সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া সাত সদস্যের শপথ গ্রহণ আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নতুন সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। এই সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, পররাষ্ট্র ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাব্বির আহমদ চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো.
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তাঁদের নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৩৮ (১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতা বলে রাষ্ট্রপতি তাঁদের এ নিয়োগ দিয়েছেন। সংবিধানের ১৩৯ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে, সদস্যরা দায়িত্বভার গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছর বা তাঁর ৬৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার মধ্যে যা আগে ঘটে, সে কাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য পদে বহাল থাকবেন।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি পিএসসিতে নিয়োগ পাওয়া ছয় সদস্যের নিয়োগের আদেশ শপথ গ্রহণের আগেই বাতিল করা হয়। পিএসসির একটি সূত্র তখন প্রথম আলোকে বলেছিল, নতুন নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার কারণে তাঁদের শপথ স্থগিত করা হয়। নতুন নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন সদস্য বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় এই সমালোচনা হচ্ছিল। যাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছিল, তাঁরা হলেন অধ্যাপক শাহনাজ সরকার, মো. মুনির হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ, মো. মিজানুর রহমান, শাব্বির আহমদ চৌধুরী ও অধ্যাপক সৈয়দা শাহিনা সোবহান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র সদস য র শপথ ন সদস প এসস
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার মিশন নিয়ে উদ্বেগ, আলোচনা ছাড়া সিদ্ধান্ত ন্যায়সংগত হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন চালু করার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে ফিলিস্তিনের গাজার মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেক বেশি খারাপ। কিন্তু সেখানে জাতিসংঘের তেমন কার্যক্রম দেখা যায় না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত ন্যায়সংগত হয়নি।
আজ সোমবার রাজধানীর ডিআরইউ মিলনায়তনে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। ‘ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস সংক্রান্ত চুক্তিকে কেন্দ্র করে করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ।
আরও পড়ুনজাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন চালু হওয়া নিয়ে হেফাজতের প্রতিবাদ১৯ জুলাই ২০২৫অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার মৌলিক অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ফ্যাসিজমের সময়ে দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছে, যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ ও অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো মনে করেছে বাংলাদেশে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের একটা অফিস স্থাপন দরকার। কিন্তু সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া, কোনো চুক্তি ছাড়া এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেটা ন্যায়সংগত হয়নি।
বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মৌলিক ও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। পাশাপাশি দেশে যে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংস্কৃতি, তাতে কী কী অনুমোদন করে, তা–ও বিবেচনায় নিতে হবে।
আরও পড়ুনজাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন চালু হচ্ছে ঢাকায়১৮ জুলাই ২০২৫বৃহৎ রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন স্থাপনের চুক্তি হলে বিতর্ক তৈরি হতো না বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক যে অফিস স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা রিভিউ করার একটা সময়সীমা আছে। সম্ভবত এক বছর বা দুই বছর পর তা রিভিউ হবে। তিন বছর পর সেটা রিনিউ করবে কি না, তা পরবর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দেবেন, তারা যেন সবকিছু যাচাই-বাছাই করে এই মিশন স্থাপনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত থাকুক, সেটা সবার প্রত্যাশা।
আরও পড়ুনমানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে সহায়তা দিতেই মানবাধিকার মিশন চালু হচ্ছে : প্রেস উইং১৯ জুলাই ২০২৫ঢাকায় জাতিসংঘের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি নিয়োগ নিয়ে একটি ‘সাংঘাতিক’ খবর আছে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তাঁরা শুনতে পেয়েছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের বর্তমান আবাসিক প্রতিনিধির মেয়াদ শেষের দিকে। তাঁর স্থলে যিনি আসবেন, তাঁর ব্যাপারে তাঁরা কিছু আপত্তিকর কথা শুনেছেন। হয়তো বাংলাদেশ সরকার তাঁকে অনুমতি দেওয়ার আগে বিষয়টি বিবেচনায় নেবে। তিনি এর বেশি খোলাসা করে বলতে চান না। কারণ, বিষয়টি স্পর্শকাতর। অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের নতুন আবাসিক প্রতিনিধিকে অনুমোদন দেওয়ার আগে যাতে তাঁর বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়, সেই আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, তাঁদের কথা হলো, দেশ ও ইসলামের স্বার্থে তাঁরা কারও মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারবেন না।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অবস্থা এমন যে পুলিশ ঘুষ খায়, আবার ঘরে চুরি হলে পুলিশকেই ফোন করতে হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন স্থাপনের বিষয়টিও একই রকম। সরকার ভারতীয় অপপ্রচার ঠেকাতে এমন মিশন আনতে চাইছে বলে তাঁদের জানিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুততার সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকার শব্দকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই মিশন স্থাপিত হলে বিপদ আরও ঘনীভূত হবে। তাঁরা এই মিশন নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথাও বলছে না।
আরও পড়ুনঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না: মামুনুল হক১১ জুলাই ২০২৫গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির সালাউদ্দিন নানুপুরী, আহমদ আলী, মহিউদ্দিন রাব্বানী, যুগ্ম মহাসচিব হারুন এজহার, মীর মোহাম্মদ ইদ্রিস, ফজলুল করিম, সাখাওয়াত হোসেন, সহকারী মহাসচিব আতাউল্লা আমিন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখের মহাসচিব রেজাউল করিম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল হক প্রমুখ।
আরও পড়ুনজাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার অনুমতি দীর্ঘ মেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে: ইসলামী আন্দোলন১৪ জুলাই ২০২৫