যে টিভি অনুষ্ঠান ইউটিউবকে টেলিভিশনে নিয়ে এসেছে
Published: 9th, March 2025 GMT
স্ট্রিমিং সাইট অ্যামাজনে কয়েক দিন ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে প্রতিযোগিতামূলক এক সিরিজ। তরুণ অনলাইন দর্শকদের টিভির প্রতি আগ্রহী করে তুলছে এই সিরিজ। ‘বিস্ট গেমস’ নামের একটি অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর রিয়েলিটি শো নিয়ে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ইউটিউবার মিস্টার বিস্ট এই টিভি অনুষ্ঠান হোস্ট করছেন। যদিও এই শো ভালোভাবে তৈরি করা কোনো টিভি শোয়ের মতো নয়। বেশ ব্যয়বহুল একটি শো তৈরি করে আলোচনায় আছেন মিস্টার বিস্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার গ্রিনভিলের ২৬ বছর বয়সী তরুণ জিমি ডোনাল্ডসন ইউটিউবে ‘মিস্টার বিস্ট’ নামে আলোচিত। তাঁর পাগলামি দেখা যাচ্ছে এই টিভি শোতে। সিরিজটি ইউটিউবের বাইরের দর্শকেরা দেখে আলোড়িত হচ্ছেন। মিস্টার বিস্টের পাগলামি আর ১ হাজার ১০০ জন প্রতিযোগীকে দেখা যায় এই শোতে। ১ হাজার ১০৭টি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠান ধারণ করা হচ্ছে। ৫০ লাখ ডলার নগদ পুরস্কারের জন্য একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছেন সব প্রতিযোগী। পুরো শো অনেকটা নেটফ্লিক্সের ‘স্কুইড গেম’–এর মতো।
ডোনাল্ডসনের ভাষ্যে, ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার বিনোদনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঙ্ক। এই শোতে দেখা যায়, নানা ধরনের প্রতিযোগিতার জন্য মিস্টার বিস্ট চ্যালেঞ্জ তৈরি করেন। নেটফ্লিক্স ডিস্টোপিয়ান সিরিজ ‘স্কুইড গেম’–এর আদলে একটি বিশাল ঘরে এই শো ডিজাইন করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্বে বাদ পড়া প্রতিযোগীদের গর্তে ফেলে দেওয়া হয় এই শোতে!
শোতে দেখা যায়, বিলাসবহুল সব পুরস্কারের জন্য মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ খেলছেন প্রতিযোগীরা। অনেক প্রতিযোগী জীবনের বিভিন্ন সংকট ও আর্থিক বিল পরিশোধের নামে এই শোতে অংশ নিচ্ছেন। এমন গেম শো নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ‘বিস্ট গেমস’–এর অনুষ্ঠানটি ইউটিউব ও টেলিভিশনের মধ্যে দূরত্ব মুছে দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। মিস্টার বিস্ট বিভিন্ন ভিডিও তৈরিতে অনেক অর্থ ব্যয় করেন। বিস্ট গেমস তৈরিতে অনেক অর্থ ব্যয় করছেন তিনি। ১৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে একেকটি পর্ব ধারণ করা হয়। প্রায় ৩৬ কোটি গ্রাহকের কাছে এই শো পৌঁছে যায়।
বেশ জনপ্রিয় এখন ‘বিস্ট গেমস’। অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর সবচেয়ে বেশি দেখা আনস্ক্রিপ্টেড সিরিজ এটি। ২৫ দিনে ৫ কোটি দর্শক এই শো দেখেছেন। বিশ্বের ৮০টি দেশে এটি অ্যামাজন প্রাইমের ১ নম্বর শো হিসেবে আলোচনা তৈরি করেছে। এই শোয়ের কয়েক পর্ব ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে। লেখক অ্যাড্রিয়ান হরটন মনে করেন, এই শো টিভি ও ইউটিউবের মধ্যে পার্থক্য কমিয়ে দিচ্ছে। এই অনুষ্ঠান টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ধরন ও কার্যকারিতা—উভয়কেই পরিবর্তন করছে। এখন অনেক বেশি দর্শক ইউটিউব টেলিভিশন স্ক্রিনে দেখেন। যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকেরা অন্য যেকোনো যন্ত্রের চেয়ে টিভিতে বেশি ইউটিউব দেখছেন এখন।
ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নীল মোহন এ মাসে তাঁর বার্ষিক চিঠিতে লিখেছেন, ইউটিউব হলো নতুন টেলিভিশন। ইউটিউব টেলিভিশন তৈরি করছে না, কিন্তু সেভাবেই দেখা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী দর্শকেরা গত বছর তাঁদের টিভির পর্দায় ১০০ কোটি ঘণ্টার বেশি কনটেন্ট স্ট্রিম করেছেন। ইউটিউবের ভাষ্যে, প্রতি মাসে ৪০ কোটি ঘণ্টা অডিও পডকাস্টসহ বিভিন্ন কনটেন্ট টিভিতে দেখা হচ্ছে। ইউটিউব ২০২২ সালে বিভিন্ন সিরিজ তৈরির জন্য অরিজিনাল নামের বিভাগটি বন্ধ করে দেয়। ইউটিউব এখন শিশুদের বিনোদন নিয়ে কাজ করছে। কার্যকরভাবে ইউটিউব হয়তো নতুন ধরনের টেলিভিশন নয়, কিন্তু টিভির সঙ্গে এক হয়ে পথ চলছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন অ য ম জন জন প র এই শ ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?
মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।
কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।
জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)।
১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।
ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া।
অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।
মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ।
ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”
ঢাকা/শান্ত