সাহ্রি-ইফতারের সময়সূচি আলেম–ওলামা ও বিশেষজ্ঞদের তৈরি, এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই
Published: 27th, February 2025 GMT
কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রণীত সাহ্রি ও ইফতারের সময়সূচি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এ সময়সূচি আলেম, ওলামা ও বিশেষজ্ঞদের তৈরি করা। এটি নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।
আজ বৃহস্পতিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে যে সাহ্রি ও ইফতারের সময়সূচি বের করা হয়েছে, তা আলেম, ওলামা ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটি প্রণয়ন করেছে। সেখানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেকসহ প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম, আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ, মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন কেন্দ্রের প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
সাহ্রি ও ইফতারের জন্য যুগ যুগ ধরে মানুষ প্রকৃতির ওপর নির্ভর করেছে। ঘড়ি আবিষ্কারের পর এর ওপর মানুষের নির্ভরশীলতা এসেছে। এখন যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ে মিনিট, সেকেন্ড, মিলিসেকেন্ড, এমনকি ন্যানোসেকেন্ডের হিসাব বের করা সহজ হয়েছে। বর্তমানে যে সময়সূচি করা হয়েছে, তা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হিসাব করেই করা হয়েছে।
প্রায় ৩৩ বছর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে যে সাহ্রি ও ইফতার এবং নামাজের সময়সূচি প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা কয়েক যুগ ধরে চলছিল। সেখানে সাহ্রি, ফজরের আজান ও ইফতারের সময়ের সঙ্গে তিন মিনিট করে সতর্কতামূলক সময় রাখা হয়েছিল। সাহ্রির তিন মিনিট আগেই সময় শেষ করা ও ফজরের আজানের জন্য তিন মিনিট পর আজানের সময় নির্ধারণ করায় মাঝখানে ছয় মিনিট অলস সময় রাখা হয়েছিল। শরিয়তে এ ধরনের অলস সময়ের কোনো বিধান নেই।
‘সাহ্রির সময় শেষ, ফজরের সময় শুরু’—এটাই হলো শরিয়তের বিধান। আগের ক্যালেন্ডারে ফজরের আজান সতর্কতামূলকভাবে তিন মিনিট পর ধরায় অনেকের রোজা নষ্ট হচ্ছে। কারণ, সাধারণ মানুষ মনে করেন, আজান পর্যন্ত সাহ্রি খাওয়া যায়।
প্রায় ৩৩ বছর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে যে সাহ্রি ও ইফতার এবং নামাজের সময়সূচি প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা কয়েক যুগ ধরে চলছিল। সেখানে সাহ্রি, ফজরের আজান ও ইফতারের সময়ের সঙ্গে তিন মিনিট করে সতর্কতামূলক সময় রাখা হয়েছিল। সাহ্রির তিন মিনিট আগেই সময় শেষ করা এবং ফজরের আজানের জন্য তিন মিনিট পর আজানের সময় নির্ধারণ করায় মাঝখানে ছয় মিনিট অলস সময় রাখা হয়েছিল। শরিয়তে এ ধরনের অলস সময়ের কোনো বিধান নেই।ইফতারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আগে ইফতারের সময়সূচি সতর্কতামূলকভাবে তিন মিনিট পর রাখা হয়েছিল। ব্যক্তিজীবনে অনেকে সতর্কতামূলকভাবে আরও তিন মিনিট পর ইফতার করেন। এতে করে ইফতারের সময় ক্রমে পিছিয়ে যাচ্ছে। অথচ শরিয়তের বিধান অনুযায়ী ‘শিগগিরই ইফতার করা উত্তম’।
সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সাহ্রি, ফজরের আজান ও ইফতারের জন্য শুধু ‘সঠিক সময়’ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রণয়ন করবে। কেউ চাইলে নিজ দায়িত্বে সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন। বর্তমান প্রণীত সময়সূচি অত্যন্ত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হিসাব করেই প্রণয়ন করা হয়েছে এবং তা সঠিক। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।
আরও পড়ুনদেশের সব মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতমে তারাবিহ পড়ার আহ্বান১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ও ইফত র র সময় ত ন ম ন ট পর র আজ ন র সময় র খ র জন য হয় ছ ল সময় শ
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।