বিরাটকে ৩০০তম ওয়ানডেতে বিরাট ধাক্কা দিলেন গ্লেন `জন্টি` ফিলিপস
Published: 2nd, March 2025 GMT
জন্টি রোডস ছিলেন তার সময়ের তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকা একজন ক্রিকেটার। এই দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার ফিল্ডিংটাকে পৌঁছে দিয়েছিলেন ভিন্ন মাত্রায়। যেখানে তার মটো ছিল- আকাশ হচ্ছে সীমানা। কালের পরিক্রমায় টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি চালু হওয়ার পর তো হরহামেশাই চোখ ধাঁধানো সব ক্যাচ এবং ফিল্ডিং দেখা যায়। তবে কোনটাই ঠিক রোডসকে মনে করিয়ে দেয় না। যেটা দিচ্ছেন নিউ জিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস। এই আসরেই দুবার, যার একটি আবার আজ।
আজ (২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলমান ভারত-নিউ জিল্যান্ডের ম্যাচটা ছিল বিরাট কোহলির ৩০০তম ওয়ানডে। আগের ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা এই ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান এই ম্যাচেও বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে খেলছিলেন। তবে ম্যাট হেনরির করা ম্যাচের সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে বিরাটের আত্মবিশ্বাসে বিরাট এক ধাক্কা দিয়ে দিলেন ফিলিপস।
বলটা ছিল স্টাম্পের বেশ বাইরে। কোহলি নিলেন দারুণ এক কাট শর্ট। বল গেল বিদ্যুৎ বেগে। তবে কোহলি ব্যাচারার কপাল খারাপ। পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ছিলন ফিলিপস। সেখান থেকে এক পা এগিয়ে ডানদিকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শূন্যে ভেসে সেই ক্যাচ তালুবন্দি করে ফেলেন ফিলিপস।
আরো পড়ুন:
ব্যাটিংয়ে রোহিত-কোহলিরা; টানা ১৪ টস হার
নিউ জিল্যান্ডের অনেক ‘অর্জনের’ ম্যাচ
বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কোহলি বা কোন দর্শক। এমনকি নিউ জিল্যান্ডের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের কাছেই অবিশ্বাস্য ঠেকল ব্যাপারটা। তবে একজন ছিলেন একদম নিরুত্তাপ, সেটা স্ব্যং ফিলিপস। এই ২৮ বছর বয়সী অল রাউন্ডারের ভাবখানা এমন যে- এ আর নতুন কি!
আসরের প্রথম ম্যাচেই পাকিসানের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের একটা ক্যাচ নিয়ে এভাবেই সবার বিশ্বয় জাগিয়ে তুলেছিলেন ফিলিপস। গতকাল ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এই অলরাউন্ডারকে মজার ছলেই জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মাঠে যখন নামেন, তখন হাতে আঠা লাগিয়ে নেন কি না! কিউই বাজপাখির সেটি হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন- নাম বলতে পারলে আমারই ভালো লাগত।
স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে টেস্ট খেলে ফেলেছেন ফিলিপস। অথচ ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল উইকেট কিপার হিসেবে। সেই সুবাদেই হয়ত এ ধরনের ভ্রম জাগানিয়া ফিল্ডিং করেন ফিলিপস। মাঠের যে কোনো কোণায় এমন সাবলীল ফিল্ডিং করেন, মনে হয় শরীরে চুম্বক লাগানো।
এই ক্যাচের পর একটা ধৃষ্টতা দেখানো যায়। বলা যায় যে, সারা পৃথীবির ফিল্ডাররা একদিকে আর জোন্টি রোডস ও ফিলিপস আরেক দিকে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।