সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে সেবার মান বাজারের সেরা
Published: 13th, March 2025 GMT
সমকাল: আপনাদের ক্রেডিট কার্ড সেবা সম্পর্কে জানতে চাই।
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড সেবা প্রদান করে থাকে, যা গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদা ও জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই। বর্তমানে আমরা আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ও ভিসা– এই দুটি নেটওয়ার্কের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছি। বাংলাদেশে আমেরিকান এক্সপ্রেসের একমাত্র লাইসেন্সধারী ব্যাংক হওয়ার কারণে অ্যামেক্স কার্ডে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাই আমাদের ক্রেডিট কার্ড প্রডাক্ট লাইনে অ্যামেক্স কার্ডের সংখ্যাই বেশি। অ্যামেক্স নেটওয়ার্কে মূলত দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যায়– করপোরেট ও কনজ্যুমার ক্রেডিট কার্ড। অ্যামেক্স কনজ্যুমার ক্রেডিট কার্ড আবার দুই ভাগে বিভক্ত। এন্টারপ্রাইজ লাইন কার্ড ও ব্লু বক্স লাইন কার্ড। অন্যদিকে আমাদের ভিসা নেটওয়ার্কে দুই ধরনের কনজ্যুমার কার্ড রয়েছে, ভিসা ইনফিনিট ও ভিসা প্লাটিনাম কার্ড। আমাদের প্রতিটি ক্রেডিট কার্ডের ভ্যালু প্রপোজিশন ও সেবার মান বাজারের সেরা, যার কারণে আমাদের গ্রাহক সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি।
সমকাল: রমজান ও ঈদ উপলক্ষে আপনাদের কার্ডে কী ধরনের অফার রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: এই রমজান ও ঈদ উপলক্ষে গ্রোসারি ও নতুন জামা-কাপড়সহ সব ধরনের কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ডধারীদের জন্য নানা অফার নিয়ে এসেছি আমরা। আর এই ঈদে অফারগুলো শুধু ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ না রেখে সারাদেশেই বিস্তৃত করেছি, যার মধ্যে রয়েছে পাঁচ শতাধিক মার্চেন্ট ও ৩ হাজার ৩০০-এর বেশি আউটলেট। এই ঈদ ক্যাম্পেইনে আমরা যে অফারগুলো দিচ্ছি তা হলো–দেশের শীর্ষস্থানীয় লাইফস্টাইল ও গ্রোসারি আউটলেটে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক, ৪৫০টিরও বেশি রিটেইল স্টোরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, যা সারাদেশে বিস্তৃত, ১০০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, বিভিন্ন জনপ্রিয় অনলাইন মার্চেন্ট ও ফুড ডেলিভারিতে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, ৪০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে ইফতার ও ডিনার অফার ইত্যাদি।
সমকাল: ক্রেডিট কার্ডের সুদহার সাধারণ ঋণের চেয়ে বেশি। সুদহার কমলে কী ব্যবহার আরও বাড়বে?
তৌহিদুল আলম: ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বিবেচ্য বিষয়গুলো হলো– ভ্যালু প্রপোজিশন, সেবার মান, ক্রেডিট লিমিট, বার্ষিক ফি, প্রয়োজনীয়তা, নিরাপত্তা, টাচপয়েন্টের সংখ্যা ইত্যাদি। সুদের হারও একটি নিয়ামক। তবে সুদের হার বেশি বা কম এটা চিন্তা করে খুব কম মানুষই ক্রেডিট কার্ড নিয়ে থাকে। কেননা, ক্রেডিট কার্ডে সুদের প্রয়োগ হয় পেমেন্ট ডিউ ডেটের পর থেকে। যদি কোনো বকেয়া অপরিশোধিত থাকে তাহলে। নির্ধারিত সময়ের আগে পেমেন্ট করে দিলে কোনো সুদ দিতে হয় না। আমাদের মোট গ্রাহকের ৬০ শতাংশের বেশি নির্ধারিত সময়ের আগেই বকেয়া পরিশোধ করে ফেলেন। ফলে তাদের আর সুদ দিতে হয় না। ক্রেডিট কার্ডে এই মুহূর্তে আমাদের বিলিংয়ে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। যদিও নতুন সুদহার বাস্তবায়ন করা হয়েছে গত জানুয়ারি থেকে। সুতরাং সুদের হার বাড়ার সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডে খরচ বাড়ানো বা কমানোর সরাসরি কোনো সম্পর্ক প্রমাণ করা যায় না।
সমকাল: কার্ড ব্যবহার উৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ আশা করেন?
তৌহিদুল আলম: আমাদের প্রত্যাশা হলো, সাধারণ ঋণের মতো ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড লিমিটের ক্ষেত্রে যেন আয়কর রিটার্ন জমাদানের বাধ্যবাধকতা না রাখা হয়। আর একইভাবে আনসিকিউরড ক্রেডিট কার্ডের লিমিট যেন ১০ লাখ থেকে ২০ লাখে উন্নীত করা হয়। নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য ক্রেডিট কার্ড প্রদানের নীতিমালা আরও সহজ করা দরকার, যাতে বাজারে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা এক কোটিতে পোঁছানো যায়। এ ছাড়া করপোরেট ক্রেডিট কার্ডের জন্যও আমরা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আশা করি।
সমকাল: ডিজিটাল লেনদেন অর্থনীতিতে কীভাবে অবদান রাখছে?
তৌহিদুল আলম: ডিজিটাল লেনদেন স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি হ্রাস, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি, সময় ও খরচ সাশ্রয় করে। পাশাপাশি তহবিল তছরুপের আশঙ্কা কমিয়ে অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখে। এর ফলে অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়ে, যা সামগ্রিকভাবে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গঠনে সহায়তা করে।
সমকাল: কার্ডের ব্যবহার আরও বাড়াতে আপনাদের পরিকল্পনা জানতে চাই।
তৌহিদুল আলম: কার্ডের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বছরজুড়ে ক্যাশব্যাক, স্পেন্ডিং ক্যাম্পেইন ও আকর্ষণীয় গিফট ভাউচার অফার, নির্দিষ্ট ক্যাটেগরিতে অতিরিক্ত মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং বিভিন্ন পার্টনারশিপের মাধ্যমে বিশেষ সেভিংস ও ডাইনিং অফার চালু রাখি। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহজ ব্যবহার, গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধি, উন্নত গ্রাহকসেবা, লেনদেনের নিরাপত্তা জোরদার এবং ভ্যালু প্রপোজিশন রিভিউ করার মতো পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত হ দ ল আলম ব যবহ র ধরন র ক আম দ র সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫