পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারী একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রধানের বাসা সিলগালা করে দিয়েছে দেশটির কৃর্তপক্ষ। দেশটিতে গত বছর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করেছিল ‘পট্টন’ নামের ওই এনজিও। এনজিওটির প্রধান সারোয়ার বারী।

সারোয়ার বারী নিজেই তাঁর বাসা সিলগালা করার কথা আজ শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন। বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে এমনটা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর প্রতি নমনীয় হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন দলের একটি জোট ক্ষমতায় আসে।

চলতি মাসে পট্টন নির্বাচন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে এক বিবৃতিতে নির্বাচনে জালিয়াতি ও কারসাজির মাধ্যমে ‘নজিরবিহীন কারচুপির’ অভিযোগ আনে এনজিওটি।

পট্টনের প্রধান সারোয়ার বারী বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। পাকিস্তানে তাঁর বাসাটি রাজধানী ইসলামাবাদে। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এটা নিশ্চয়ই ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে করা হয়েছে।’

সারোয়ার বারীর স্ত্রী আলিয়া বানু বলেন, বাসাটি সিলগালা করার সময় পুলিশ কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট ও ইসলামাবাদ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ২০ জনের বেশি মানুষের একটি দল এসেছিল।

এএফপি জানায়, একজন বিচারক সারোয়ার বারীর বাসাটি সিলগালা করার আদেশ দেন। আদেশের একটি কপি এএফপি পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে পট্টনের নিবন্ধন ২০১৯ সালে বাতিল করা হয়েছে। এর পর থেকে এনজিওটি অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছিল।

সারোয়ার বারী জানান, তাঁর বাসায় প্রায় সময় পট্টনের বৈঠক হয়। এমনকি চিঠি পাঠানোর জন্য তাঁর বাসার ঠিকানা ব্যবহার করতেন। তবে এটা যে মূলত তাঁর বাসস্থানই, তা বেশ জোরের সঙ্গেই দাবি করেন।

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে সারোয়ার বারীর বাসা সিলগালা করে দেওয়ার খবরটি ‘ভয়ের’ বলে উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিকদের কৌশলে এভাবে ভয় দেখানো অগ্রহণযোগ্য। বিষয়টি শিগগিরই আদালতে ওঠা দরকার।’

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি তদন্ত পরিচালনার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল পট্টন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনজ ও

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরানে আটকা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার তারেমি

চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের প্রভাবে জটিল হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক যাতায়াত। এরই মধ্যে বড় এক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের নতুন স্ট্রাইকার ও ইরানি ফুটবলার মেহদি তারেমি। তিনি তেহরানে আটকা পড়েছেন, ফ্লাইট জটিলতায় ইতালি পৌঁছাতে পারছেন না।

বার্তা সংস্থা এএফপি শনিবার (১৫ জুন) জানিয়েছে, ইরানে অবস্থানরত মেহেদি তারেমি বর্তমান উত্তেজনার কারণে দেশে আটকে পড়েছেন এবং ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সূচনালগ্নে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারছেন না।

৩২ বছর বয়সি এই ইরানি ফরোয়ার্ড গত সপ্তাহে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে তেহরানে ছিলেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দেশের হয়ে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে একটি গোল করেন তিনি। ম্যাচ শেষে ইউরোপে ফেরার কথা থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ এবং বিমান চলাচলে সীমাবদ্ধতার কারণে তেহরান থেকে কোনো ফ্লাইট পাচ্ছেন না তারেমি।

আরো পড়ুন:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে হোয়াইট হাউস কী ভাবছে?

ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?

এএফপি জানায়, তারেমির লস অ্যাঞ্জেলেসে ইন্টার মিলানের ক্লাব বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার অনুপস্থিতি এখন দলের জন্য বড় এক ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কেবল রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, এর প্রভাব পড়ছে খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও বৈশ্বিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানেও। তারেমির মতো একজন আন্তর্জাতিক তারকা যেখানে আটকে পড়েন, সেখানে বিশ্ববাসীর ভ্রমণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরো বেড়ে যায়।

এই মুহূর্তে ইন্টার মিলান বা ইরানি ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও ক্লাবের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, তারা তারেমির পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য কাজ করছে।

এটি শুধু একজন ফুটবলারের আটকে পড়ার গল্প নয়; এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার একটি বাস্তব ও মানবিক সংকটের প্রতিফলন।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তেহরানে আটকা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার তারেমি
  • রাইফেল–পিস্তল নিয়ে খেলার শুরু, ১৬২ বছর পর যেখানে দাঁড়িয়ে জাপানের ক্রিকেট