বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের করা একাধিক হত্যা মামলার আসামি রশিদ মেম্বার এবার বিএনপির রাজনীতি প্রবেশের চেষ্টা শুরু করেছেন। বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ এক নেতাকে ম্যানেজ করে এ কূটকৌশল শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

সূত্রমতে, রশিদ মেম্বার বিগত আওয়ামী সরকারের শাসনামলে ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ট হিসেবে এলাকায় কাজ করতেন। বিএনপির রাজনীতির সাথে একটা সময় জড়িত থাকলেও পরে তিনি সরাসরি আওয়ামী লীগের হয়ে এলাকায় কাজ শুরু করেন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার পদে জয় লাভ করেন। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চতুর রশিদ মেম্বার তার বাহিনী নিয়ে বক্তাবলী ফেরী ঘাট দখল থেকে শুরু করে থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেলের জমি দখল করে মাটি কেটে বিক্রি করে দেন। 

এমনকি নিজেকে বিএনপির নির্যাতিত নেতা হিসেবে দাবি করেন। আদতে তার বিরুদ্ধে ওসমান পরিবারের সাথে ঘনিষ্টতার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। এমনকি শামীম ওসমান বক্তাবলীতে গেলে রশিদ মেম্বার তার ছবি দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন লাগাতেন এলাকায়। 

স্থানীয় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, রশিদ টাকার জোরে এখন ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান আলীকে ম্যানেজ করে বিএনপির রাজনীতিতে আবারো নাম লেখানোর চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি বক্তাবলীতে অনুষ্ঠিত একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

সেই মঞ্চে রশিদকে ডেকে তুলেন হাসান আলী। যা নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। বিএনপি নেতাদের মাঝে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিকে দেখে হতবাক তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও। 

বিএনপি নেতাদের দাবি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি যেনো বিএনপিতে কোনভাবেই প্রবেশ করতে না পারে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস

বাবা সন্তানের ওপর ছায়ার মতো স্নেহময় এক উপস্থিতি। নিঃশর্ত ভরসার প্রতীক। সন্তানের ভবিষ্যৎ গঠনের প্রয়োজনে নিজের বর্তমান, এমনকি নিজের স্বপ্নও নীরবে উৎসর্গ করে দিতে পারেন যিনি– আজ তাদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর দিন। বাবা দিবস উপলক্ষে সমতা’র বিশেষ আয়োজন। গ্রন্থনা শাহেরীন আরাফাত

আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা বৃহত্তর বরিশালে। এখন সেই জায়গাটা পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি পৌরসভার সমুদয়কাঠি গ্রাম। তখনকার সামাজিক পরিসরে আমাদের পরিবারের অবস্থা সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু ভালো ছিল। আমার বাবা বিজয় কুমার আইচ তখন পিরোজপুরে কাজ করতেন। তাঁর রেশনের দোকান ছিল। প্রতি শনিবার বাড়ি আসতেন। আমরা বাবার আশায় বসে থাকতাম। এটি ছিল আমাদের জন্য একরকম আশীর্বাদের মতো।
বাবার একটি ব্যবসাও ছিল। এ থেকে মূলত আমাদের পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের চেয়ে সম্ভবত বাবার জ্ঞান বা বোধ উন্নততর ছিল। তাঁর ব্যক্তিত্বের জন্য দশ গ্রামের লোকজন তাঁকে মানত। গ্রামে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকত। বাবার সঙ্গে কথা না বলে কেউ থানা-পুলিশ করতে যেত না। বাবা সবাইকে খুব বুঝিয়ে বলত– মামলা করলে কে জিতবে, কে হারবে– এটি অনেক পরের কথা। মামলা নিয়ে বরিশাল-পিরোজপুরে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে দুই পক্ষই নিঃস্ব হয়ে পড়বে। তারচেয়ে বরং তোমরা নিজেরা মিটমাট করে ফেল।
গ্রামের পণ্ডিতরা তখন তালপাতায় অ-আ-ক-খ শেখাতেন হাত ধরে ধরে। আমার সেটি একদম পছন্দ হতো না। বাবা কী করলেন, তিনি একটা স্লেট ও পেন্সিল দিয়ে ছবি আঁকতে শুরু করলেন। অ-আ-ক-খ দিয়ে যত ছবি আঁকা হয়, তা শেখাতেন। এর মধ্যে আমার যে ছবিটা পছন্দ হতো, সেটি আমি মনের মধ্যে গেঁথে নিতাম। যার ফলে বাবার মাধ্যমে অত্যন্ত আনন্দদায়ক এক শিক্ষা পেয়েছি আমি। 
আমার বাবারা ছিলেন ৪ ভাই। এর মধ্যে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় দু’জন পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। আমার বাবা ও এক কাকা বাড়ি ছেড়ে যাননি। আমরা ছিলাম ৬ ভাই ৩ বোন। কাকাতো ভাই ৪ জন, বোন একজন। মোট ১৪ ভাইবোন। কাকা কম বয়সেই গত হন। বিলাসী জীবন আমাদের ছিল না। তবে গ্রামের মানুষের কাছে আমরা ছিলাম বড়লোক। পরিবারে অনেক সদস্য থাকলেও খাবারের অভাব হতো না কখনোই। এমনকি দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থায়ও খাবারের কষ্ট করতে হয়নি। আমাদের একটা গুদামঘর ছিল। সেখানে বাবা পাশের বন্দর কাউখালী থেকে সারা বছরের চাল, ডাল, পাউডার দুধ, চিনি, লবণ, গুড় এনে ড্রামে ভরে রাখতেন। বাইরে যত সংকটই থাকুক না কেন, বছরজুড়ে খাবারের অভাব হতো না। সমস্যা হতো ঝড়ের সময়। উপকূলীয় অঞ্চলে এমন ঝড় মাঝে মাঝেই আসত। কখনও ঘরের চাল উড়ে গেলে আমরা সমস্যায় পড়ে যেতাম। 
অন্যদের সামনে বাবা নিজের অবস্থানের জন্যই বেশি হাসি-তামাশা করতেন না। যখন আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তখন তিনি একজন সাধারণ মানুষের মতো হাসি-খুশি থাকতেন। তখনকার বাবাদের আমরা মারধর করতে দেখেছি, এমনকি খড়ম দিয়ে পেটাতে দেখেছি। বাবা আমার গালে জীবনেও একটা চড় মারেনি। কোনো ভাইবোনকেও মারধর করতে দেখিনি। তখন হয়তো আরও এমন বাবা ছিলেন। তবে গ্রামে আমি এমন বাবা আর দেখিনি। সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরলেও তিনি কখনও জিজ্ঞেস করতেন না, কেন দেরি করে ঘরে ফিরেছি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’
  • একদিনে আয় ৮১ লাখ, ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের তাণ্ডব!
  • ফুসফুসের সুরক্ষায় যা করণীয়
  • লন্ডন বৈঠকের পর এখন বিএনপির দৃষ্টি নির্বাচনে , কী ভাবছে অন্য দলগুলো
  • সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস
  • হামলার আগে ইরানে গোপন অভিযান চালায় মোসাদ