অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনসার সদস্যদের গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা: অতিরিক্ত মহাপরিচালক
Published: 27th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় কোনো কিছু ঘটলে সবার আগে আনসার বাহিনী জানতে পারেন। তাদের ফোর্স প্রতিটি গ্রামে, পাড়া-মহলায় রয়েছে। দেশের কোথাও অপরাধ সংঘটন হলে, তা দ্রুত জানাতে পারে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনসার বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের কোনো গাফিলতে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইল আইডিইবি ভবনের কাউন্সিল হলে আনসার বাহিনীর ঢাকা জেলা সমাবেশ-২০২৫ এ প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, সর্তক থাকার পরও যদি দু-একটি অপরাধ সংঘটন হয়, সেটা সবাই (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) মিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে আনসার বাহিনী বদ্ধপরিকর। আনসার বাহিনী দেশজুড়ে বিস্তৃত। আমরাই পারি সোনার বাংলা গড়ে তুলতে। আনসার বাহিনীর প্রতিটি সদস্য সর্বত্র আনুগত্য, সুশৃঙ্খল ও পরিশ্রমীর জন্য প্রশংসিত হয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশের ভঙ্গুর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে আনসার সদস্যরা বুক চেতিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় দেশের সাধারণ মানুষসহ পুলিশের থানার নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রেখেছেন। সর্বোপরি রাষ্ট্রকে বিপর্যায়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে।
ফিদা মাহমুদ বলেন, আশার সংবাদ হলো এখন পর্যন্ত যেসব দেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো নিজেদের নিরাপত্তায় আনসার বাহিনীর গার্ড নিয়েছে। তারাও প্রশংসা করেছেন। আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত জনশক্তি নিতে আগ্রহী। আমরা বাহিনীর মহাপরিচালকের নির্দেশে এখন সেই প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে কাজ শুরু করেছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)-সহ বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আনসার বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এসব প্রশিক্ষনার্থীরা বৈদেশিক কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখতে পারবে।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের বিশাল নেটওয়ার্ককে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। আমার দায়িত্ব আমার চেয়ে আর কেউ ভালো বোঝে না, এটা মাথায় রেখেই কাজ করবেন। এখন থেকে মাথা উঁচু করে কাজ করবেন, বুক ফুলিয়ে কাজ করবেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ। এ সময় জেলা সমাবেশ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিচালক আশরাফুল আলম। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আরিফ হোসেন, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলী, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রফিউল আলম ও ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক নুরুল আবছার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনস র আনস র ব হ ন র ব যবস থ অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।