পাবনার সাঁথিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে যুবলীগ নেতা আমিরুল ইসলাম আমিরকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের চকপাট্টা উত্তরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। রাতেই গৌরীগ্রাম এলাকা থেকে ইমু ও পাবনা মনসুরাবাদ এলাকার সিএনজিচালক মিঠুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আমিরুল ইসলাম ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের মৃত লোয়াই প্রামাণিকের ছেলে। তিনি উপজেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়াও ক্ষেতুপাড়া আব্দুস সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাত ৮টার দিকে ক্ষেতুপাড়া গ্রামের ইমু, সালেক ও মিঠুনসহ কয়েকজন আমিরুলের ভাই সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফ আলীকে মারধর করেন। এ খবর শুনে আমিরুল সেখানে গেলে অভিযুক্তরা তাকে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যায়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আমিরুলের ভাই আশরাফ আলীকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আহত আশরাফ আলী জানান, কয়েক বছর আগে স্থানীয় বাজারে চায়ের দোকানে ইমু, সালেকসহ কয়েকজনের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছিল। এরপর আর তাদের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। ঘটনার দিন হঠাৎ তারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। ভাই বাধা দিলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। 

থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পাবনা আদালতে পাঠানো হয়েছে; অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ