শেখ অ্যাগ্রো ফুড থেকে কেনা হচ্ছে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল
Published: 4th, March 2025 GMT
ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৯৪.৫০ টাকা হিসেবে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ এই মসুর ডাল সরবরাহ করবে।
সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা টিসিবি'র ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২ লাখ ৮৮ হাজার মে.
সূত্র জানায়, মোট চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সমগ্র বাংলাদেশে (সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসহ) টিসিবি'র ফ্যামিলি কার্ডধারী প্রায় ১ কোটি নিম্নআয়ের পরিবারের মাঝে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির লক্ষ্যে টিসিবি কর্তৃক স্থানীয়ভাবে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন স্থানীয় ক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহ, কার্যসম্পাদন বা ভৌত সেবার জন্য বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশের তারিখ থেকে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের জন্য ন্যূনতম ২৮ দিন সময় ধার্য থাকলেও পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৬১ (৫) অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০২৪ সালের ৪ জুন তারিখের সভায় টিসিবি'র জন্য স্থানীয় দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের সময়সীমা ১৪ দিন করার সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয়ভাবে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ অনুসরণ করে গত ১৩ জানুয়ারি তারিখে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র জমা দেওয়ার নিদ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৪টি দরপত্র জমা পড়ে। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি-১৬ (৫ক) অনুযায়ী প্রতি কেজি মসুর ডালের দাপ্তরিক প্রাক্কলিত মূল্য ১১০.৫৪ টাকা।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা গত ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত ৪টি দরপত্র, তুলনামূলক বিবরণী এবং সংযুক্ত দাখিলকৃত কাগজাদি পর্যালোচনা করেন। পর্যালোচনা শেষে দাখিলকৃত ৪টি দরপত্রই রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ। এ প্রতিষ্ঠানটি ৫০ কেজির বস্তায় অগ্রিম আয়কর এবং টিসিবি'র গুদামসমূহে পরিবহন খরচসহ ১০ হাজার০ মে. টন মসুর ডালের প্রতি কেজির দাম ৯৫.৪০ টাকা উল্লেখ করে সর্ব নিম্নদরদাতা নির্বাচিত হয়। দরপত্রে অংশ নেওয়া অন্য ৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেসার্স পায়েল ট্রেডার্স প্রতি কেজির দাম ৯৫.৯৬ টাকা, শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৯৬.৭৩ টাকা এবং নাবিল নবা ফুড লিমিটেড প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৯৭.২৫ টাকা উল্লেখ করে।
দরপত্রে অংশ নেয়া ৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল সরবরাহ করার জন্য শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ-এর নাম সুপারিশ করে। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৯৫.৪০ টাকা হিসেবে ১০ হাজার মে.টন মসুর ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মূল্যায়ন কমিটির সপারিশে বলা হয়-(ক) রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম প্রাক্কলিত দামের চেয়ে (১১০.৫৩৫-৯৫.৪০)=১৫.১২৫ টাকা কম।
(খ) রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দর প্রতি কেজিতে অগ্রিম আয়কর ও টিসিবি'র গুদামসমূহে পরিবহন খরচসহ ৯৫.৪০ টাকা থেকে ১শতাংশ অগ্রীম আয়কর বাবদ ০.৯৫৪ টাকা ও পরিবহন খরচ ২ টাকা বাদ দিয়ে প্রকৃত মূল্য দাঁড়ায় (৯৫.৪০-০.৯৫৪-২)= ৯২.৪৪৬ টাকা। উল্লেখ্য, টিসিবি'র বাজার তথ্য অনুযায়ী গত ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে স্থানীয় বাজারে মাঝারি দানার মসুর ডালের প্রতি কেজির গড় খুচরা মূল্য ১১৫.০০ টাকা। আলোচ্য দর বর্তমান স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্য থেকে প্রতি কেজিতে (১১৫.০০-৯৫.৪০)= ১৯.৬০ টাকা কম।
(গ) গত ১৩ জানুয়ারি তারিখে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৫০ কেজির বস্তায় প্রতি কেজি মসুর ডাল ৯৭.৯২ টাকা দরে ক্রয় করা হয়েছে। যা থেকে আলোচ্য দর প্রতি কেজিতে (৯৭.৯২-৯৫.৪০)=২.৫২ টাকা কম দরে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ হ জ র ম দরপত র প র সপনস ভ মন ত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি ঋণ পরিস্থিতি অসম্ভব উদ্বেগের জায়গায় যাচ্ছে
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৫ সাল থেকে বিদেশি ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প করা হয়েছে। এসব ঋণের বেশির ভাগই দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে বা সরবরাহকারী ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়। এসব ঋণের বিপরীতে এখন বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে।
বছরে চার বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে, এটি বেশি মনে হতো না, যদি ওই সব ঋণের সদ্ব্যবহার করতে পারতাম; অর্থনীতিতে যদি গতি থাকত। কিন্তু এসব ঋণের প্রকল্পে অপচয়, তছরুপ ও দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মধ্যে আছে। ওই সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রপ্তানি আয় যদি বাড়াতে পারতাম, তাহলে ডলার আসত। তখন বিদেশি ঋণ পরিশোধে সমস্যা হতো না। তাই বিদেশি ঋণ পরিশোধ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভবিষ্যতে ঋণ পরিশোধ আরও উদ্বেগ বাড়াতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশকে তুলনামূলক বেশি সুদে বিদেশি ঋণ নিতে হয়। অন্যদিকে উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার কাছে নমনীয় ঋণ ছাড় কমেছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে তাদের ঋণ ছাড় বন্ধ করেছে বা কমিয়ে দিয়েছে।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ নিয়ে আরও চাপে পড়বে। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা উত্তরণের পর বিদেশি সহায়তার উৎস কমে যাবে। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ নিয়ে এর সদ্ব্যবহার করতে পারি, এমন উদাহরণ নেই। এ জন্য দেশের অনেক প্রকল্পের সময় ও খরচ বেড়েছে। ভবিষ্যতে ঋণের সরবরাহের চাপ বাড়বে। আবার ঋণের অর্থ পরিশোধও চাপে থাকবে। বিদেশি ঋণ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে অসম্ভব উদ্বেগের জায়গায় যাচ্ছে।