লা লিগার শিরোপার লড়াই আরও জমে উঠেছে। আগের ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়াকে হারিয়ে শীর্ষে উঠেছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবে তাদের সেই অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২৪ ঘণ্টা না যেতেই আবারও শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে বার্সেলোনা। শনিবার এস্তাদিও দে গ্রান ক্যানারিয়ায় স্বাগতিক লাস পালমাসকে ২-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ফিরেছে কাতালানরা।

প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের মাঠে বেশ ভুগতে হয় বার্সেলোনাকে। শুরুতেই ভালো সুযোগ পায় লাস পালমাস, তবে তাদের নিচু শট রুখে দেন বার্সা গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। কয়েক মিনিট পর বার্সাও গোলের সুযোগ পেলেও রবার্ট লেভান্ডোভস্কির হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধে একাধিকবার আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেও জমাটবদ্ধ লাস পালমাস রক্ষণের কারণে সফল হয়নি বার্সেলোনা।

দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সার গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৬১তম মিনিট পর্যন্ত। তরুণ প্রতিভা লামিনে ইয়ামালের দারুণ পাস থেকে স্প্যানিশ উইঙ্গার দানি ওলমো নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন। এরপর লেভান্ডোভস্কি দুটি সুযোগ পেলেও প্রথমবার তার হেড রুখে দেন গোলরক্ষক এবং পরের শটটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮০ মিনিটে বার্সেলোনার বিপক্ষে পেনাল্টির জোরালো দাবি ওঠে, যখন লাস পালমাসের অ্যালেক্স সুয়ারেজের শট ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়ার হাতে লাগে। এতে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং দু’পক্ষের একজন করে হলুদ কার্ড দেখেন। তবে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) মাধ্যমে সিদ্ধান্তটি অফসাইড বলে বাতিল হয়। অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় ফারমিন লোপেজ রাফিনিয়ার পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের কোণা থেকে বাঁ পায়ের শটে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন।

নতুন বছরে ১৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে বার্সেলোনা। লা লিগায়ও টানা পাঁচ ম্যাচে জয় পেল তারা। এই জয়ে ২৫ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠেছে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। সমান ম্যাচে ৫৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদ ২৪ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে তৃতীয় স্থানে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

৩. সারভাইক্যাল রিবস

৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে

৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা

৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়

১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ

১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস

১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া

১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

১৬. হাড়ের ইনফেকশন

১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।

বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।

সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।

ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।

হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।

ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

চিকিৎসা

চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়

১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।

২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।

৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।

৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।

৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।

৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।

১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।

১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।

১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ