ক্রোম ব্রাউজারের ১৬ এক্সটেনশন থেকে সাবধান
Published: 3rd, March 2025 GMT
ক্রোম ব্রাউজারে বাড়তি সুবিধা পেতে অনেকেই এক বা একাধিক এক্সটেনশন ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীদের এই আগ্রহ কাজে লাগিয়ে ১৬টি ব্রাউজার এক্সটেনশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরিসহ অনুমোদনহীন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন ও সার্চ ইঞ্জিন জালিয়াতির মতো কার্যক্রম চালাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। আর তাই অনলাইনে নিরাপদ থাকতে নিজেদের যন্ত্র থেকে দ্রুত ব্রাউজার এক্সটেনশনগুলো মুছে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গিটল্যাব থ্রেট ইন্টেলিজেন্স।
গিটল্যাব থ্রেট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, সংঘবদ্ধ একদল সাইবার অপরাধী ক্রোম ব্রাউজারের বেশ কয়েকটি এক্সটেনশনের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে অন্তত ৩২ লাখ ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারী সাইবার হামলার ঝুঁকিতে পড়েছেন। এক্সটেনশনগুলোর ক্ষতিকর আপডেটের মাধ্যমে ব্রাউজার থেকে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, ওয়েব ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবহারকারীদের অজান্তে বিজ্ঞাপন চালানোর মতো প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সাইবার অপরাধীরা।
আরও পড়ুনক্রোম ব্রাউজারে যুক্ত এক্সটেনশন নিষ্ক্রিয় করবেন যেভাবে০৩ জুলাই ২০২৪ঝুঁকিপূর্ণ এক্সটেনশনগুলো হলো ব্লিপশট, ইমোজিস (ইমোজি কি–বোর্ড), কালার চেঞ্জার ফর ইউটিউব, ভিডিও ইফেক্টস ফর ইউটিউব অ্যান্ড অডিও এনহ্যান্সার, থিমস ফর ক্রোম অ্যান্ড ইউটিউব, পিকচার-ইন-পিকচার, মাইক অ্যাডব্লক ফর ক্রোম, সুপার ডার্ক মোড, ইমোজি কি–বোর্ড ইমোজিস ফর ক্রোম, অ্যাডব্লকার ফর ক্রোম (নোঅ্যাডস), অ্যাডব্লক ফর ইউ, অ্যাডব্লক ফর ক্রোম, নিম্বল ক্যাপচার, কে-প্রক্সি, পেজ রিফ্রেশ, উইস্টিয়া ভিডিও ডাউনলোডার ও ডব্লিউএ টুলকিট।
গুগল ইতিমধ্যে এসব এক্সটেনশন ক্রোম ওয়েব স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলেছে। তবে যাদের ব্রাউজারে এগুলো ইনস্টল রয়েছে, তাদের এগুলো নিজ থেকে মুছে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে কম্পিউটারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্ভরযোগ্য অ্যান্টিভাইরাসের মাধ্যমে ভাইরাস স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞরা।
ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে হ্যাকারদের সাইবার হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে সম্প্রতি যেসব এক্সটেনশনের মাধ্যমে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটছে, সেগুলো জনপ্রিয় হওয়ায় ঝুঁকি আগের তুলনায় বেড়েছে। আর তাই অনলাইন থেকে নামানোর আগে ব্রাউজার এক্সটেনশনের বিষয়ে অন্য ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা বা মতামত জানার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।