বিএনপিতে প্রবেশের মিশনে বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলার আসামি রশিদ
Published: 27th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের করা একাধিক হত্যা মামলার আসামি রশিদ মেম্বার এবার বিএনপির রাজনীতি প্রবেশের চেষ্টা শুরু করেছেন। বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ এক নেতাকে ম্যানেজ করে এ কূটকৌশল শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্রমতে, রশিদ মেম্বার বিগত আওয়ামী সরকারের শাসনামলে ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ট হিসেবে এলাকায় কাজ করতেন। বিএনপির রাজনীতির সাথে একটা সময় জড়িত থাকলেও পরে তিনি সরাসরি আওয়ামী লীগের হয়ে এলাকায় কাজ শুরু করেন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার পদে জয় লাভ করেন। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চতুর রশিদ মেম্বার তার বাহিনী নিয়ে বক্তাবলী ফেরী ঘাট দখল থেকে শুরু করে থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেলের জমি দখল করে মাটি কেটে বিক্রি করে দেন।
এমনকি নিজেকে বিএনপির নির্যাতিত নেতা হিসেবে দাবি করেন। আদতে তার বিরুদ্ধে ওসমান পরিবারের সাথে ঘনিষ্টতার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। এমনকি শামীম ওসমান বক্তাবলীতে গেলে রশিদ মেম্বার তার ছবি দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন লাগাতেন এলাকায়।
স্থানীয় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, রশিদ টাকার জোরে এখন ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান আলীকে ম্যানেজ করে বিএনপির রাজনীতিতে আবারো নাম লেখানোর চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি বক্তাবলীতে অনুষ্ঠিত একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সেই মঞ্চে রশিদকে ডেকে তুলেন হাসান আলী। যা নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। বিএনপি নেতাদের মাঝে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিকে দেখে হতবাক তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও।
বিএনপি নেতাদের দাবি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি যেনো বিএনপিতে কোনভাবেই প্রবেশ করতে না পারে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস
বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না। মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?
ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো। বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ
রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা
রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে।
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত।
জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।
ঢাকা/লিপি