মানবসভ্যতার বিকাশে মিসরীয়, সুমেরীয়, গ্রিক, চীনা ও বাংলা সভ্যতার অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এই পাঁচ প্রাচীন সভ্যতা এবং এর গৌরবময় মহিমাকে নাচ-গান ও নাটক পরিবেশনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলল রাজধানীর অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সাতারকুল তাদের বার্ষিক সাংস্কৃতিক আয়োজনে। গত শনিবার স্কুল মিলনায়তনে এ আয়োজনে শিক্ষার্থীরা ছাড়াও শিক্ষক, অভিভাবক ও স্কুলের কর্মচারীরা অংশ নেন।

শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিহাস-ঐতিহ্যের এ অনন্য উপস্থাপন এবং আগামীর উদ্ভাবনী ধারণার সঙ্গে পরিচয় করাতে এই সৃজনশীল আয়োজন শিক্ষাব্যবস্থায় ইতিবাচক উদাহরণ তৈরি করবে। আয়োজকেরা বলছেন, অনুষ্ঠানটি কেবল বিনোদন নয়, এর পাশাপাশি ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে ভূমিকা রাখবে। শিক্ষা শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি সংস্কৃতি, ইতিহাস ও সৃজনশীলতার সম্মিলিত এক অভিজ্ঞতা। এ ধারণা থেকেই গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সাতারকুল তাদের বার্ষিক সাংস্কৃতিক আয়োজন গ্লেনজিউর ২০২৫-এর আয়োজন করে।

আয়োজনের শুরুতেই একটি অনবদ্য অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করা হয়। আয়োজনটি শেষ করা হয় রোবটিকস পারফরম্যান্সের মাধ্যমে। উপস্থাপকদের পোশাকের অভিনবত্ব এ আয়োজনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল। উপস্থাপকেরা শিক্ষার্থীদের বানানো জেনিথ, মেছ ডগ ও গ্রুভবট রোবট সেজে মঞ্চের স্পেসশিপে হাজির হন। বিভিন্ন পরিবেশনায় স্কুলটির গ্রেড ৬-৯–এর শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ রমেশ মুডগাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা, ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোই এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে শিশুরা অতীতের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছে না। আশা করছি, এই আয়োজনের স্মৃতি তাদের আগামী দিনের জীবন গঠন ও পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ