ঢাকা–রাজশাহী রুটে একটি চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে তাঁকে থানার দায়িত্ব থেকে অবমুক্ত হয়ে জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত হতে বলা হয়েছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনায় ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, সব মিলিয়ে এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন দিন পর মামলা৯ ঘণ্টা আগে

পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠি পাওয়া মাত্র তাঁকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

মিন্টু আজ সন্ধ্যায় জানান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ক্লোজ করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুনঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির যে বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলসের’ একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ার পর রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতি শুরু হয়। তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে ঘুরিয়ে একই জায়গায় বাসটি নিয়ে গিয়ে রাত ৩টা ৫২ মিনিটে ডাকাতেরা নেমে যায়। এরপর যাত্রীদের চাপের মুখে চালক সেখান থেকে বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশে ছাড়েন। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রামে থানায় ঢোকানো হয়।

ডাকাতির ঘটনায় সেখানে বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাঁদের আদালতের সামনে হাজির করলে আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন।

আরও পড়ুন‘অভিযুক্ত’ চালক-সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন বাদীর২ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চলন ত ব স র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

বদলীর পরও কুমিল্লায় বহাল এএসপি শামীম

বদলীর আদেশ কার্যকর হওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কুমিল্লা ছাড়েননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়া। দিনাজপুর ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে যোগদানের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও কুমিল্লাতেই দায়িত্ব পালন করছেন। 

বহাল থাকার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তাদেরকে মামলার হুমকি দেন কুমিল্লার চাঁদাবাজির অডিও ফাঁস হওয়ায় ঘটনায় আলোচিত এএসপি মো. শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়া।

বদলির কারণ প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদক জানতে চাইলে শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়া বলেন, “আমি অসুস্থ, আমি বক্তব্য দিতে পারব না। আমার বিরুদ্ধে কোন নিউজ করলে মামলা করে দিব। সাংবাদিক সম্মেলন করব। আপনি নিউজ করেন, আমি দেখে নিব।”

সম্প্রতি দুটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একটিতে তাকে ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্বে অনীহা প্রকাশ করতে শোনা যায়। অপরটিতে সার্জেন্ট ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টরদের (টিআই) নির্দেশ দিতে শোনা যায়, বাসস্ট্যান্ড থেকে সংগৃহীত টাকা সরাসরি তার ঘনিষ্ঠদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

গত ২০ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তরের প্রজ্ঞাপনে শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়াকে কুমিল্লা থেকে বদলি করে দিনাজপুরে পাঠানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিলে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে তাকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত করা হবে। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি।

চলতি বছরের আগস্টে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে এসব অভিযোগ তিনি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ নজির আহমেদ বলেন, “জনস্বার্থে তাকে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের হুমকির বিষয় অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রুবেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ