এবার কোন দেশে রোজার সময় সবচেয়ে লম্বা
Published: 3rd, March 2025 GMT
বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পবিত্র মাস রমজান শুরু হয়েছে। ২৯ বা ৩০ দিন ধরে মুসলিমরা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকবেন, যা তাঁদের ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।
মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, রমজান মাস হলো সেই মাস, যখন ১ হাজার ৪০০ বছরের বেশি সময় আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.
রোজায় তাকওয়া বা আত্মশুদ্ধি অর্জনের জন্য দিনের আলোতে পানাহার, ধূমপান ও যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকেন মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুসারী মানুষ।
প্রতিবছর রমজান কেন ভিন্ন ভিন্ন তারিখে শুরু হয়
প্রতিবছর রমজান মাস আগের বছরের তুলনায় ১০ থেকে ১২ দিন আগে শুরু হয়। কারণ, ইসলামিক বর্ষপঞ্জি মূলত চন্দ্র হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে তৈরি। চান্দ্রবছর সৌরবছরের তুলনায় ১১ দিন ছোট। তাই ২০৩০ সালে এক বছরে দুবার রমজান হবে। প্রথমটি ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এবং দ্বিতীয়টি ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে।
বিশ্বজুড়ে রোজার সময়
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিনের আলো ভিন্ন ভিন্ন সময় পর্যন্ত থাকে।
এবার চিলি ও নিউজিল্যান্ডের মতো বিশ্বের সর্ব দক্ষিণের দেশগুলোতে মুসলমানরা প্রায় ১৩ ঘণ্টা রোজা রাখছেন। আর আইসল্যান্ড বা গ্রিনল্যান্ডের মতো সর্ব উত্তরের দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলমানরা ১৬ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে রোজা রাখছেন। সে হিসাবে তাঁরা সবচেয়ে বেশি সময় রোজা রাখছেন।
এ বছর উত্তর গোলার্ধে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য রোজার সময় কিছুটা কমে আসবে এবং ২০৩১ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে কমবে। বিষুবরেখার দক্ষিণে বসবাসকারী মুসলিমদের ক্ষেত্রে এর বিপরীতটি ঘটবে।
কোন শহরে রোজা সবচেয়ে বেশি সময় এবং কোন শহরে কম সময়নিচে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে গড়ে কত ঘণ্টা রোজা রাখা হয়, তা তুলে ধরা হলো। রোজার প্রকৃত সময় ও দিন এবং গণনাপদ্ধতি অনুসারে পরিবর্তিত হবে:
- নুউক, গ্রিনল্যান্ড: ১৬ ঘণ্টা
- রেইকইয়াভিক, আইসল্যান্ড: ১৬ ঘণ্টা
- হেলসিঙ্কি, ফিনল্যান্ড: ১৫ ঘণ্টা
- অসলো, নরওয়ে: ১৫ ঘণ্টা
- স্টকহোম, সুইডেন: ১৫ ঘণ্টা
- গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড: ১৫ ঘণ্টা
- বার্লিন, জার্মানি: ১৪ ঘণ্টা
- ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড: ১৪ ঘণ্টা
- মস্কো, রাশিয়া: ১৪ ঘণ্টা
- আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস: ১৪ ঘণ্টা
- ওয়ারশ, পোল্যান্ড: ১৪ ঘণ্টা
- আস্তানা, কাজাখস্তান: ১৪ ঘণ্টা
- ব্রাসেলস, বেলজিয়াম: ১৪ ঘণ্টা
- লন্ডন, যুক্তরাজ্য: ১৪ ঘণ্টা
- জুরিখ, সুইজারল্যান্ড: ১৪ ঘণ্টা
- বুখারেস্ট, রোমানিয়া: ১৪ ঘণ্টা
- সারায়েভো, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা: ১৪ ঘণ্টা
- সোফিয়া, বুলগেরিয়া: ১৪ ঘণ্টা
- রোম, ইতালি: ১৪ ঘণ্টা
- মাদ্রিদ, স্পেন: ১৪ ঘণ্টা
- প্যারিস, ফ্রান্স: ১৪ ঘণ্টা
- আঙ্কারা, তুরস্ক: ১৪ ঘণ্টা
- নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: ১৪ ঘণ্টা
- অটোয়া, কানাডা: ১৪ ঘণ্টা
- বেইজিং, চীন: ১৪ ঘণ্টা
- অ্যাথেন্স, গ্রিস: ১৩ ঘণ্টা
- লিসবন, পর্তুগাল: ১৩ ঘণ্টা
- টোকিও, জাপান: ১৩ ঘণ্টা
- ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: ১৩ ঘণ্টা
- লস অ্যাঞ্জেলেস, যুক্তরাষ্ট্র: ১৩ ঘণ্টা
- তিউনিস, তিউনিসিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- আলজিয়ার্স, আলজেরিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- তেহরান, ইরান: ১৩ ঘণ্টা
- কাবুল, আফগানিস্তান: ১৩ ঘণ্টা
- নয়াদিল্লি, ভারত: ১৩ ঘণ্টা
- ঢাকা, বাংলাদেশ: ১৩ ঘণ্টা
- রাবাত, মরক্কো: ১৩ ঘণ্টা
- দামেস্ক, সিরিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- ইসলামাবাদ, পাকিস্তান: ১৩ ঘণ্টা
- বাগদাদ, ইরাক: ১৩ ঘণ্টা
- বৈরুত, লেবানন: ১৩ ঘণ্টা
- আম্মান, জর্ডান: ১৩ ঘণ্টা
- গাজা সিটি, ফিলিস্তিন: ১৩ ঘণ্টা
- কায়রো, মিসর: ১৩ ঘণ্টা
- দোহা, কাতার: ১৩ ঘণ্টা
- দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: ১৩ ঘণ্টা
- খার্তুম, সুদান: ১৩ ঘণ্টা
- রিয়াদ, সৌদি আরব: ১৩ ঘণ্টা
- আবুজা, নাইজেরিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- এডেন, ইয়েমেন: ১৩ ঘণ্টা
- ডাকার, সেনেগাল: ১৩ ঘণ্টা
- আদ্দিস আবাবা, ইথিওপিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- বুয়েনস এইরেস, আর্জেন্টিনা: ১৩ ঘণ্টা
- কলম্বো, শ্রীলঙ্কা: ১৩ ঘণ্টা
- কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- মোগাদিসু, সোমালিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- সিউদাদ দেল এস্তে, প্যারাগুয়ে: ১৩ ঘণ্টা
- নাইরোবি, কেনিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- হারারে, জিম্বাবুয়ে: ১৩ ঘণ্টা
- জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- লুয়ান্ডা, অ্যাঙ্গোলা: ১৩ ঘণ্টা
- ব্যাংকক, থাইল্যান্ড: ১৩ ঘণ্টা
- ব্রাসিলিয়া, ব্রাজিল: ১৩ ঘণ্টা
- জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩ ঘণ্টা
- মন্টেভিডিও, উরুগুয়ে: ১৩ ঘণ্টা
- ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া: ১৩ ঘণ্টা
- পুয়ের্তো মন্ট, চিলি: ১৩ ঘণ্টা
- ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড: ১৩ ঘণ্টা
বিভিন্ন ভাষায় রমজানের শুভেচ্ছা
মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে রমজানের জন্য প্রত্যেকের নিজস্ব ভাষার শুভেচ্ছা বার্তা রয়েছে। ‘রমজান মোবারক’ এবং ‘রমজান কারিম’ বলে সবচেয়ে বেশি রমজানের শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।