চাকরি পাওয়ার জন্য সাক্ষাৎকার পর্বটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা যদি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান গুগলে চাকরির জন্য হয়ে থাকে, তবে তো কথাই নেই। কারণ, প্রার্থীদের সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তি যাচাই করার জন্য মূল প্রশ্নের পাশাপাশি অদ্ভুত ও উদ্ভট প্রশ্ন করে থাকে গুগল। এসব প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারেন, কেউ পারেন না। তবে একটি প্রশ্নের উত্তর বেশির ভাগ প্রার্থীই ভুল করেন। প্রশ্নটি করার আগে প্রার্থীদের কল্পনা করতে বলা হয়, তাদের শরীরের আকার একটি কয়েনের মতো হয়ে গেছে। তারপর তাদের একটি লম্বা ব্লেন্ডারের ভেতর ফেলে দেওয়া হয়েছে। তখন জিজ্ঞাসা করা হয়, ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে ব্লেন্ডার চালু হওয়ার আগে আপনি পালানোর জন্য কী করবেন?

প্রশ্নটির উত্তরে অনেকেই বলেন, ব্লেন্ডার থেকে এক লাফেই বের হয়ে আসা যাবে। প্রায় সঠিক উত্তর হিসেবে বিবেচিত এই উত্তর আসলে ঠিক নয়। প্রশ্নটি সহজ বলে মনে হলেও সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য এক বৈজ্ঞানিক রহস্য আপনাকে জানতেই হবে। একজন মানুষ যদি একটি কয়েনের আকার ধারণ করে তাহলে ব্লেন্ডারের দেয়াল হবে মানুষের উচ্চতার প্রায় ১৫ গুণ, যা প্রায় আটতলা একটি ভবনের সমান লাফানোর সমতুল্য।

এই প্রশ্নের উত্তর জানতে বায়োমেকানিকসের জনক হিসেবে পরিচিত ১৭ শতকের বিজ্ঞানী আলফোনসো বোরেলির গবেষণা তথ্য বেশ কার্যকর। বোরেলি সেই সময় লক্ষ্য করেছিলেন, বিভিন্ন আকারের প্রাণী একই উচ্চতায় লাফ দেয়। ভর ও উচ্চতা যা–ই হোক না কেন কুকুর, বিড়াল, ঘোড়া কিংবা কাঠবিড়ালি সবাই প্রায় ১.

২ মিটার বাতাসে লাফ দিতে পারে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, আমাদের পেশি আমাদের ভর অনুযায়ী শক্তি তৈরি করে। সেই হিসেবে কয়েন আকারে থাকার সময় বিশেষ পদ্ধতিতে ব্লেন্ডার থেকে লাফ দিয়ে আপনি বের হয়ে আসতে পারবেন।

আরও পড়ুনচাকরি খোঁজার এআই টুল আনছে গুগল২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাধারণ তত্ত্বে যদি আপনাকে একটি কয়েনের আকারে সংকুচিত করা হয় তবে আপনার শক্তি ও ওজনের অনুপাত অনেক বেশি হবে। তখন আপনি–আপনার উচ্চতার বহুগুণ দ্রুত লাফ দিতে পারবেন। তখন যেহেতু আপনার পা খুব ছোট হবে, তাই আপনার পা মাটি ছেড়ে যাওয়ার আগে আপনি খুব অল্প সময়ের জন্য মাটিতে ধাক্কা দেবেন। এতে অবশ্য আপনি ব্লেন্ডার থেকে একবারে বের হতে পারবেন না। ব্লেন্ডার থেকে বের হওয়ার জন্য আপনাকে উচ্চশক্তি ব্যবহার করে ব্লেন্ডারের ব্লেডকে স্প্রিংয়ের মতো ব্যবহার করে লাফ দিতে হবে। ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে একবারে ব্লেডের ওপরে চাপ প্রয়োগ করলে আপনি বের হয়ে আসতে পারবেন।

আরও পড়ুনলিংকডইনে পছন্দের চাকরির সন্ধান পেতে যে ৫টি কাজ করতে হবে১১ অক্টোবর ২০২৪

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের লিংকন ইউনিভার্সিটির ইনসেক্ট মোশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক গ্রেগরি সাটন বলেন, আপনি শুধু পেশিকে এমন কিছু হিসেবে কল্পনা করেন যা শক্তি উৎপন্ন করে। তখন পেশি যান্ত্রিক শক্তি তৈরি করবে, যা বিভিন্ন প্রাণীকে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত লাফাতে সাহায্য করে। যদি সেই প্রাণীটি আকারের অর্ধেক হয়, তার অর্ধেক শক্তি থাকবে। তখন তা অর্ধেক ভর দিয়ে একই উচ্চতায় লাফ দিতে পারবে। একটি ঘাসফড়িং প্রায় এক মিটার উঁচুতে লাফ দিতে পারে। ফড়িং দুটি হাত ধরে - দ্বিগুণ ভর ও দ্বিগুণ পেশি নিয়ে এক মিটার উঁচুতে লাফ দিতে পারে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

আরও পড়ুনলিংকডইনে জীবনবৃত্তান্ত যোগ করবেন যেভাবে১৩ ডিসেম্বর ২০২২

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব ন র জন য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ