বিফ স্টু বানাবেন যেভাবে, দেখুন রেসিপি
Published: 12th, March 2025 GMT
উপকরণ
মেস্তা বা রোজেলা পাপড়িতে জ্বাল দেওয়া পানি সিকি কাপ, লাল আঙুরের রস সিকি কাপ, ওরচেস্টারশায়ার সস ১ টেবিল চামচ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ, আলু মাঝারি আকারের ৩টি, গাজর ৩টি, সেলেরি স্টিক ১টি, বাটন মাশরুম ২০০ গ্রাম, গরুর রানের মাংস দেড় থেকে দুই কেজি, লবণ আন্দাজমতো, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ চার কোনা করে কাটা ২ কাপ, রসুনকুচি আধা কাপ, তেল আধা কাপ, ছোট আস্ত পেঁয়াজ ১ কাপ (খোসা ছাড়ানো), টমেটো পেস্ট ৩ টেবিল চামচ, ময়দা ১ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, চিকেন/বিফ স্টক ৪ কাপ, তেজপাতা ২টি, থাইম পাতা শুকনা ১ চা-চামচ, আনফ্লেভারড জেলাটিন ১ চা-চামচ, মটরশুঁটি আধা কাপ।
আরও পড়ুনসাদা শর্ষের রুই রাঁধবেন যেভাবে, দেখুন রেসিপি১১ মার্চ ২০২৫প্রণালি
প্রথমে সব কটি সসের সঙ্গে মেস্তার পানি, আঙুরের রস মিশিয়ে নিন। আলু, গাজর কেটে নিন। সেলেরি গোল পাতলা করে কাটুন। মাশরুম চার টুকরা করে নিন। মাংস কিচেন টাওয়েল দিয়ে মুছে নিন। লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে রাখুন। চুলায় প্যান দিন। গরম হলে তাতে ২ টেবিল চামচ তেল দিন। ধোঁয়া বের হলে মাংস দিন সাজিয়ে। উচ্চ তাপে দুই পাশ গ্রিল করে আলাদা পাত্রে তুলে রাখুন। প্যানে এবার ডাইস করে কাটা পেঁয়াজ দিন, রসুনকুচিও দিন। মাশরুম, গাজর ও আলু দিন। ভেজে তুলে রাখুন। বাকি তেল দিয়ে দিন। আস্ত পেঁয়াজ দিন। কিছুক্ষণ ভেজে এতে টমেটো পেস্ট দিন। মাংস দিন, নেড়ে মেশান। ময়দা ও কর্নফ্লাওয়ার দিন। নেড়েচেড়ে আগে থেকে মিশিয়ে রাখা সস দিন। স্টক দিন। তেজপাতা আর থাইম দিন। একবার বলক আসার অপেক্ষা করুন। এবার ঢেকে আঁচ কমিয়ে ঘণ্টাখানেক রান্না করুন। মাঝেমধ্যে নেড়ে দিন। ৮৫ শতাংশ সেদ্ধ হলে গাজর, আলু ও মাশরুম মেশান। ১ টেবিল চামচ জেলাটিন পানিতে গুলে দিয়ে দিন। মটরশুঁটি দিন। আবার ঢেকে ৪৫ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করুন। ঢাকনা খুলে লবণ চেখে নিন। চুলা বন্ধ করুন। স্যুপ হিসেবে খাওয়া যায়, আবার রুটি বা পরোটা দিয়েও ভালো লাগে এই স্টু।
আরও পড়ুনমাটন ভিন্দালুর রেসিপি২২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে
সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।
এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।
এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’
আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।