অধিকাংশ সিনেমার শুটিং শেষ, অপেক্ষা সেন্সরের
Published: 8th, March 2025 GMT
ঢাকার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে ঈদ মানেই যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার। দর্শকদের পদচারণায় সিনেমা হল হয়ে উঠে সরগরম। ঝিমিয়ে পড়া ইন্ডাস্ট্রি যেন সদর্পে ঘুরে দাঁড়ায়। তাই ঈদকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে ঢাকাই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি। বিগত বছরের মতো আসন্ন ঈদুল ফিতরেও মুক্তি পাচ্ছে অর্ধডজন সিনেমা।
সিনেমাগুলো হচ্ছে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’, সিয়াম আহমেদের ‘জংলি’, আফরান নিশোর ‘দাগি’, আদর আজাদের ‘পিনিক’ ও নুসরাত ফারিয়া ও সজলের ‘জ্বীন’ ৩।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদে মুক্তির অপেক্ষা থাকা অধিকাংশ সিনেমার শুটিং শেষ। বাকি আছে কেবল প্যাচওয়ার্ক ও গানের শুটিং। ঈদের এই ছবিগুলো বর্তমানে কী অবস্থায় আছে সে খবর নিয়েই সমকাল যোগাযোগ করেছে সিনেমাগুলোর প্রযোজক ও নির্মাতাদের সঙ্গে।
বরবাদের বাকি আছে গানের কাজ
এবারের ঈদের সর্বাধিক আলোচিত ছবি বরবাদ। ছবিটির মধ্যমণি হচ্ছেন শাকিব খান। মূলত তাঁকে নিয়েই যত আগ্রহ, আলোচনা ও চর্চা। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মেহেদি হাসান হৃদয়। কদিন আগে এর টিজার প্রকাশ করা হয়। যাতে শাকিব খানকে দেখা গেছে গ্যাংস্টার বাবার বখে যাওয়া সন্তানের চরিত্রে। যে কিনা ড্রাগ নিচ্ছে, যার বিরুদ্ধে আছে ধর্ষণের অভিযোগ, একের পর এক হত্যা করছে শত্রুপক্ষের লোকজনকে, রক্ত ছিটকে এসে লাগছে তার চোখে-মুখে। ভালোবাসার মানুষ নিতুকে পাওয়ার জন্য দুনিয়া বরবাদ করতেও রাজি সে। সেই নিতু চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইধিকা পাল। টিজারে শাকিবের লুক ও অ্যাকশন দারুণ প্রশংসিত হয়। মিশা সওদাগর, যিশু সেনগুপ্ত, শহীদুজ্জামান সেলিমকে দেখা গেছে টিজারে। এ ছবির মাধ্যমে ‘প্রিয়তমা’র পর আবারও ঈদে শাকিবের বিপরীতে হাজির হচ্ছেন ইধিকা। সিনেমাটির সর্বশেষ আপডেট জানতে যোগাযোগ করা হয় মেহেদি হাসান হৃদয়ের সঙ্গে। তিনি জানান, বরবাদের কাজ নিয়েই দেশের বাইরে আছেন তিনি। শিগগিরই ফেরে বরবাদের নতুন ম্যাটার প্রকাশ করবেন। এদিকে বরবাদ টিম থেকে জানা গেছে, এখনও সিনেমাটির দুটি গানের কাজ বাকি আছে। গানগুলো শেষ হলেই সেন্সরে জমা পড়বে বরবাদ। তার আগে বিচ্ছিন্নভাবে প্রচারণার জন্য কনটেন্ট প্রকাশ করতে থাকবে।
জংলি পুরোপুরি প্রস্তুত
গত বছর থেকেই প্রস্তুত এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’। ফার্স্ট লুকও প্রকাশিত হয়েছিল সে বছরের কুরবানি ঈদের আগে। কথা ছিল, কুরবানির ঈদেই ছবিটি মুক্তি পাবে। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন নির্মাতা। নতুন ঘোষণা দেন, ২০২৫ সালের রোজার ঈদে মুক্তি দেবেন ‘জংলি’। ছবিটি নিয়ে অনেক আগে থেকেই আলোচনায় শবনম বুবলী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরেক নায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। ছবিতে ভিন্ন লুকের সিয়ামকে দেখে প্রশংসা করেছেন দর্শক। এর মধ্যে শুরু হয়েছে ছবিটির প্রচার-প্রচারণা। গেল ১২ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে প্রকাশিত ‘জনম জনম’ গানটি জানিয়ে দিয়েছে শুধু ভায়োলেন্স নয় ছবিটিতে চকলেটবয় সিয়ামকেও পাওয়া যাবে। তবে সিনেমাটি এখনও সেন্সরে জমা পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে ছবিটির পরিচালক বলেন, আমরা ঈদের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। কিছু টেকনিক্যাল কারণে আমাকে দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে। সে কারণে সেন্সরে কাছে জমা দেওয়া হয়নি; শিগগিরই সেন্সরে জমা দেব।’
প্যাচওয়ার্ক শেষেই সেন্সরে যাবে ‘দাগি’
২০২৩ সালের ঈদে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষিক্ত হয়েই সাফল্য পেয়েছিলেন আফরান নিশো। এরপর দুই বছর নাই। এবার ঈদে তিনি শিহাব শাহীনের হাত ধরে নিজের দ্বিতীয় সিনেমা ‘দাগি’ নিয়ে ফিরছেন। এই ছবিতেও তাঁর বিপরীতে অভিনয় করছেন তমা মির্জা, আরও আছেন সুনেরাহ বিনতে কামাল। কদিন আগে শুটিং শেষ হলেও সিনেমাটির কোনো লুক কিংবা গান, টিজার প্রকাশিত হয়নি। নির্মাতার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সিনেমার শুটিং শেষ। আগামী রোববার এটি সেন্সরে যাবে। পর্যায়ক্রমে টিজার এ গান প্রকাশ হবে। শিগগিরই শুরু হবে প্রচার-প্রচারণা। যে লেভেলে কাজ হয়ছে, তাতে সিনেমাটি নিয়ে বেশ আশাবাদী।’
পিনিকের চলছে এডিটিং
ঈদুল ফিতরে মুক্তির ঘোষণা দিয়ে শুটিং শেষ করেছে ‘পিনিক’ সিনেমা। অ্যাকশন-থ্রিলার গল্পে আদর আজাদ ও বুবলিকে জুটি করে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন জাহিদ জুয়েল। কক্সবাজারের দুর্গম এলাকায় কিছুদিন আগেই শুটিং হয় সিনেমাটির। তবে ঈদে মুক্তির ঘোষণা এলেও শুধু পোস্টার ছাড়া এখন পর্যন্ত সিনেমাটির কোনো প্রচারণা চোখে পড়েনি। তবে পরিচালক জানিয়েছেন সিনেমাটির এখন কালারের কাজ চলছে। শিগগিরই সব শেষ করে সেন্সরের জন্য জমা দেওয়া হবে। পাশাপাশি অন্য প্রমোশনাল মেটারগুলোও প্রকাশ করা হবে।
জিন-৩ এর শুটিং চলছে
২০২৪ সালের ঈদের চলচ্চিত্র ‘জ্বীন-২’ সিনেমাটি মোটামুটি ব্যবসা সফল হয়েছিল। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া তাদের তৃতীয় কিস্তি ‘জ্বীন ৩’ আগামী ঈদে মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। বলা যায়, ঈদে মুক্তির পেছনে সর্বশেষে যুক্ত হওয়া সিনেমা হচ্ছে এটি। এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া ও আবদুন নুর সজল। সিনেমাটি পরিচালনায় আছেন কামরুজ্জামান রোমান। জানা গেছে, সিনেমাটির শুটিং এখন চলমান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স য় ম আহম দ ঈদ র স ন ম পর চ ল র জন য কর ছ ন বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য
প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।
ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।
আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছেপ্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।
স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।
তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩