সমকাল: আপনাদের ক্রেডিট কার্ড সেবা সম্পর্কে জানতে চাই। 

তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড সেবা প্রদান করে থাকে, যা গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদা ও জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই। বর্তমানে আমরা আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ও ভিসা– এই দুটি নেটওয়ার্কের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছি। বাংলাদেশে আমেরিকান এক্সপ্রেসের একমাত্র লাইসেন্সধারী ব্যাংক হওয়ার কারণে অ্যামেক্স কার্ডে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাই আমাদের ক্রেডিট কার্ড প্রডাক্ট লাইনে অ্যামেক্স কার্ডের সংখ্যাই বেশি। অ্যামেক্স নেটওয়ার্কে মূলত দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যায়– করপোরেট ও কনজ্যুমার ক্রেডিট কার্ড। অ্যামেক্স কনজ্যুমার ক্রেডিট কার্ড আবার দুই ভাগে বিভক্ত। এন্টারপ্রাইজ লাইন কার্ড ও ব্লু বক্স লাইন কার্ড। অন্যদিকে আমাদের ভিসা নেটওয়ার্কে দুই ধরনের কনজ্যুমার কার্ড রয়েছে, ভিসা ইনফিনিট ও ভিসা প্লাটিনাম কার্ড। আমাদের প্রতিটি ক্রেডিট কার্ডের ভ্যালু প্রপোজিশন ও সেবার মান বাজারের সেরা, যার কারণে আমাদের গ্রাহক সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি।

সমকাল: রমজান ও ঈদ উপলক্ষে আপনাদের কার্ডে কী ধরনের অফার রয়েছে?

তৌহিদুল আলম: এই রমজান ও ঈদ উপলক্ষে গ্রোসারি ও নতুন জামা-কাপড়সহ সব ধরনের কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ডধারীদের জন্য নানা অফার নিয়ে এসেছি আমরা। আর এই ঈদে অফারগুলো শুধু ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ না রেখে সারাদেশেই বিস্তৃত করেছি, যার মধ্যে রয়েছে পাঁচ শতাধিক মার্চেন্ট ও ৩ হাজার ৩০০-এর বেশি আউটলেট। এই ঈদ ক্যাম্পেইনে আমরা যে অফারগুলো দিচ্ছি তা হলো–দেশের শীর্ষস্থানীয় লাইফস্টাইল ও গ্রোসারি আউটলেটে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক, ৪৫০টিরও বেশি রিটেইল স্টোরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, যা সারাদেশে বিস্তৃত, ১০০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, বিভিন্ন জনপ্রিয় অনলাইন মার্চেন্ট ও ফুড ডেলিভারিতে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, ৪০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে ইফতার ও ডিনার অফার ইত্যাদি।  

সমকাল: ক্রেডিট কার্ডের সুদহার সাধারণ ঋণের চেয়ে বেশি। সুদহার কমলে কী ব্যবহার আরও বাড়বে?

তৌহিদুল আলম: ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বিবেচ্য বিষয়গুলো হলো–  ভ্যালু প্রপোজিশন, সেবার মান, ক্রেডিট লিমিট, বার্ষিক ফি, প্রয়োজনীয়তা, নিরাপত্তা, টাচপয়েন্টের সংখ্যা ইত্যাদি। সুদের হারও একটি নিয়ামক। তবে সুদের হার বেশি বা কম এটা চিন্তা করে খুব কম মানুষই ক্রেডিট কার্ড নিয়ে থাকে। কেননা, ক্রেডিট কার্ডে সুদের প্রয়োগ হয় পেমেন্ট ডিউ ডেটের পর থেকে। যদি কোনো বকেয়া অপরিশোধিত থাকে তাহলে। নির্ধারিত সময়ের আগে পেমেন্ট করে দিলে কোনো সুদ দিতে হয় না। আমাদের মোট গ্রাহকের ৬০ শতাংশের  বেশি নির্ধারিত সময়ের আগেই বকেয়া পরিশোধ করে ফেলেন। ফলে তাদের আর সুদ দিতে হয় না। ক্রেডিট কার্ডে এই মুহূর্তে আমাদের বিলিংয়ে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। যদিও নতুন সুদহার বাস্তবায়ন করা হয়েছে গত জানুয়ারি থেকে। সুতরাং সুদের হার বাড়ার সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডে খরচ বাড়ানো বা কমানোর সরাসরি কোনো সম্পর্ক প্রমাণ করা যায় না।

সমকাল: কার্ড ব্যবহার উৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ আশা করেন? 

তৌহিদুল আলম: আমাদের প্রত্যাশা হলো, সাধারণ ঋণের মতো ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড লিমিটের ক্ষেত্রে যেন আয়কর রিটার্ন জমাদানের বাধ্যবাধকতা না রাখা হয়। আর একইভাবে আনসিকিউরড ক্রেডিট কার্ডের লিমিট যেন ১০ লাখ থেকে ২০ লাখে উন্নীত করা হয়। নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য ক্রেডিট কার্ড প্রদানের নীতিমালা আরও সহজ করা দরকার, যাতে  বাজারে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা এক কোটিতে পোঁছানো যায়। এ ছাড়া করপোরেট ক্রেডিট কার্ডের জন্যও আমরা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আশা করি।

সমকাল: ডিজিটাল লেনদেন অর্থনীতিতে কীভাবে অবদান রাখছে?

তৌহিদুল আলম: ডিজিটাল লেনদেন স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি হ্রাস, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি, সময় ও খরচ সাশ্রয় করে। পাশাপাশি তহবিল তছরুপের আশঙ্কা কমিয়ে অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখে। এর ফলে অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়ে, যা সামগ্রিকভাবে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গঠনে সহায়তা করে।

সমকাল: কার্ডের ব্যবহার আরও বাড়াতে আপনাদের পরিকল্পনা জানতে চাই। 

তৌহিদুল আলম: কার্ডের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বছরজুড়ে ক্যাশব্যাক, স্পেন্ডিং ক্যাম্পেইন ও আকর্ষণীয় গিফট ভাউচার অফার, নির্দিষ্ট ক্যাটেগরিতে অতিরিক্ত মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং বিভিন্ন পার্টনারশিপের মাধ্যমে বিশেষ সেভিংস ও ডাইনিং অফার চালু রাখি। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহজ ব্যবহার, গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধি, উন্নত গ্রাহকসেবা, লেনদেনের নিরাপত্তা জোরদার এবং ভ্যালু প্রপোজিশন রিভিউ করার মতো পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত হ দ ল আলম ব যবহ র ধরন র ক আম দ র সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

একঝলক (৩ নভেম্বর ২০২৫)

ছবি: আবদুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ