আনিসুলের ব্যাংক হিসাবে ১৪০ কোটি টাকা, অবরুদ্ধের আদেশ
Published: 25th, February 2025 GMT
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ২৭টি ব্যাংক হিসাবের ১৪০ কোটি টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে আদালত। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন।
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আনিসুল হককে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন গত ২০ জানুয়ারি। গত ১ জানুয়ারি আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ পরিচালক মো.
মামলায় আনিসুল হকের বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নিজ নামে ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫৮২ টাকা জমা ও ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০৮ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৬৬৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩ হাজার ১৯০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, আনিসুলের অবৈধ পথে অর্জিত অস্থাবর সম্পদ জায়গায় হস্থান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করারও চেষ্টা করছেন বলে দুদক জেনেছে।
দুদকের ভাষ্য, অনুসন্ধান কাজ শেষ হওয়ার আগেই বসম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে টাকা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাবে।
সেজন্য আনিসুলের নামে থাকা ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা জরুরি বলে আবেদনে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা দুদক।
সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট সদরঘাট থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করার তথ্য জানিয়েছিল ঢাকার পুলিশ।
বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সালমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে সব মামলায় তাকে দফায় দফায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জ আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে সাবেক আইনমন্ত্রীকে মারধর (ভিডি
নারায়ণগঞ্জে আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমাণ্ড শুনানির জন্য নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তোলা হয় তাকে বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান।
তিনি বলেন, হত্যা মামলাটিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমাণ্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থী আইনজীবীরা ‘আনিসুল হকের ফাঁসি’ চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে চর-থাপ্পর দেন বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
এই সময় আনিসুল হকের মাথায় পুলিশের হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সাথে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতেও এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে চর-থাপ্পর দিতে দেখা যায়।
প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগন দিতে থাকেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
শুনানির আগে ও পরে বিএনপির মিছিলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির ও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধানকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়, পরে পুলিশ দ্রুততার সাথে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চর-থাপ্পর দিয়েছে এমনটা আমার নজরে পড়েনি।
যোগাযোগ করা হলে ‘আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে’ বলে জানিয়ে এতে বিএনপন্থী আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির।
তিনি আরও বলেন, ফাঁসির দাবিতে মিছিল করছি আমরা কিন্তু চর-থাপ্পর দিছে জনগণ। আইনজীবীরা কেন মারবে, তাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ আছে, সেই ক্ষোভ থেকে জনগণ তাকে মারধর করেছে।