ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত প্রলয় গ্যাং সদস্যের হাতে নির্যাতনের শিকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলভী আরসালানই উল্টো সেই গ্যাং সদস্যদের করা মামলায় আসামি।

এছাড়া ওই ছাত্রের মা এবং তার বান্ধবীকেও আসামি করা হয়েছে। বর্তমানে তার মা কারাগারে এবং তিনি ও তার বান্ধবী গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আলভী আরসালন এবং তার পিতা অধ্যাপক ডা.

মীর মোশাররফ হোসেন। তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের প্রধান।

আরো পড়ুন:

আছিয়ার মৃত্যুতে ঢাবি সাদা দলের শোক

ঢাবির এএফআর হলে নিম্নমানের ইফতার পরিবেশনের অভিযোগ

২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্রলীগ কর্মীদের তৈরি কথিত প্রলয় গ্যাংয়ের হাতে নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষার্থী মীর আলভী আরসালান। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসালটেন্ট ডা. রেহানা আক্তার। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আসামিদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া ঢাবি কর্তৃপক্ষ কয়েকজন অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে।

চলতি বছর গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব ওই ঘটনায় উল্টো ডা. রেহেনা, তার সন্তান আলভী এবং সেদিন আলভীর সঙ্গে থাকা এক বান্ধবীর নামে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে আছেন ঢাবির দুই শিক্ষার্থী জুবায়ের ইবনে হুমায়ুন এবং তাহমিদ ইকবাল মিরাজ। তারা তিনজনই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মায়ের করা মামলায় আসামি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, প্রলয় গ্যাং সদস্যদের সেই মামলায় ডা. রেহেনাকে গ্রেপ্তার করে কয়েকদিনের মধ্যে আরো কয়েকটি মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে ডা. রেহেনা কারাগারে আছেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীর পিতা ডা. মীর মোশাররফ বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে আমার দুই ছেলে সম্মুখযোদ্ধা ছিল। ছোট ছেলে পুলিশের ছররা গুলিতে আহতও হয়েছে। আমি আমার ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছি।”

তিনি বলেন, “গত ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমার ছেলে তার এক বান্ধবীকে নিয়ে বসে থাকার অপরাধে ছাত্রলীগের কথিত প্রলয় গ্যাং সদস্যদের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়। এ ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে মামলা করলে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত বছরের অক্টোবরে হঠাৎ করে আমাদের অবগত করা ছাড়াই মামলার আসামিরা জামিন পেয়ে যায়। এরপর আমরা আপিল করি।”

তিনি আরো বলেন, “এই আপিল করার অপরাধে আসামিরা আমার স্ত্রী, সন্তান এবং তার বান্ধবীর নামে মামলা দেয়। অথচ সেদিন তারা ছিল ৯-১০জন। আর বিপরীতে ছিল শুধু আমার ছেলে ও তার বান্ধবী। তারাই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে। এখন তাদের মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে। আর পুলিশও কোন তদন্ত ছাড়াই মামলা গ্রহণ করেছে।”

ডা. মীর মোশাররফ বলেন, “গত ৪ ফেব্রুয়ারি চেম্বার থেকে আমার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। আর আমার ছেলে এবং তার বান্ধবিকে খুঁজতে বাসায় যায় পুলিশ। এখন তারা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাসায়ও থাকতে পারছে না। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আমার স্ত্রীকে কোর্টে তোলা হলে আদালাত জামিন দেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৪ আগস্ট গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় করা মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে গ্রেপ্তার দেখায়।”

ডা. মীর মোশাররফ আরো বলেন, “এর কয়েকদিন পর বংশাল থানায় করা ৫ আগস্টের আরেকটি হত্যা মামলায়ও অজ্ঞাতনামা হিসেবে আমার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখায়। অথচ গত ২৮ জুলাই থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত আমার স্ত্রী হাসপাতালের সিঁড়ি থেকে পড়ে পা ভেঙে বাসায় বেডরেস্টে ছিল। যার সত্যতা নিশ্চিত করে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ আমার স্ত্রীর অর্জিত ছুটি মঞ্জুর করেছে।

“এছাড়া ৪ আগস্ট গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি এই ঘটনায় ১৪৪ ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে। সেই তালিকায়ও আমার স্ত্রীর নাম নেই। সে ২০২১ সালে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য উপকমিটির সদস্য হওয়ার অপরাধে এই মিথ্যা মামালাগুলো দিয়েছে। বর্তমানে সে কোনো উপকমিটির সদস্যও না,” যুক্ত করেন মোশাররফ।

তিনি বলেন, “এই আন্দোলনের পুরোটা সময় সে আওয়ামী লীগের কোন সভা সমাবেশে পর্যন্ত অংশ নেয়নি। বরং আন্দোলন চলাকালে সন্তানদের গ্রাফিতি আঁকাসহ বিভিন্ন কাজে অর্থ সহায়তা দিয়েছে, কখনো আন্দোলনে যেতে বাধা দেয়নি। যে কথাটা সন্তানরা ৩ আগস্ট যমুনা টিভির এক সাক্ষাৎকারে বলেছেও। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকাও দিয়েছে আন্দোলনকারীদের পানি খাওয়াতে।”

তিনি আরো বলেন, “জুলাই আন্দোলনই মানুষকে মাপার একমাত্র টেস্ট। সেই আন্দোলনে আমাদের পরিবার অংশগ্রহণ করেও আজ মিথ্যা মামলায় আমার স্ত্রীকে জেল খাটতে হচ্ছে আর সন্তানকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুবই হতাশার বিষয়।”

ভুক্তভোগী আলভী আরসালান বলেন, “বইয়ে পড়েছি, ১৯৭১ সালে মায়েরা নাকি ছেলেদের মাথায় পতাকা বেঁধে যুদ্ধে পাঠাতো। সেটি আমি অনুভব করেছে এ জুলাই অভ্যুত্থানে। আমার আম্মুর পা ভাঙা থাকায় নিজে আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করতে পারলেও নিজের দুই ছেলেকে মাঠে নামিয়েছে।”

তিনি বলেন, “এখন আমার মা জেলে, আমরা ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়। আমাদের আন্দোলন ছিল ন্যায়বিচারের জন্য। অথচ এখন আমরাই অন্যায়ের শিকার হচ্ছি।”

সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী ও যুগ্ম সদস্য সচিব মাহবুবুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

ওমর ফারুক বলেন, “জুলাই আন্দোলনের বিরুদ্ধে উনারা ছিলেন না। উনি, ওনার স্বামী ও ছেলে এ আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন। এভাবে হয়রানি মামলা দেওয়ার পিছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা খতিয়ে দেখা উচিত। পুলিশকে বলবো, আপনারা মামলা দেবেন পর্যাপ্ত তদন্ত ও প্রমাণ সংগ্রহ করে। ছবি থাকলেই মামলা দেওয়া তো ফ্যাসিস্ট আমলে চরিত্র।”

অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মায়ের করা মামলার আসামি এবং পাল্টা মামলার বাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, “এই অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের করা মামলাটাই সত্য। ডা. রেহেনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। সে সময় পুলিশ আমাদের কোনো কথা শুনেনি। তাই আমরা এখন মামলা করেছি।”

ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “হলে থাকতে হলে সবাইকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়েছে। সেভাবেই আমরা ছিলাম।”

মামলার বিষয়ে জানতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুরকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রাইজিংবিডিকে বলেছিলেন, “যাদের আসামি কথা হয়েছে, সেই মা ও ছেলে ফ্যাসিস্টের দোসর।”

এ সময় তিনি এই সংবাদদাতার হোয়াটসঅ্যাপে ডা. রেহেনার সঙ্গে আওয়ামীলীগের কয়েকজন এমপি মন্ত্রীর গ্রুপ ছবি পাঠান এবং ছেলে আলভীর একটি স্ক্রিনশট পাঠান। সেখানে দেখা যায় আলভী একজন মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এ কয়েকটি ছবি ২০২৪ সালের শুরুর দিকের ও তার আগের বছরের।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর আম র স ত র ক ম র ম শ ররফ আম র ছ ল আম দ র সদস য আগস ট আরস ল তদন ত ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ