সবশেষ লাল-সবুজের জার্সিতে মোহাম্মদ নাঈম শেখকে দেখা গেছে ওয়ানডে সংস্করণে। দেড় বছর আগে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। টি-টোয়েন্টি খেলেছেন শেষ ওয়ানডে খেলার এক বছর আগে। আর একমাত্র টেস্ট খেলেন ২০২২ সালের জানুয়ারিতে।

লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও নাঈম শেখ আসল কাজটাই করেছেন। নিজেকে ভেঙেছেন, গড়েছেন। তাতে ধারাবাহিকভাবে হাসছে তার ব্যাট, ছুটছে রানের ফোয়ারা। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বুলানো যাক।

২০২৪ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৫৩৬ রান করে হয়েছিলেন পঞ্চম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বছরের শেষে এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে ৩১৬ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ৫১১ রান করে ছিলেন সবার ওপরে। এবার চলমান ঢাকা লিগে ১৭৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেললেন প্রাইম ব্যাংকের এই ক্রিকেটার।

আরো পড়ুন:

বৃথা গেল আল-আমিনের সেঞ্চুরি, আবাহনীর জয়

নাঈম শেখের ১৭৬, দলের জয়ের ব্যবধান ১৭৩

অফ ফর্মের কারণে নাঈম জাতীয় দলের ছিলেন আসা-যাওয়ার মধ্যে। তানজীদ হাসান তামিমরা রান করার পর আর জায়গা পাননি জাতীয় দলে। ব্যাটিংয়ে ছিল কৌশলগৎ সমস্যা। ফুটওয়ার্ক ছিল বাজে। নাঈম এসব নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে বাইশ গজে রানের দেখা পাচ্ছেন।

১৭৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর নিজের কাজ নিয়ে নাঈম সংবাদমাধ্যমে বলেন, “ফুটওয়ার্ক নিয়ে…দুই বছর যেভাবে কাজ করতেছি, এখনও একই প্রসেসে ব্যাটিং করেছি। হয়তো বেশি এক্টিভ মনে হয়েছে।”

“অবশ্যই। কাভার, এক্সট্রা কাভার নিয়ে আমি বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করছি। এনসিএল থেকে এ জিনিসগুলো করতেছি। কিছু কিছু স্পেসিফিক জায়গা থাকে, যেখানে রান করলে ভালো লাগে। চেষ্টা করতেছিলাম যেন মিস না হয়”-আরও যোগ করেন নাঈম।

নাঈমের ১২৫ বলের ইনিংসটি ছিল চোখ ধাঁধানো। ১৮টি চার ও ৮টি ছক্কায় সাজানো। ৩৮ বলে ফিফটির পর ৮২ বলে সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির পর ৪৩ বলে করেছেন ৭৬ রান। অল্পের জন্য পাননি ডাবল সেঞ্চুরি। আউট হওয়ার পর হতাশাও কাজ করছিল, কিন্তু এই নিয়ে কোনো আক্ষেপ কাজ করছে না।

নাঈম বলেন, “ওই সময় মনে হচ্ছিল আরেকটু মনোযোগ থাকলে ভালো। আমি ৩৬–৩৭ ওভারের সময় আউট হইছি, হয়তো ৪৪–৪৫ ওভার পর্যন্ত যেতে পারলে আলাদা কিছু করতে পারতাম।”

“আক্ষেপ নাই। ১৭৬ করতে পেরে ভালো লাগছে। কোনো আক্ষেপ নাই।”

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ কর র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ