আরও ছয় জিম্মিকে ফেরত দেবে গাজা, প্রস্তুত ইসরায়েল
Published: 22nd, February 2025 GMT
ইসরায়েল আজ শনিবার গাজা থেকে আরও ছয়জন জিম্মিকে গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এর আগে গতকাল দেশটি অভিযোগ করেছে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হামাস যে চার জিম্মির মরদেহ ফেরত পাঠিয়েছে, তাদের একজনের সঙ্গে কোনো জিম্মির মিল পাওয়া যায়নি। আর এ ঘটনায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে জটিলতা বেড়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কর্মকর্তাদের মতে, গত মাসে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তানুসারে প্রথম ধাপে ৩৩ জন জীবিত জিম্মিকে হস্তান্তর করার কথা ছিল। এরই মধ্যে বেশির ভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকি ছয় জীবিত জিম্মিকে আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ওই ছয় জিম্মির মধ্যে এলিয়া কোহেন (২৭), তাল শোহাম (৪০), ওমরশেম তোভ (২২) ও ওমর ওয়েনকার্টকে (২৩) ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় গাজায় ধরে নিয়ে যান হামাসের সদস্যরা। আর হিশাম আল-সায়েদ (৩৬) ও আভেরা মেঙ্গিস্তু (৩৯) প্রায় এক দশক আগে পৃথকভাবে গাজায় প্রবেশ করার পর হামাসের হাতে আটক হয়েছিলেন।
ওই ছয় জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ৬০২ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের এই বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া সর্বশেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলেও এটি শেষ হতে যাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলে কেফির বিবাস ও এরিয়েলের সঙ্গে তাঁদের মা জিম্মি শিরি বিবাসের মরদেহ ফেরত পাঠানোর কথা ছিল হামাসের। কেফির ও এরিয়েলের মরদেহ শনাক্ত করা গেলেও শিরির মরদেহের স্থলে অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। অজ্ঞাতনামা মরদেহ হস্তান্তরের মাধ্যমে হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
আরও পড়ুনহামাসের হস্তান্তর করা চার মরদেহের একটি কোনো জিম্মির নয়, দাবি ইসরায়েলের২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তবে হামাস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত শিরি ও তাঁর দুই ছেলের মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের পর শিরির দেহ অন্য মরদেহের সঙ্গে মিশে গেছে বলে মনে হচ্ছে। শুক্রবার দলটি আরেকটি মৃতদেহ হস্তান্তর করেছে। ইসরায়েলি ফরেনসিক কর্মকর্তারা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য তদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
আরও পড়ুনইসরায়েলে বাসে বিস্ফোরণের পর পশ্চিম তীরে বড় অভিযানের নির্দেশ নেতানিয়াহুর২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মরদ হ ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা