Samakal:
2025-05-01@05:38:48 GMT

ইফতার আয়োজনে নির্বাচনী হাওয়া

Published: 8th, March 2025 GMT

ইফতার আয়োজনে নির্বাচনী হাওয়া

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। এখন সেই পরিস্থিতি না থাকায় অনুকূল পরিবেশে ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার সামগ্রী বিতরণ এবং ইফতার মাহফিলের আয়োজন করছে বিএনপি-জামায়াত। ইফতার রাজনীতিতে প্রাধান্য পাচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে লক্ষ্যে নেতারা দলীয় কর্মী ও ভোটারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। 
বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকাভিত্তিক দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে চলছে ইফতার সামগ্রী বিতরণের কার্যক্রম। একইসঙ্গে আয়োজন করা হচ্ছে ইফতার মাহফিলও। এ আয়োজনের মধ্যেই রাখা হচ্ছে কর্মিসভা, কর্মশালা, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি। এসব কর্মসূচি পালনে দুটি দলের হাইকমান্ড থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি বেশি সরব দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা সংস্কার নিয়ে। এটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে চলছে এলাকায় এলাকায় আলোচনা সভা। সব মিলিয়ে সরগরম চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠ। 
এদিকে, নির্বাচনের আবহ তৈরি হতে যাওয়ায় বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আগ্রহী নেতারা এখন এলাকামুখী। চট্টগ্রামে ১৬টি আসন রয়েছে। প্রতিটি আসনে দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন। ইফতার সামগ্রী বিতরণ ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীর কাছাকাছি যাচ্ছেন তারা। ইফতার সামগ্রী ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করছেন তারা। কাজে লাগানো হচ্ছে দল দুটির পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে। ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিল আয়োজনকে সফল করে তৃণমূল পর্যায়ে দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। গত মঙ্গলবার নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। ইতোমধ্যে এই কার্যক্রম শুরুও হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে দল ও এলাকায় নিজেদের অবস্থানকে শক্ত করার চেষ্টা করছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘দমবন্ধ’ অবস্থা থেকে বের হয়ে এসেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। এরই মধ্যে উঠেছে নির্বাচনের রব। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দোটানা থাকলেও চলতি বছরের ডিসেম্বর কিংবা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এরইমধ্যে আবার স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনের বিষয়টিও সামনে আসছে। সব মিলিয়ে এক ধরনের নির্বাচনের আবহের মধ্যেই চলছে রমজান মাস। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতাকর্মীদের সংগঠিত ও চাঙ্গা করতে মওকা হিসেবে নিয়েছে এই মাসকে। রোজায় নগরীতে ইফতার মাহফিল আয়োজন ও ইফতার সামগ্রী বিতরণের ধুম পড়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মাঠছাড়া হওয়ায় বিএনপি ও জামায়াত রীতিমতো প্রতিযোগিতা করে এই ধরনের আয়োজন করছে।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। তারা মানুষের 
বাক স্বাধীনতায় পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করেছে। তাদের পতনের পর মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। এবার পবিত্র রমজান মাসে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিল ও ইফতার সামগ্রী বিতরণে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইফতার মাহফিলের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দলকে আরও শক্তিশালী ও সৃসংহত করা হবে। নগরীর ১৫টি সাংগঠনিক থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ডে উন্মুক্ত স্থানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হচ্ছে।’
বিএনপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে জামায়াত ইসলামীও। গত ৩ মার্চে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জামায়াত। এতে জামায়াতের সিনিয়র নেতারা অংশ নেন। এছাড়া ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিল আয়োজন তো চলছেই।
চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী সমকালকে বলেন, ‘রমজান মাসের শুরু থেকেই ইফতার মাহফিল আয়োজন করছে জামায়াত। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে দলীয়ভাবে এই কার্যক্রমের সঙ্গে অন্যান্য কর্মসূচিও যুক্ত করা হচ্ছে। এভাবে সাধারণ মানুষের আরও কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।’ 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র ন ত কর ম পর য য় আওয় ম ব এনপ সরক র ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ