মদুনাঘাটে রকেট হামলা, তুমুল যুদ্ধ
Published: 13th, March 2025 GMT
রাতে আবদুল মান্নানসহ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রওনা হলেন তাঁদের লক্ষ্যস্থল অভিমুখে।
সবার আগে একজন পথপ্রদর্শক। তাঁর পেছনে দলনেতা ও আবদুল মান্নান। তাঁদের পেছনে সহযোদ্ধারা। তাঁদের কাছে ভারী অস্ত্র মাত্র দুটি। একটি আরএল (রকেট লঞ্চার) ও একটি এলএমজি। অন্যান্য অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে এসএমজি, স্টেনগান, রাইফেল এবং কয়েকটি হ্যান্ড গ্রেনেড।
সেদিন তাঁরা মদুনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্রে (সাবস্টেশন) আক্রমণ করেন। চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত মদুনাঘাট। সাবস্টেশনের অবস্থান চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের উত্তর পাশে এবং হালদা নদীর পশ্চিম পাশে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ছিল পাকিস্তানি সেনা ও কিছু রাজাকার। সব মিলিয়ে তাদের সংখ্যা ৩০-৩৫। সাবস্টেশনের চারদিকে ছিল বাংকার।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক অবস্থান ছিল মদুনাঘাটের অদূরেই। এর আগে তাঁরা বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় রেকি করেন। নির্ধারিত দিন মধ্যরাতে তাঁরা কেন্দ্রের ৫০-৬০ গজ দূরে অবস্থান নেন। রাত যখন তিনটা, তখন তাঁরা আরএল দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়েকটি রকেট ছোড়েন। নির্ভুল নিশানায় সেগুলো আঘাত হানে। তিনটি ট্রান্সফরমারে আগুন ধরে যায়।
পাকিস্তানি সেনারা সজাগই ছিল। সঙ্গে সঙ্গে তারা পাল্টা আক্রমণ চালায়। চারদিকের বাংকার থেকে তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ শুরু করে। বীর মুক্তিযোদ্ধারাও জোর আক্রমণ চালান। গুলির খই ফোটে বিদ্যুৎকেন্দ্রে। আবদুল মান্নান ও তাঁর সহযোদ্ধারা সাহসের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ মোকাবিলা করে চলেন।
তুমুল যুদ্ধের একপর্যায়ে আবদুল মান্নান হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর বুকে কয়েকটি গুলি লাগে। শহীদ হন তিনি। সেদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে তিনি শহীদ ও দলনেতা সুলতান মাহমুদসহ (বীর উত্তম) তিন-চারজন আহত হন। এ ঘটনা ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবরের।
মদুনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংসের অপারেশন ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিরাট এক সাফল্য। এই অপারেশনের খবর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রসহ বিদেশি বেতার ও সংবাদপত্রে ব্যাপক প্রচার পায়। অবশ্য এই সাফল্য ছিনিয়ে আনতে গিয়ে আবদুল মান্নান শহীদ হন।
আবদুল মান্নান পুলিশে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন চট্টগ্রামে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে যান। পরে যুদ্ধ করেন ১ নম্বর সেক্টরের ঋষিমুখ সাবসেক্টরে। বিভিন্ন জায়গায় সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। বেশির ভাগ যুদ্ধ বা অপারেশনেই তিনি পুরোভাগে থাকতেন।
# আবদুল মান্নান, বীর বিক্রম
গ্রাম: নোয়াগাঁও, ইউনিয়ন শ্যামগ্রাম, উপজেলা নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বাবা আবদুল লতিফ, মা রাবেয়া খাতুন। অবিবাহিত। খেতাবের সনদ নম্বর ১৩৬। শহীদ হন ৬ অক্টোবর ১৯৭১।
সূত্র: একাত্তরের বীর যোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা। দ্বিতীয় খণ্ড। প্রথমা প্রকাশন। (প্রকাশ: মার্চ, ২০১৩)।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ন ন ন মদ ন ঘ ট
এছাড়াও পড়ুন:
২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, ঢাকার প্রার্থী যারা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরো পড়ুন:
ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করবেন মির্জা আব্বাস
যে আসন থেকে লড়বেন তারেক রহমান
তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসন এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে নির্বাচন করবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সালাহউদ্দিন আহমদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কক্সবাজার-১ আসন থেকে। এছাড়া, নোয়াখালী-৩ থেকে বরকতউল্লা বুলু, লক্ষ্মীপুর-৩ থেকে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও টাঙ্গাইল-২ থেকে আবদুস সালাম পিন্টু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ঢাকার প্রার্থী যারা
ঢাকা-১ আসনে খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-২ আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা-৩ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা-৪ তানভীর আহমেদ রবিন, ঢাকা-৫ নবী উল্লাহ নবী, ঢাকা-৬ ইশরাক হোসেন, ঢাকা-৮ মির্জা আব্বাস, ঢাকা-১১ এম এ কাইয়ুম, ঢাকা-১২ সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা-১৪ সানজিদা ইসলাম তুলি, ঢাকা-১৫ শফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা-১৬ আমিনুল হক এবং ঢাকা-১৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
ঢাকা-৭, ৯, ১০, ১৩, ১৭, ১৮ ও ২০ আসনের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ