বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় কোনো কিছু ঘটলে সবার আগে আনসার বাহিনী জানতে পারেন। তাদের ফোর্স প্রতিটি গ্রামে, পাড়া-মহলায় রয়েছে। দেশের কোথাও অপরাধ সংঘটন হলে, তা দ্রুত জানাতে পারে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনসার বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের কোনো গাফিলতে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইল আইডিইবি ভবনের কাউন্সিল হলে আনসার বাহিনীর ঢাকা জেলা সমাবেশ-২০২৫ এ প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, সর্তক থাকার পরও যদি দু-একটি অপরাধ সংঘটন হয়, সেটা সবাই (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) মিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে আনসার বাহিনী বদ্ধপরিকর। আনসার বাহিনী দেশজুড়ে বিস্তৃত। আমরাই পারি সোনার বাংলা গড়ে তুলতে। আনসার বাহিনীর প্রতিটি সদস্য সর্বত্র আনুগত্য, সুশৃঙ্খল ও পরিশ্রমীর জন্য প্রশংসিত হয়ে আসছেন। 

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশের ভঙ্গুর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে আনসার সদস্যরা বুক চেতিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় দেশের সাধারণ মানুষসহ পুলিশের থানার নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রেখেছেন। সর্বোপরি রাষ্ট্রকে বিপর্যায়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে।

ফিদা মাহমুদ বলেন, আশার সংবাদ হলো এখন পর্যন্ত যেসব দেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো নিজেদের নিরাপত্তায় আনসার বাহিনীর গার্ড নিয়েছে। তারাও প্রশংসা করেছেন। আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত জনশক্তি নিতে আগ্রহী। আমরা বাহিনীর মহাপরিচালকের নির্দেশে এখন সেই প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে কাজ শুরু করেছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)-সহ বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আনসার বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এসব প্রশিক্ষনার্থীরা বৈদেশিক কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখতে পারবে।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের বিশাল নেটওয়ার্ককে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। আমার দায়িত্ব আমার চেয়ে আর কেউ ভালো বোঝে না, এটা মাথায় রেখেই কাজ করবেন। এখন থেকে মাথা উঁচু করে কাজ করবেন, বুক ফুলিয়ে কাজ করবেন। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ। এ সময় জেলা সমাবেশ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিচালক আশরাফুল আলম। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আরিফ হোসেন, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলী, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রফিউল আলম ও ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক নুরুল আবছার।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আনস র আনস র ব হ ন র ব যবস থ অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ