ইন্টারভিউ বোর্ডে সরাসরি ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অফার প্রত্যাখ্যান করার পর রোহানকে উদ্দেশ করে একজন কর্মকর্তা সরাসরিই বলে দিলেন, ‘আপনি আসলে বেশি ভালো মানুষ। এত ভালো মানুষ দিয়ে কোম্পানি চলে না, দেশও চলে না। সুতরাং টাকা দিতে না পারলে আপনি এখন আসুন।’ রোহান সেদিন খুব ধাক্কা খেয়েছিল। এরপর থেকে সে আর চাকরির চেষ্টাই করেনি। নিজের মার্কেটিং স্কিল কাজে লাগিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করে ভালোই চলছিল। এত ভালো রেজাল্ট করা ছেলেটি যেখানে ছয় ডিজিটের স্যালারিতে চাকরি করার কথা, সেখানে সামান্য ‘হকারি’ করছে দেখে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন নাক সিটকালেও, মন থেকে সে খুবই সন্তুষ্ট ছিল। ভেবেছিল অন্তত ভালো মানুষ হয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারবে। তা আর হলো কই!
গার্মেন্ট থেকে সস্তায় কাপড় কিনে বিক্রি করে পুঁজিও হয়েছে বেশ। একদিন আগুন লেগে কয়েকটি দোকান পুড়ে যায়। এরপর যাদের দোকান পুড়েছে তারা তো বটে, যাদের পোড়েনি তারাও রোহানের পাওনা টাকা না দিয়ে বলে, ‘আপনি ভালো মানুষ ভাই, এত টাকার দরকার কী? আমরা বউ-বাচ্চা নিয়ে কষ্টে আছি। ব্যবসাটা দাঁড়াক আবার, আপনার টাকা দিয়ে দেব।’ রোহান অনেকদিন এদের পেছনে ঘুরে হাল ছেড়ে দিল। ব্যবসাটাও আর রইল না। পুঁজি হারিয়ে উল্টো ঋণগ্রস্ত হয়ে গেল।
জীবন তো থেমে থাকে না। মা-বাবা, ছোট ভাই-বোনদের জন্য হলেও কিছু করা লাগে। সে একটা কোম্পানিতে আউটসোর্সিং বেসিসে কাজ শুরু করল। রোহানের স্কিল আর অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করে কোম্পানির মালিক কোটিপতি হয়ে গেল। ভেবেছিল তাকেও অন্তত কিছুটা প্রফিট দেওয়া হবে, যেহেতু তার অবদানটাই বেশি। তাকে স্যালারির বাইরে কোনো টাকাই দেওয়া হলো না। অথচ আইডিয়াটা ছিল তারই। কোম্পানির মালিক মানুষের সামনে প্রশংসা করতেন এভাবে, ‘রোহান খুব ভালো ও সৎ মানুষ, টাকা-পয়সার প্রতি তার লোভ নেই।’
রোহান পরের ধাক্কাটা খায় তার একমাত্র প্রেমিকা তানিয়ার কাছ থেকে। বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে যাচ্ছিল। একদিন তানিয়া এসে বলল, ‘রোহান তুমি খুব ভালো মানুষ। কিন্তু আমার উপায় নেই। আমার এক্স ফিরে এসেছে। সে এখন লন্ডনে থাকে, সেখানকার নাগরিক। আমাকেও নিয়ে যাবে। তুমি অন্য কাউকে খুঁজে নাও প্লিজ!’
রোহান সেদিন বুঝেছিল ভালো মানুষদের টাকা লাগে না, প্রেমিকা লাগে না, চাকরি লাগে না, খাওয়া-পরা কিছুই লাগে না। ভালো মানুষ শূন্য থেকে আসে, শূন্যে সারাজীবন ভাসে আবার শূন্যে মিলিয়ে যায়। কবি লিখেছিলেন, ‘এই ফটকাবাজির দেশে স্বপ্নের পাখিগুলো বেঁচে নেই।’ রোহান কবি হলে লিখত– ‘এই বদ্বীপে ভালো মানুষেরা ভালো নেই।’ 
সহসভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, মৌলভীবাজার

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়

আগের দিন রোহিত শর্মার রেকর্ড ভেঙেছিলেন বাবর আজম। লাহোরে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অপরাজিত ১১ রানের ইনিংস খেলেই ভারতের সাবেক অধিনায়ককে টপকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়েছিলেন বাবর। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আজ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে কেড়েছেন আরেক ভারতীয় কিংবদন্তি বিরাট কোহলির রেকর্ড। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাবরের এটি ৪০তম ৫০ ছোঁয়া ইনিংস। ৩৯টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে এত দিন বাবরের সঙ্গে  রেকর্ডটির যৌথ মালিক ছিলেন কোহলি।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ইনিংস পর ফিফটি পাওয়া বাবরের ইনিংসে ভর করেই লাহোরে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিটা ৪ উইকেট জিতেছে পাকিস্তান। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজটা পাকিস্তান জিতল ২-১ ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচ হারার পর ঘুরে দাঁড়িয়েই সিরিজ জিতল পাকিস্তান।

টসে হেরে ব্যাটিং পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে করে ১৩৯ রান। রানটা ৬ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে পাকিস্তান।

রান তাড়ায় ইনিংসের ১১তম বলে ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। বাবর ব্যাটিংয়ে নামেন এরপরই। দ্বিতীয় উইকেটে সাহিবজাদা ফারহানকে নিয়ে ৩৬ রান জুটি গড়া বাবর তৃতীয় উইকেটে সালমান আগাকে নিয়ে ৫২ বলে  যোগ করেন আরও ৭৬ রান। ২৬ বলে ৩৩ রান করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান যখন ফেরেন ২৭ বলে ২০ রান দরকার পাকিস্তানের।

৫ রান যোগ হওয়ার পর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন বাবর ৪৭ বলে ৯ চারে ৬৮ রান করা বাবর ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর ১৫ রানের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে আরও ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের অপেক্ষা একটু লম্বা করেছে পাকিস্তান।

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ৩৬ বলে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন ওপেনার রিজা হেনড্রিকস। এ ছাড়া অধিনায়ক ডোনোভান ফেরেইরা ১৪ বলে ২৯ ও অলরাউন্ডার করবিন বশ ২৩ বলে করেন ৩০ রান। পাকিস্তানি পেসার শাহিন আফ্রিদি ২৬ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

দুই দল এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। সিরিজের প্রথম ম্যাচ মঙ্গলবার ফয়সালাবাদে।

সংক্ষিপ্ত স্কোরদক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৩৯/৯ (হেনড্রিকস ৩৪, বশ ৩০*, ফেরেইরা ২৯, ব্রেভিস ২১; আফ্রিদি ৩/২৬, তারিক ২/২৬, ফাহিম ২/২৮)।
পাকিস্তান: ১৯ ওভারে ১৪০/৬ (বাবর ৬৮, সালমান ৩৩, ফারহান ১৯; বশ ২/২৪, উইলিয়ামস ২/২৬)।
ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩-ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আরব আমিরাতকে ৪৯ রানে গুঁড়িয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্র
  • চট্টগ্রামে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা
  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়