এ বছর মনোনীত ১৪টি রচনা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যে চিহ্নিত হয়েছে, যার সবক’টিই মানুষ হওয়ার অর্থ কী– তা ঘিরে আবর্তিত; যা এমন একটি জগতের সামনে উন্মুক্ত, যেখানে সহানুভূতির সম্ভাবনা এবং সীমাবদ্ধতা পরীক্ষিত হয়।
নর্ডিক কাউন্সিল সাহিত্য পুরস্কারের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হবে ২১ অক্টোবর। ২৮ অক্টোবর স্টকহোমে নর্ডিক কাউন্সিলের অধিবেশনে বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ৩ লাখ ডেনিশ ক্রোনা। ডেনমার্ক থেকে ম্যাডাম নিলসেনের উপন্যাস ‘ডডেবগসব্লেড’ এবং থমাস বোবার্গের উপন্যাস ‘ইনসুলা’, ফিনল্যান্ডে অনু কাজার উপন্যাস ‘রুসেটি’ এবং মিলজা সারকোলার ‘মিন সাইকিয়েটার’, ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ থেকে ভনবজর্ট ভ্যাংয়ের কবিতাগ্রন্থ ‘সোয়াট অর্কিড’, গ্রিনল্যান্ডের লিসাথে মোলারের উপন্যাস ‘কামারঙ্গুপ তারতুল্লু আকিসুগুনেরি’, আইসল্যান্ডের ইরিকুর অর্ন নর্ডডাহলের উপন্যাস ‘নকটুরোলো মাউলিন’, নরওয়ে থেকে জোহান হার্স্ট্যাডের উপন্যাস ‘আন্ডার ব্রোস্টেইনেন’ এবং আর্নে লিগ্রের নাট্যগ্রন্থ ‘আমি স্টেড’, সামি ভাষা এলাকা থেকে জালভি নিলাস হোলমবার্গের গ্রন্থ ‘ গোটনেল’, সুইডেন থেকে লোটা লোটাসের কবিতা সংকলন ‘রুবিকন/ইসসাস/ট্রয়’ ও আন্দ্রেজ টিচির উপন্যাস ‘হ্যানডেলসেবোকেন’ এবং আল্যান্ড থেকে ক্যারিনা কার্লসনের কবিতা সংকলন ‘মার্কোনিরুমেট’ মনোনীত হয়েছে সম্মানজনক এ পুরস্কারের জন্য। ১৯৬২ সালে যাত্রা শুরু হয় নর্ডিক কাউন্সিল সাহিত্য পুরস্কারের। উচ্চ সাহিত্যিক ও শৈল্পিক মানসম্পন্ন লেখার জন্য এ পুরস্কার পান লেখক। নর্ডিক ভাষায় লেখা সাহিত্যকর্ম, যেমন– উপন্যাস, নাটক, কবিতা সংগ্রহ অথবা ছোটগল্প বা প্রবন্ধের সংকলনকে দেওয়া হয় এ পুরস্কার। নর্ডিক কাউন্সিলের পাঁচটি পুরস্কারের উদ্দেশ্য হলো নর্ডিক সাংস্কৃতিক সম্প্রদায় এবং পরিবেশের ওপর নর্ডিক সহযোগিতার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করা। একই সঙ্গে অসামান্য শৈল্পিক ও পরিবেশগত প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া। নর্ডিক সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আগ্রহ তৈরির জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।