফাত হোসেন, সেক্রেটারি রাকিব হাসান, আইন ও সমাজসেবা সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল দ র জন ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক