মানুষ শূন্য থেকে আসে, আবার শূন্যে ভেসে যায়
Published: 3rd, March 2025 GMT
ইন্টারভিউ বোর্ডে সরাসরি ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অফার প্রত্যাখ্যান করার পর রোহানকে উদ্দেশ করে একজন কর্মকর্তা সরাসরিই বলে দিলেন, ‘আপনি আসলে বেশি ভালো মানুষ। এত ভালো মানুষ দিয়ে কোম্পানি চলে না, দেশও চলে না। সুতরাং টাকা দিতে না পারলে আপনি এখন আসুন।’ রোহান সেদিন খুব ধাক্কা খেয়েছিল। এরপর থেকে সে আর চাকরির চেষ্টাই করেনি। নিজের মার্কেটিং স্কিল কাজে লাগিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করে ভালোই চলছিল। এত ভালো রেজাল্ট করা ছেলেটি যেখানে ছয় ডিজিটের স্যালারিতে চাকরি করার কথা, সেখানে সামান্য ‘হকারি’ করছে দেখে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন নাক সিটকালেও, মন থেকে সে খুবই সন্তুষ্ট ছিল। ভেবেছিল অন্তত ভালো মানুষ হয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারবে। তা আর হলো কই!
গার্মেন্ট থেকে সস্তায় কাপড় কিনে বিক্রি করে পুঁজিও হয়েছে বেশ। একদিন আগুন লেগে কয়েকটি দোকান পুড়ে যায়। এরপর যাদের দোকান পুড়েছে তারা তো বটে, যাদের পোড়েনি তারাও রোহানের পাওনা টাকা না দিয়ে বলে, ‘আপনি ভালো মানুষ ভাই, এত টাকার দরকার কী? আমরা বউ-বাচ্চা নিয়ে কষ্টে আছি। ব্যবসাটা দাঁড়াক আবার, আপনার টাকা দিয়ে দেব।’ রোহান অনেকদিন এদের পেছনে ঘুরে হাল ছেড়ে দিল। ব্যবসাটাও আর রইল না। পুঁজি হারিয়ে উল্টো ঋণগ্রস্ত হয়ে গেল।
জীবন তো থেমে থাকে না। মা-বাবা, ছোট ভাই-বোনদের জন্য হলেও কিছু করা লাগে। সে একটা কোম্পানিতে আউটসোর্সিং বেসিসে কাজ শুরু করল। রোহানের স্কিল আর অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করে কোম্পানির মালিক কোটিপতি হয়ে গেল। ভেবেছিল তাকেও অন্তত কিছুটা প্রফিট দেওয়া হবে, যেহেতু তার অবদানটাই বেশি। তাকে স্যালারির বাইরে কোনো টাকাই দেওয়া হলো না। অথচ আইডিয়াটা ছিল তারই। কোম্পানির মালিক মানুষের সামনে প্রশংসা করতেন এভাবে, ‘রোহান খুব ভালো ও সৎ মানুষ, টাকা-পয়সার প্রতি তার লোভ নেই।’
রোহান পরের ধাক্কাটা খায় তার একমাত্র প্রেমিকা তানিয়ার কাছ থেকে। বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে যাচ্ছিল। একদিন তানিয়া এসে বলল, ‘রোহান তুমি খুব ভালো মানুষ। কিন্তু আমার উপায় নেই। আমার এক্স ফিরে এসেছে। সে এখন লন্ডনে থাকে, সেখানকার নাগরিক। আমাকেও নিয়ে যাবে। তুমি অন্য কাউকে খুঁজে নাও প্লিজ!’
রোহান সেদিন বুঝেছিল ভালো মানুষদের টাকা লাগে না, প্রেমিকা লাগে না, চাকরি লাগে না, খাওয়া-পরা কিছুই লাগে না। ভালো মানুষ শূন্য থেকে আসে, শূন্যে সারাজীবন ভাসে আবার শূন্যে মিলিয়ে যায়। কবি লিখেছিলেন, ‘এই ফটকাবাজির দেশে স্বপ্নের পাখিগুলো বেঁচে নেই।’ রোহান কবি হলে লিখত– ‘এই বদ্বীপে ভালো মানুষেরা ভালো নেই।’
সহসভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, মৌলভীবাজার
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মজাদার ডেজার্ট রেভানির রেসিপি
রেভানি তৈরি করতে পেরোতে হবে ৩টি ধাপ।
শিরাউপকরণ: পানি দেড় কাপ, চিনি ১ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, গোলাপজল ও লেবুর খোসা কোরানো সামান্য।
প্রণালি: একটি পাত্রে চিনি ও পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে ফুটতে দিন। চিনি গলে গেলে ৫-৭ মিনিট নাড়ুন। লেবুর রস ও খোসা দিন। নামিয়ে শিরা ছেঁকে এক পাশে রেখে দিন।
ক্রিমউপকরণ: দুধ ১ কেজি, কর্নফ্লাওয়ার সিকি কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ, কমলার খোসা কোরানো (জেস্ট) ১ চা–চামচ, ক্রিম ১ কৌটা, মাখন কিউব কয়েকটি।
প্রণালি: একটি পাত্রে সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে চুলায় বসান। দ্রুত নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে তাতে মাখনের কিউবগুলো দিয়ে দ্রুত মেশাতে থাকুন। ঠান্ডা
না হওয়া পর্যন্ত ঘন ঘন নাড়তে হবে।
উপকরণ: সুজি দেড় কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, চিনি আধা কাপ, লবণ সামান্য, বেকিং পাউডার ১ টেবিল চামচ, গলানো মাখন ১ কাপ, কোরানো নারকেল আধা কাপ, ডিম ৩টি, টক দই আধা কাপ, দুধ পৌনে এক কাপ।
প্রণালি: বাসবুসার জন্য একটি পাত্রে ডিম ও চিনি ভালোভাবে বিট করুন। বিট করতে করতে ফোম হলে এতে মাখন ও দই মিশিয়ে আবার বিট করুন। সুজি, ময়দা, বেকিং পাউডার ও কমলার খোসা যোগ করে হালকা হাতে মিশিয়ে নিন। একটি বাটার মাখানো বেকিং ট্রেতে অর্ধেক ব্যাটার ঢেলে ১৮০ ডিগ্রি তাপে ২০–২২ মিনিট বেক করুন।
বাসবুসা সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলে একটা মোটা কাবাব কাঠি দিয়ে ছিদ্র করে নিন। এবার আস্তে আস্তে অর্ধেক শিরা ঢেলে দিন, যেন তা ভালোভাবে শুষে নিতে পারে। এবার তৈরি করে রাখা ক্রিম ঢেলে দিন সমান করে। এই ক্রিমের ওপর বাকি অর্ধেকটা ব্যাটার ঢেলে দিন সমান করে। এরপর আবার ওভেনে একই তাপে ২০–২২ মিনিট বেক করুন। বেকিং শেষে ওভেনের তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। বের করে আগের মতো একইভাবে বাকি শিরাটুকু ঢেলে দিয়ে রেভানি ২ ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর টুকরা টুকরা করে কেটে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুনচিকেন বটি মাসালার রেসিপি২ ঘণ্টা আগে