চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভ্রমণ: ভারত ০ কিলোমিটার, নিউজিল্যান্ড ৭০০০
Published: 7th, March 2025 GMT
গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল হয়ে ফাইনাল—চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে পৌঁছাতে ভারত ও নিউজিল্যান্ড দুই দলই খেলেছে চারটি করে ম্যাচ। তবে ম্যাচসংখ্যা সমান হলেও টুর্নামেন্টজুড়ে দৌড়ঝাঁপে দুই দল দুই মেরুতে।
রোহিত শর্মারা ভারত থেকে বেরিয়ে ভেন্যু শহরে পৌঁছানোর পর ১ কিলোমিটারও বিমান ভ্রমণ করেননি। কিন্তু একই সময়ে নিউজিল্যান্ড দলকে শহর থেকে শহর, দেশ থেকে দেশে ৭ হাজার কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ করতে হয়েছে।
ভ্রমণঝক্কিতে জেরবার নিউজিল্যান্ড আর এক শহরে স্থির হয়ে থাকা ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হবে ৯ মার্চ।
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) হলেও ভারত দেশটিতে খেলতে যায়নি। রোহিতদের সব ম্যাচ রাখা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবং সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দুবাইয়েই খেলেছে ভারত।
একই ভেন্যুতে রোহিতরা সব ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন বলে তাঁদের বাড়তি সুবিধা পাওয়া নিয়ে কম কথা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স, দক্ষিণ আফ্রিকার ফর ডার ডুসেনরা তো বটেই, ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামিও ভ্রমণ না করার সুবিধা স্বীকার করেছেন।
বিপরীতে টুর্নামেন্টের বাকি ৭ দলকেই একের পর এক ভেন্যুতে দৌড়াতে হয়েছে। অন্য সব দল ছাড়িয়ে ফাইনালে ওঠার কারণে নিউজিল্যান্ডের বেশিই ভ্রমণ করার কথা। তবে এই দলটির ভ্রমণ বেশি হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ প্রথম পর্বে ভারতের সঙ্গে একই গ্রুপে থাকাও।
আরও পড়ুনঅতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ক্ষেপে গেলেন গম্ভীর০৫ মার্চ ২০২৫নিউজিল্যান্ড দল গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে, ভেন্যু ছিল করাচি। পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। এই ম্যাচটি খেলার জন্য নিউজিল্যান্ড দল করাচি থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে ভ্রমণ করে। তৃতীয় ম্যাচের আগে অবশ্য ভ্রমণটা পাকিস্তানে সীমাবদ্ধ থাকেনি।
প্রতিপক্ষ ভারত বলে নিউজিল্যান্ডকে যেতে হয়েছে দুবাইয়ে। সেখানে ম্যাচ খেলেই আবার পাকিস্তানে লাহোর–যাত্রা, উদ্দেশ্য সেমিফাইনাল খেলা। বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলে নিউজিল্যান্ড দল আবার ওঠে দুবাইয়ের বিমানে।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৪৪ রানে হারিয়েছিল ভারত।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প পর ব স ম ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।