৮৭ বছর বয়সে পড়তে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে
Published: 5th, March 2025 GMT
যে বয়সে মানুষ জীবনের পাওয়া না–পাওয়ার হিসাব কষতে বসেন, সেই বয়সে নতুন এক অধ্যায় শুরু করতে চলেছেন ৮৭ বছর বয়সী কিম গ্যাপ-নিও। দক্ষিণ কোরিয়ার এই নারী আগামী মাসে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শুরু করতে চলেছেন।
জীবন সব সময়ই কিমের সামনে কঠিন রূপ নিয়ে এসেছে। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের চাপে ছাড়তে হয় লেখাপড়া। কিশোর বয়সে বিয়ে করবেন না বলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন, শুরু হয়েছিল নতুন এক সংগ্রাম।
জীবনভর সাহসের সঙ্গে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে গেছেন কিম। তবে সব সময় মনের কোণে লালন করেছেন ছোটবেলার অপূর্ণ এক ইচ্ছা।
কিমের জন্ম ১৯৩৮ সালে। কোরিয়া জাপানের দখলমুক্ত হওয়ার পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে শুরু করেন কিম। কিন্তু ছোট ভাইবোনদের লালন-পালনের জন্য মায়ের আদেশে লেখাপড়ার ইতি টানতে হয় তাঁকে। কিমের ১৭ বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের সংকট আরও গভীর হয়। মা তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দেন।
তবে বিয়েতে মোটেই রাজি ছিলেন না কিশোরী কিম। বাড়ি থেকে পালিয়ে বুসানে চলে যান, একটি জুতার দোকানে কাজ নেন। এক বছর পর সেখান থেকে চলে যান সিউলে। সেখানে করেছেন নানা কাজ। বিয়ে করেন, জন্ম হয় পাঁচ মেয়ের। স্বামী অসুস্থ থাকায় পাঁচ মেয়েকে বড় করার দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই বর্তায়।
১৫ বছর রোগে ভুগে স্বামী যখন মারা যান, তখন কিমের বয়স ৪৭। তখনো তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এভাবে দায়িত্ব পালন করতে করতে ৮০ বছর বয়স হয়ে যায় তাঁর।
তত দিনে অবশ্য দায়িত্ব থেকে খানিকটা ফুরসত মিলেছে। কিম সিদ্ধান্ত নেন, বিদ্যালয়ে ফিরবেন। এক বন্ধুর সহযোগিতায় ভর্তি হন ইয়াংওন এলিমেন্টারি স্কুলে। যাঁরা শৈশবে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন, তাঁদের ওই স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয়। এরপর ইলসাং উইমেন্স হাইস্কুলে।
বিদ্যালয়ের দিনগুলো দারুণ কেটেছে জানিয়ে এই বৃদ্ধা বলেন, স্কুলব্যাগ কাঁধে ঝোলালেই নিজেকে কিশোরী মনে হতো।
সহপাঠীদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন কিম, ইতিহাস পড়তে ভালোবাসতেন। অংক আর ইংরেজি শিখতে বেশ কষ্ট হয়েছে বলে জানান। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে সাফল্যের সঙ্গে হাইস্কুল পাস করেন কিম।
আগামী মাসে সুকমইয়াং উইমেন্স ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন এই নারী, পড়বেন সমাজ কল্যাণ নিয়ে। কিম বলেন, ‘আমার কোনো লক্ষ্য নেই। আমি শুধু পড়তে ভালোবাসি, আর মানুষের সঙ্গে থাকতে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে এই সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ দফা দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।
জামায়াতের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
একই দাবিতে আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা বা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী।