কক্সবাজারে এক মার্কিন নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে তারেকুল ইসলাম (২৫) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার বিকেলে শহরের ঝাউতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ওই মার্কিন নারী জাতিসংঘের একটি সংস্থার কক্সবাজার কার্যালয়ে কর্মরত বলে জানা গেছে।  

পুলিশ জানায়, আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে শহরের সার্কিট হাউস সড়কে হাঁটতে যান ওই নারী। এ সময় অভিযুক্ত তারেকুল তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালান। বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে তারেকুলকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার তারেকুল ইসলাম বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারেক শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাজেরপাড়ার ফরিদুল আলমের ছেলে। কক্সবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মো.

ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, তারেকুল ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছিল। কয়েক মাস কারাগারে থেকে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসেন।

আজ সকালের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি মো. ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকালে ওই মার্কিন নারী যখন হাঁটতে বের হন, তখন তারেকুল তাঁকে অনুসরণ করেন। কাছে গিয়ে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে জোর করে ওই নারীকে জড়িয়ে ধরেন। তখন ওই নারী হইচই শুরু করলে তারেকুল পালিয়ে যান। মুহূর্তে খবরটি পুলিশ জানতে পারে। ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে পুলিশের বিশেষ টিম তারেকুলের খোঁজে শহরের বিভিন্ন এলাকার অভিযান শুরু করে। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা অভিযান শেষে বিকেল পাঁচটার দিকে শহরের ঝাউতলার একটি আস্তানা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

ওসি মো. ইলিয়াস খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারেকুল মার্কিন নারীর শ্লীলতাহানির কথা অস্বীকার করেছেন। তবে এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

সুরা নাস: বাংলা অর্থসহ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থী সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।

সুরা নাসের বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করা হলো।

বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

উচ্চারণ: কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।

অর্থ: বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে।

আরও পড়ুনসুরা ফাতিহার বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪সুরা নাসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

সুরা নাস মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। এই সুরায় আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে:

রব্বিন নাস (মানুষের রব): আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।

মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি): তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।

ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য): তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।

সুরাটি শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রার্থনায় জোর দেয়। কেননা, শয়তান ‘ওয়াসওয়াস’ (কুমন্ত্রণা) দেয় এবং ‘খান্নাস’ (পিছনে লুকিয়ে থাকে)। এই কুমন্ত্রণা জিন ও মানুষ উভয়ের থেকে আসতে পারে, যা মানুষের অন্তরে মন্দ চিন্তা ও পাপের প্রতি প্ররোচিত করে।

হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়তেন, হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)

বোঝা যায়, সুরা নাস পড়া শয়তানের প্রভাব ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।

আরও পড়ুনসুরা কাহাফের ৪ কাহিনিতে সফলতার ৪ শিক্ষা২০ জুলাই ২০২৫সুরা নাসের ফজিলত

সুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)

এই সুরা পড়া শয়তানের কুমন্ত্রণা, জাদু, হিংসা এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, “সুরা নাস মানুষকে শয়তানের মানসিক ও আধ্যাত্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।” (তাফসির ইবনে কাসির, পৃষ্ঠা: ৮/৫৩৬, দারুস সালাম প্রকাশনী, ২০০০)।

সুরা নাস একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা, যা মানুষকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে রক্ষা করে। আধুনিক জীবনে, যখন আমরা প্রতিনিয়ত নানা প্রলোভন ও মানসিক চাপের মুখোমুখি হই, তখন এই সুরা আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করতে পারে। এই সুরা নিয়মিত পাঠ, বিশেষ করে সকাল-সন্ধ্যায় এবং ঘুমানোর আগে, মুমিনের জীবনে শান্তি ও সুরক্ষা নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনসুরা আর-রহমান: সারকথা ও ফজিলত০৮ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ