আজও প্রাপ্যটুকু পেল না নরিয়ার গণসমাধিস্থল
Published: 15th, March 2025 GMT
স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এক ঐতিহাসিক নিদর্শন মৌলভীবাজার জেলার নরিয়ার গণসমাধিস্থল। এই গণসমাধিস্থলে শায়িত শহীদদের স্মরণে আজও স্থাপন করা হয়নি একটি স্মৃতিসৌধ।
পূর্বে ধলিয়া বিল, পশ্চিমে বিস্তীর্ণ বড়হাওর। তার মধ্যখানে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাগাবলা ইউনিয়নের সবুজে আচ্ছাদিত নরিয়া গ্রামের অবস্থান। এখন ওই গ্রামটিকে দুই ভাগ করে বয়ে গেছে সরকার বাজার-কাগাবলা সড়ক। কৃষিনির্ভর এ জনপদের মানুষের কাছে ১৯৭১ সালের ৯ মে একটি বিভীষিকাময় দিন। এদিন দুপুরে স্থানীয় ২৬ জন শ্রমজীবী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
সেই হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের সমাধিস্থলটি অযত্নে পড়ে আছে কথাইখালীর (প্রকাশিত চিন্তামনি খাল) পাশে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও সেখানে নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে এক দিন হয়তো হারিয়ে যাবে শহীদদের এই গণকবরের শেষ চিহ্ন।
স্থানীয়রা জানান, সে সময় বোরো কাটা ও আউশ বোনায় কাজে ব্যস্ত ছিল নরিয়াবাসী। সেখান থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় নিরীহ কৃষক ও শ্রমিকদের। পরে কথাইখালী খালের পারে (প্রকাশিত চিন্তামনি খাল) এক টুকরো জমিতে গর্ত করে একই স্থানে সমাহিত করা হয় শহীদদের।
সেই সমাধিস্থলে নির্মাণ করা হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ। সমাধিস্থলে যাতায়াতের জন্য ভালো একটি রাস্তাও নেই। গবেষক দীপঙ্কর মোহান্ত বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীদের মধ্যে সন্ধ্যা রানী দেব বীরাঙ্গনার তালিকাভুক্ত ভাতা পাচ্ছেন। নির্যাতিত জয়ন্তী বৈদ্য ও মঙ্গলা বৈদ্য চার বছর ধরে ৮ হাজার টাকা করে চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছেন। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা গণসমাধিস্থলটি ইতিহাসের অংশ। এটি সংরক্ষণ জরুরি।
জাসদ জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল হক মুক্তিযুদ্ধে নরিয়া গ্রামবাসীর ত্যাগের ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন, কামিনী দেবের উত্তরাধিকারীরা গণসমাধিস্থলের জন্য ১৬ শতক ভূমি দান করে যান। সেই ভূমির কিছু অংশে ২০১১ সালে প্রাচীর দিয়ে সমাধিস্থল চিহ্নিত করা হয়। বাকি জমি ভূমিদস্যুদের দখলে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজউদ্দিন বলেন, সম্প্রতি এ উপজেলার দায়িত্ব নিয়েছেন। এ ব্যাপারে খোঁজ নেবেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগের নামে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না: ভিপি নুর
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নামে কোনো রাজনৈতিক দল রাজনীতি করতে পারবে না।
মঙ্গলবার বিকেলে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের চেয়ারম্যান বাজারে আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণসমাবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসঙ্গে ভিপি নুর বলেন, এই সরকার সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। এখানে বিরোধী দলের অবস্থান নেই, বরং সবাই মিলে রাষ্ট্র সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করছে। আমরা সরকারবিরোধী নই; বরং এই সরকারকে সহযোগিতা করছি।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বারবার দাবি জানিয়ে আসছি— আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী সংগঠন হিসেবে অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে, আশা করি শিগগিরই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নিষিদ্ধ হবে।
নুর বলেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার পরিবার, এমপি-মন্ত্রীরা উন্নয়নের বুলি শুনিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সাধারণ নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ফেলে তাঁরা বিদেশে রাজকীয় জীবনযাপন করছে। দেশের মানুষ এখন এসব বুঝে ফেলেছে—তাদের আর বোকা বানানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ গণঅধিকার পরিষদকে ভোট দেবে। আমরা তিনশ’ আসনে প্রার্থী দিব। শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনে প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট মাঝিকে আমরা ঘোষণা করছি।
গণসমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ফরিদপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ মুন্সী, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট মাঝি, শরীয়তপুর জেলার সাবেক সদস্য সচিব ডা. শাহজালাল সাজু প্রমুখ।