কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সেবা ও শিল্পে কমেছে
Published: 9th, March 2025 GMT
সেবা ও শিল্প খাতে নারীর অংশগ্রহণ কমেছে, বেড়েছে কৃষি খাতে। পুরুষেরা কৃষি ছেড়ে অংশগ্রহণ করছে শিল্প ও সেবার মতো অন্যান্য খাতের প্রতিষ্ঠানে। অন্যদিকে নারীরা নতুন করে শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছেন, তাঁদের বড় অংশই নিয়োজিত হচ্ছেন কৃষিতে।
আজ রোববার উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ: সাম্প্রতিক ধারার পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, পুঁজিবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যে মজুরিকাঠামো তৈরি হয়েছে, তাতে এখনো নারীরা পিছিয়ে। মধ্যবিত্ত নারীদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন অর্থনৈতিক প্রণোদনার পাশাপাশি সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা।
বক্তারা আরও বলেন, কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও সেবা ও শিল্প খাতে অংশগ্রহণ কমেছে। শিল্প ও সেবা খাতের অংশীদারত্ব জিডিপিতে ৮৯ শতাংশেরও বেশি। তাই কৃষিতে নারীদের অবদান বৃদ্ধি পেলেও সামগ্রিক অর্থনীতিতে সেই তুলনায় অংশীদারত্ব কম। ফলে জিডিপিতে নারীদের অংশীদারত্ব আনুপাতিক হারে কমেছে।
এ সময় তুলে ধরা হয়, ২০১৩-২০২৩ সাল অর্থাৎ এ সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় নারীর অংশীদারত্ব ১২ দশমকি ৭ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশে। অথচ মরক্কো, তানজানিয়া, নেপাল, ঘানাসহ পাঁচটি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে মালিকানায় নারীর অংশীদারত্বের বিবেচনায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও তুলে ধরা হয়, ২০১৭-২২ সময়ের মধ্যে নারীদের গড় মাসিক মজুরি কমেছে ৯ শতাংশ। অথচ এ সময়ের ব্যবধানে পুরুষদের মজুরি বেড়েছে ৪ শতাংশ। বক্তারা বলেছেন, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও তাঁরা মূলত যুক্ত হয়েছেন কম মজুরির পেশায়। এ কারণেই কমেছে নারীদের গড় মাসিক মজুরি।
এ সময় বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আখতার বলেন, অর্থনীতিতে নারীর অংশীদারত্ব বাড়াতে রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। তিনি বলেন, জাতীয় ন্যূনতম মজুরির মাপকাঠি নির্ণয়ে কাজ করছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এ সময় রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, নারীদের মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করা হলে তার সম্ভাবনা, সৃষ্টিশীল ও মনস্তাত্ত্বিক সম্পদের পূর্ণ বিকাশ হয় না। তাই প্রচলিত শ্রমবাজারে অর্থনীতি কাঠামো পরিবর্তন ও সামাজিক বন্দোবস্ত না করা হলে নারীরা পিছিয়ে পড়বে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর বলেন, ‘পোশাকশিল্পে মেয়েদের অংশগ্রহণ কমে যাচ্ছে। কারণ, কম দক্ষতার কাজে মেয়েদের আর বেশি দক্ষতার কাজে ছেলেদের বেশি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে নারীরা বেশ প্রতিষ্ঠিত হলেও মাঝারি উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের পড়তে হয় নানা সমস্যায়।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাতেমা সুলতানা, লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ইলোরা দেওয়ান, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্যসচিব জাহিদ রহমান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ৭ হাজারের বেশি সদস্যের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে: তারেক রহমান
ছবি: তারেক রহমানের ফেসবুক পোস্ট থেকে