দেশের ৭০ শতাংশ নারী পুরুষ সঙ্গীর সহিংসতার শিকার
Published: 27th, February 2025 GMT
বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ নারীই তার পুরুষ সঙ্গীর নির্যাতনের শিকার হন। এই নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে শারীরিক, মানসিক ও যৌন সহিংসতার ঘটনা। আর এসব সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকেন নারীর স্বামী, সাবেক স্বামী, প্রেমিক কিংবা জীবনের যেকোনো সময়ে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা’ শীর্ষক এক জরিপে উঠে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিবিএস এই জরিপের খসড়া প্রকাশ করে।
২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাস দেশের আট বিভাগের ১৫ বছরের বেশি বয়সী ২৭ হাজার ৪৭৬ জন নারীর সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফলে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়া নারীদের মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ নারী শারীরিক, ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ যৌন, প্রায় ৩৩ শতাংশ মানসিক, ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবহার, প্রায় ১০ শতাংশ নারী অর্থনৈতিক, এবং ৫৪ শতাংশ নারী শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন।
এর আগে ২০১৫ সালে সবশেষ এই জরিপটি করা হয়েছিল। সেবছর দেখা গিয়েছিল প্রায় ৭৩ শতাংশ নারী তার পুরুষ সঙ্গীর সহিংসতার শিকার হন।
সে হিসেবে পুরুষ সঙ্গী কর্তৃক নারীর প্রতি এই সহিংসতা আগের তুলনায় সামান্য কমেছে।
জরিপটিতে, ‘জীবনসঙ্গী’ বলতে বর্তমান বা প্রাক্তন স্বামী এবং ‘নন-পার্টনার’ বলতে বর্তমান বা প্রাক্তন স্বামী ছাড়া উত্তরদাতার ১৫ বছর বয়সের পর থেকে জীবনের যেকোনো সময়ে সংস্পর্শে আসা যেকোনো ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে প্রকল্প পরিচালক ইফতেখারুল করিম বলেন, “এই জরিপে দেশের আট বিভাগের গ্রাম-শহর, বস্তি এবং ধনী এলাকাসহ সকল স্তরের ১৫ বছরের বেশি বয়সী নারীর কাছ থেকে সহিংসতা বিষয়ক তথ্য নেওয়া হয়েছে। মোট ১২০ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ২৪ জন সুপারভাইজার এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন।”
তিনি বলেন, “জরিপে যে ২৭ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন তারা জানিয়েছেন, জীবনে তাদের স্বামী বা প্রাক্তন স্বামীর (লাইফ পার্টনার) কাছ থেকে অন্তত একবার হলেও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন প্রায় ৪৭ শতাংশ।
“যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। প্রায় ৩৩ শতাংশ নারী মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ৫০ শতাংশ নারী স্বামীর কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবহারের মাধ্যমে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এছাড়াও প্রায় ১০ শতাংশ নারী অর্থনৈতিক এবং ৫৪ শতাংশ নারী শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে জরিপটির ফলাফলে উঠে এসেছে।”
এদের মধ্যে ৪১ শতাংশ নারী গত ১২ মাসে এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ফলাফল অনুযায়ী, দেশে সবচেয়ে বেশি নারী সহিংসতার শিকার হন বরিশালে। এরপর রয়েছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর। সবচেয়ে কম সহিংসতার ঘটনা ঘটে সিলেট বিভাগে।
জরিপের মোড়ক উন্মোচন করেন নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন মুর্শিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মমতাজ আহমেদ এবং পরিসংখ্যা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার, বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবেসহ অন্যরা।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ ক র হন য ন সহ ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের পতাকা বুকে নিয়ে কানাডার লিগে শমিত
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ করেই কানাডা ফিরে গেছেন শমিত শোম। জাতীয় দলের দায়িত্ব শেষ করে এবার ব্যস্ত ক্লাব ফুটবলে। গতকাল রাতেই তিনি মাঠে নেমেছেন নিজের ক্লাব ক্যাভালরি এফসির হয়ে।
ক্যাভালরি এফসি তাদের সামাজিক মাধ্যমে ১১ জন খেলোয়াড়ের একটি ছবি পোস্ট করেছে। সেখানে শমিতকে দেখা গেছে বাংলাদেশের পতাকাসহ জার্সিতে। ছবির ক্যাপশনে ১০টি দেশের পতাকার ইমোজি দেওয়া হয়, যার মধ্যে বাংলাদেশের পতাকা ছাড়াও আছে যুক্তরাজ্য (দুইবার), সোমালিয়া, জার্মানি, জ্যামাইকা, পোল্যান্ড, ইতালি, কলম্বিয়া, নিউজিল্যান্ড ও বেলজিয়ামের পতাকা। একই ছবি পোস্ট করা হয়েছে ক্লাবটির অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডল ও ফেসবুক পেজে।
পোস্টে শমিতকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অনেক ভক্ত। কেউ লিখেছেন, ‘আমাদের বাঘ শমিত শোম।’ মন্তব্যের ঘরে বেশিরভাগই বাংলাদেশি ভক্তদের।
গত রাতে ওয়ান্ডারার গ্রাউন্ডসে অনুষ্ঠিত কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ক্যাভালরি এফসি ১-১ গোলে ড্র করেছে ওয়ান্ডারার্স এফসির সঙ্গে। ক্যাভালরির হয়ে গোল করেন ক্যানিগিয়া এলভা, আর ওয়ান্ডারার্সের পক্ষে স্কোর করেন তিয়াগো কোয়েম্বরা। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন শমিত, খেলেছেন ৬৮ মিনিট। ১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এখন লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে ক্যাভালরি। সমান ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আতলেতিকো।
এর আগে ১০ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে শমিত সামাজিক মাধ্যমে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সতীর্থ, কোচিং স্টাফ, বাফুফে ও সমর্থকদের প্রতি।
বাংলাদেশের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পরবর্তী দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে অক্টোবরে। ৯ অক্টোবর হংকংকে আতিথেয়তা দেবে বাংলাদেশ, এরপর ১৪ অক্টোবর তারা খেলবে হংকংয়ের মাঠে।