পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের এমপিদের ছত্রছায়ায় মাদকের প্রচার এবং প্রসার ঘটে বলে মন্তব্য করেছেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান হামিদ চৌধুরী কিরণ।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) প্রশাসনিক ভবনের সেমিনার রুমে অনুষ্ঠিত আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘মাদককে না বলি, যুক্তি দিয়ে মুক্তি আনি’ প্রতিপাদ্যে শেকৃবি ডিবেটিং সোসাইটি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক ছাত্রছায়া ছাড়া মাদকের প্রচার এবং প্রসার সম্ভব নয়। পতির আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারি দলের নীতিনির্ধারকদের ছত্রছায়ায় মাদকের প্রসার ঘটে। মাদক নিয়ন্ত্রণে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন।

এছাড়াও উপস্থিতি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল বাশার, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক একেএম শওকত ইসলাম, শেকৃবি ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর মো. খুরশিদ আলম চঞ্চল প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “মাদক পারমাণবিক বোমার থেকে বেশি ভয়াবহ। জাপানে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ হলেও এর প্রভাব বিশ্বের অন্য দেশে কিন্তু পড়েনি। তবে আফ্রিকা মহাদেশের উৎপাদিত মাদক কিন্তু সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই, যেখানে মাদকের প্রভাব নেই।”

তিনি বলেন,“মাদক মূলত জীবন থেকে জীবন কেড়ে নেয়। নানা ধরনের রোগ সৃষ্টিসহ মাদক স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করে। মাদক প্রতিরোধে আমাদের দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে এ মাদকবিরোধী আন্দোলনকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করা উচিত।”

‘মাদক নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছাই যথেষ্ঠ’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতার সঞ্চালনা করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। এতে সরকারি দল হিসেবে অংশ নেয় শেকৃবি ডিবেটিং সোসাইটি এবং বিরোধীদল হিসেবে অংশ নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বিতার্কিক দল।

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় জবি বিতার্কিক দল এবং শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন জবি শিক্ষার্থী ওয়াসিউল হাসান।

ঢাকা/মামুন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ