১৯৬০-এর দশক থেকে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব। এই বন্ধুত্বে কোনো দিন চিড় ধরেনি। আমরা একসঙ্গে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। তাঁর চলে যাওয়ার পর আমি দুর্বল হয়ে গেলাম।

আমরা সহপাঠী ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে একসঙ্গে আমরা স্নাতকোত্তর করেছি। ছাত্র হিসেবেও তিনি ভালো ছিলেন। প্রথম শ্রেণি না পেলেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। মানুষ হিসেবেও ছিলেন অসাধারণ।

ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি একজন অনন্য মানুষ। কখনো আইনের ব্যত্যয় ঘটাননি। আইনকানুনের মধ্যে থেকে সহৃদয়তা ও আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ফলে তিনি সহকর্মীদের সর্বোচ্চ সহায়তা ও সুফল পেয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের ছাত্র ছিলেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। সেই কক্ষে যে দুজন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সঙ্গে ছিলেন, আজীবন তাঁদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল; এমনকি মঞ্জুর সব সময় তাঁদের বিপদ–আপদে পাশে দাঁড়াতেন।

তিনি রুপার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁর বাবা ছিলেন প্রধান বিচারপতি। যেখানে আমরা ছিলাম মধ্যবিত্ত পরিবারের কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বে কখনো ভেদাভেদ ছিল না। পারিবারিকভাবেও আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ ছিল না।

মঞ্জুর এলাহী শুধু মুনাফার জন্য ব্যবসা করেননি। জাতির কল্যাণ ও জনগণের উন্নয়নে তিনি সব সময় নজর দিয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা কখনো মানের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ছাড় দিইনি।

সর্বশেষ দিন বিশেক আগে তাঁর সঙ্গে কথা হয় আমার। তখন শরীর অত্যন্ত দুর্বল ছিল, যদিও মনোবল ছিল অটুট। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি সেই মনোবল ধরে রেখেছিলেন।

মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক

‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’

আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।

এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।

বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?