ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামোলিতে ভয়াবহ তুষারধস হয়েছে। এতে বরফের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ হন দেশটির সীমান্ত সড়ক সংস্থার (বিআরও) অন্তত ৪১ শ্রমিক, যাদের মধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ভারত-তিব্বত সীমান্তের কাছে উত্তরাখণ্ডের মানা গ্রামে তুষারধসের পর উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ভারতীয় সেনা ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা।

বিআরও-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সিআর মীনা বলেন, উদ্ধারকাজ চলছে। তবে বৈরী আহবাওয়ার কারণে বেগ পেতে হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বিনা খরচে ইফতার পাবে দর্শকরা 

যুবককে নির্যাতন, মৃত ভেবে ফেলে গেল বিএসএফ 

উত্তরাখণ্ডের খ্যাতনামা বদ্রিনাথ মন্দির থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে মানা সীমান্ত গ্রাম। সেখানে সীমান্ত সড়ক সংস্থার একটি ক্যাম্প রয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তুষারধসের সময় শ্রমিকরা রাস্তা তৈরির কাজ করছিলেন। 

ভারতের কর্মকর্তারা বলেছেন, বদ্রিনাথের কাছে তুষারধসের সময় সেখান ৫৭ জন শ্রমিক ছিলেন।

সিআর মীনা বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে তিন থেকে চারটি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে, তবে প্রবল তুষারপাতের কারণে উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত হচ্ছে।  

উত্তরাখণ্ড পুলিশের মহাপরিচালক দীপম শেঠ বলেছেন, “উদ্ধার অভিযানে নেমেছেন ৬০-৬৫ জন কর্মী। তবে প্রধান চ্যালেঞ্জ সেখানকার প্রতিকূল আবহাওয়া। প্রবল তুষারপাত ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে রাস্তা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমরা বরফ কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি।”

তুষারধসের পরপরই রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, জেলা প্রশাসন, ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ ও বিওআর এর বিশেষ দল উদ্ধারকাজ শুরু করেন।

চামোলির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সন্দীপ তিওয়ারি বলেন, প্রবল বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে হেলিকপ্টার পাঠানো সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন।

আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে উত্তরাখণ্ডসহ বেশ কয়েকটি পাহাড়ি অঞ্চলে ‘কমলা সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২০ সেন্টিমিটার প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। 
ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই দুর্যোগের ফলে নিচু এলাকায় পানি জমে যেতে পারে। রাস্তা প্লাবিত হতে পারে এবং কাচা বাড়ি ও রাস্তার ক্ষতি হতে পারে। ভারী বৃষ্টির জেরে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রবল

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু, পুলিশ স্বাভাবিক মৃত্যু বললেও ‘অস্বাভাবিক’ বলে প্রচার

ময়মনসিংহে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা মো. রুহুল আমিন আকাশের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বল জানিয়েছে পুলিশ ও তার পরিবার। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে প্রচার করা হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, রুহুল আমিন আকাশ রোববার রাতে ময়মনসিংহ নগরীতে তার বোন নাফিয়া আক্তারের বাসায় বেড়াতে আসেন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে দিঘারকান্দা শান্তিনগর আলহাজ্ব সিরাজ আলী জামে মসজিদের সামনে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান। এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এর আগে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা ঈসমাইল হোসেন এবং গৃহকর্মী মোছা. বকুল আক্তার দ্রুত এগিয়ে এসে ছাত্রলীগ নেতা আকাশের মাথায় পানি ঢেলে এবং পরে উদ্ধার করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। তবে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ভগ্নিপতি বোম্বের সুইটস কোম্পানির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. আনিছুর রহমান সমকালকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মাত্র দেড় মাস আগে রুহুল আমিন আকাশ বিয়ে করেছিলেন। তার স্ত্রী গাজীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। 

আনিছুর রহমান বলেন, ‘গতরাতে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমার বাসায় বেড়াতে আসে। সন্ধ্যায় তার শারীরিক অবস্থার একটু খারাপ হলে সে বমি করে। এরপর রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে হাসপাতালে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। পথে সে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। পরে বিষয়টি হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয়।’

এদিকে, কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন জানান, ‘এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তবে একটি মহল এই মৃত্যুর ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’

তবে পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বললেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা নিজ নিজ ফেসবুক পোস্টে শোক প্রকাশের পাশাপাশি এই মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক এবং হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করছেন।

সোমবার বিকেল পৌনে ৪টায় ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট লীগ’ নামের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে দাবি করা হয়, ‘ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন আকাশ এর মৃতদেহ পাওয়া গেছে রাস্তার পাশে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতা রুহুল আমিন আকাশ এর অপমৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানায়।’ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার বিদেহী আত্মার শান্তি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত মো. রুহুল আমিন আকাশ নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেলায়াতলী গ্রামের বাসিন্দা মো. নওয়াব আলীর ছেলে। তিনি গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ