ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হবে ৫০ জিপ
Published: 22nd, February 2025 GMT
জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কিনবে সরকার। প্রতিটি অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির মিৎসুবিশি পাজেরো (কিউএক্স) জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৫০টি জিপ কিনতে মোট ব্যয় হবে ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সূত্র জানিয়েছে, জনপ্রশাসনের কাজে গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ডিসি ও ইউএনওর কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ২০০টি জিপ গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে পিপিআর ২০০৮ এর ৭৫ ও ৭৬ বিধি মোতাবেক ডিপিএম পদ্ধতিতে প্রতিটি জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হিসেবে ২০০টি জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৩০৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীন সরকারি সড়ক পরিবহন শাখার মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দকৃত ৩৭৭ কোটি টাকা থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
অর্থ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই তারিখে জারিকৃত ৪৯৪ নম্বর স্মারক অনুসারে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা (রেজিট্রেশন, ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ) নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে জারি করা ৭৪৯ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে একই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা (রেজিস্ট্রেশন, ভ্যা ও ট্যাক্সসহ) নির্ধারণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জেলা ও উপজেলাতে দপ্তর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদেরকে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, পরিদর্শন, তদারকি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানাবিধ সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হয়। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গ্রেড-১ বা গ্রেড-২ পর্যায়ের কর্মকর্তা না হলেও দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজন ও প্রকৃতি বিবেচনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০টি অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৩১ জুলাই জারি করা ৪৯৪ নম্বর স্মারকের শর্ত শিথিল করে অর্থ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট তারিখে ৫২ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির ২৬১টি জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৩৮১ কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। ইতোপূর্বে যেহেতু শর্ত শিথিল করে অর্থ বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজন ও প্রকৃতি বিবেচনায় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে ৭৪৯ নম্বর স্মারক অনুযায়ী অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়া যৌক্তিক হবে বলে প্রতীয়মান হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীন সরকারি মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দকৃত ৩৭৭ কোটি টাকা থেকে অর্থ বিভাগের ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবরের জারি করা ৭৪৯ নম্বর স্মারক অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ২০০টির পরিবর্তে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এর প্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী ডিসি এবং ইউএনওর কার্যালয়ে সবকারি কাজে ব্যবহারের জন্য ৫০টি জিপ গাড়ির প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কেনার জন্য (অনূর্ধ্ব ২৭০০ সিসি) ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে শর্তসাপেক্ষে সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
শর্তগুলো হচ্ছে:
ক.
খ. গাড়ি কনডেমনেশন-সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্ত/কার্যবিবরণীর অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।
গ. অকেজো ঘোষণাকৃত গাড়িগুলোর বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমাদান-সংক্রান্ত ট্রেজারি চালানের কপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।
ঘ. গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং এ বিষয়ে সকল বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
সূত্র জানিয়েছে, ৫০টি জিপ কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহম্মেদ।
ঢাকা/হাসনাত/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ন র জন য ও উপজ ল পর য য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণের অভিযোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন: গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মনি, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল্লা আল মামুন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন, নির্বাহী প্রকৌশলী ফারহানা আহমেদ, সহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি শিরাজী তারিকুল ইসলাম।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানায়, কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশের মাধ্যমে এ সকল কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মনিরুজ্জামান মনি টরেন্টো ইউনিভার্সিটিতে ডক্টোরাল প্রোগ্রামে অংশ নিতে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি কাটানোর পর পরবর্তী সময়ে অনুমতি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী তাকে ২১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বরখাস্ত করা হয়।
আবদুল্লা আল মামুন পিএইচ.ডি করতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক তাকে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে অননুমোদিতভাবে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
ফারহানা আহমেদ ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মফিজুল ইসলাম ২০২৩ এর ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি কাটালেও পরে ছুটি না নিয়ে অফিসে অনুপস্থিত। তাকে ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
শিরাজী তারিকুল ইসলামও ২০২২ সালের ১২ মে থেকে ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২১ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//