স্ট্রিমিং সাইট অ্যামাজনে কয়েক দিন ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে প্রতিযোগিতামূলক এক সিরিজ। তরুণ অনলাইন দর্শকদের টিভির প্রতি আগ্রহী করে তুলছে এই সিরিজ। ‘বিস্ট গেমস’ নামের একটি অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর রিয়েলিটি শো নিয়ে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ইউটিউবার মিস্টার বিস্ট এই টিভি অনুষ্ঠান হোস্ট করছেন। যদিও এই শো ভালোভাবে তৈরি করা কোনো টিভি শোয়ের মতো নয়। বেশ ব্যয়বহুল একটি শো তৈরি করে আলোচনায় আছেন মিস্টার বিস্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার গ্রিনভিলের ২৬ বছর বয়সী তরুণ জিমি ডোনাল্ডসন ইউটিউবে ‘মিস্টার বিস্ট’ নামে আলোচিত। তাঁর পাগলামি দেখা যাচ্ছে এই টিভি শোতে। সিরিজটি ইউটিউবের বাইরের দর্শকেরা দেখে আলোড়িত হচ্ছেন। মিস্টার বিস্টের পাগলামি আর ১ হাজার ১০০ জন প্রতিযোগীকে দেখা যায় এই শোতে। ১ হাজার ১০৭টি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠান ধারণ করা হচ্ছে। ৫০ লাখ ডলার নগদ পুরস্কারের জন্য একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছেন সব প্রতিযোগী। পুরো শো অনেকটা নেটফ্লিক্সের ‘স্কুইড গেম’–এর মতো।

ডোনাল্ডসনের ভাষ্যে, ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার বিনোদনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঙ্ক। এই শোতে দেখা যায়, নানা ধরনের প্রতিযোগিতার জন্য মিস্টার বিস্ট চ্যালেঞ্জ তৈরি করেন। নেটফ্লিক্স ডিস্টোপিয়ান সিরিজ ‘স্কুইড গেম’–এর আদলে একটি বিশাল ঘরে এই শো ডিজাইন করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্বে বাদ পড়া প্রতিযোগীদের গর্তে ফেলে দেওয়া হয় এই শোতে!

শোতে দেখা যায়, বিলাসবহুল সব পুরস্কারের জন্য মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ খেলছেন প্রতিযোগীরা। অনেক প্রতিযোগী জীবনের বিভিন্ন সংকট ও আর্থিক বিল পরিশোধের নামে এই শোতে অংশ নিচ্ছেন। এমন গেম শো নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ‘বিস্ট গেমস’–এর অনুষ্ঠানটি ইউটিউব ও টেলিভিশনের মধ্যে দূরত্ব মুছে দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। মিস্টার বিস্ট বিভিন্ন ভিডিও তৈরিতে অনেক অর্থ ব্যয় করেন। বিস্ট গেমস তৈরিতে অনেক অর্থ ব্যয় করছেন তিনি। ১৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে একেকটি পর্ব ধারণ করা হয়। প্রায় ৩৬ কোটি গ্রাহকের কাছে এই শো পৌঁছে যায়।

বেশ জনপ্রিয় এখন ‘বিস্ট গেমস’। অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর সবচেয়ে বেশি দেখা আনস্ক্রিপ্টেড সিরিজ এটি। ২৫ দিনে ৫ কোটি দর্শক এই শো দেখেছেন। বিশ্বের ৮০টি দেশে এটি অ্যামাজন প্রাইমের ১ নম্বর শো হিসেবে আলোচনা তৈরি করেছে। এই শোয়ের কয়েক পর্ব ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে। লেখক অ্যাড্রিয়ান হরটন মনে করেন, এই শো টিভি ও ইউটিউবের মধ্যে পার্থক্য কমিয়ে দিচ্ছে। এই অনুষ্ঠান টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ধরন ও কার্যকারিতা—উভয়কেই পরিবর্তন করছে। এখন অনেক বেশি দর্শক ইউটিউব টেলিভিশন স্ক্রিনে দেখেন। যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকেরা অন্য যেকোনো যন্ত্রের চেয়ে টিভিতে বেশি ইউটিউব দেখছেন এখন।

ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নীল মোহন এ মাসে তাঁর বার্ষিক চিঠিতে লিখেছেন, ইউটিউব হলো নতুন টেলিভিশন। ইউটিউব টেলিভিশন তৈরি করছে না, কিন্তু সেভাবেই দেখা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী দর্শকেরা গত বছর তাঁদের টিভির পর্দায় ১০০ কোটি ঘণ্টার বেশি কনটেন্ট স্ট্রিম করেছেন। ইউটিউবের ভাষ্যে, প্রতি মাসে ৪০ কোটি ঘণ্টা অডিও পডকাস্টসহ বিভিন্ন কনটেন্ট টিভিতে দেখা হচ্ছে। ইউটিউব ২০২২ সালে বিভিন্ন সিরিজ তৈরির জন্য অরিজিনাল নামের বিভাগটি বন্ধ করে দেয়। ইউটিউব এখন শিশুদের বিনোদন নিয়ে কাজ করছে। কার্যকরভাবে ইউটিউব হয়তো নতুন ধরনের টেলিভিশন নয়, কিন্তু টিভির সঙ্গে এক হয়ে পথ চলছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন অ য ম জন জন প র এই শ ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ