স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এক ঐতিহাসিক নিদর্শন মৌলভীবাজার জেলার নরিয়ার গণসমাধিস্থল। এই গণসমাধিস্থলে শায়িত শহীদদের স্মরণে আজও স্থাপন করা হয়নি একটি স্মৃতিসৌধ।
পূর্বে ধলিয়া বিল, পশ্চিমে বিস্তীর্ণ বড়হাওর। তার মধ্যখানে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাগাবলা ইউনিয়নের সবুজে আচ্ছাদিত নরিয়া গ্রামের অবস্থান। এখন ওই গ্রামটিকে দুই ভাগ করে বয়ে গেছে সরকার বাজার-কাগাবলা সড়ক। কৃষিনির্ভর এ জনপদের মানুষের কাছে ১৯৭১ সালের ৯ মে একটি বিভীষিকাময় দিন। এদিন দুপুরে স্থানীয় ২৬ জন শ্রমজীবী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
সেই হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের সমাধিস্থলটি অযত্নে পড়ে আছে কথাইখালীর (প্রকাশিত চিন্তামনি খাল) পাশে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও সেখানে নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে এক দিন হয়তো হারিয়ে যাবে শহীদদের এই গণকবরের শেষ চিহ্ন।
স্থানীয়রা জানান, সে সময় বোরো কাটা ও আউশ বোনায় কাজে ব্যস্ত ছিল নরিয়াবাসী। সেখান থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় নিরীহ কৃষক ও শ্রমিকদের। পরে কথাইখালী খালের পারে (প্রকাশিত চিন্তামনি খাল) এক টুকরো জমিতে গর্ত করে একই স্থানে সমাহিত করা হয় শহীদদের।
সেই সমাধিস্থলে নির্মাণ করা হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ। সমাধিস্থলে যাতায়াতের জন্য ভালো একটি রাস্তাও নেই। গবেষক দীপঙ্কর মোহান্ত বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীদের মধ্যে সন্ধ্যা রানী দেব বীরাঙ্গনার তালিকাভুক্ত ভাতা পাচ্ছেন। নির্যাতিত জয়ন্তী বৈদ্য ও মঙ্গলা বৈদ্য চার বছর ধরে ৮ হাজার টাকা করে চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছেন। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা গণসমাধিস্থলটি ইতিহাসের অংশ। এটি সংরক্ষণ জরুরি।
জাসদ জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল হক মুক্তিযুদ্ধে নরিয়া গ্রামবাসীর ত্যাগের ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন, কামিনী দেবের উত্তরাধিকারীরা গণসমাধিস্থলের জন্য ১৬ শতক ভূমি দান করে যান। সেই ভূমির কিছু অংশে ২০১১ সালে প্রাচীর দিয়ে সমাধিস্থল চিহ্নিত করা হয়। বাকি জমি ভূমিদস্যুদের দখলে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজউদ্দিন বলেন, সম্প্রতি এ উপজেলার দায়িত্ব নিয়েছেন। এ ব্যাপারে খোঁজ নেবেন তিনি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

খুলনায় মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় মনোয়ার হোসেন টগর নামে এক যুবক এবং শনিবার (২ আগস্ট) ভোরে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে আল-আমিন সিকদার নামে এক ভ্যানচালক খুন হন। 

দিঘলিয়ায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
পুলিশ জানায়, শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নন্দনপ্রতাপ গ্রামে আল-আমিন সিকদার (৩৩) নামে এক ভ্যানচালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আল-আমিন ওই গ্রামের কাওসার শিকদারের ছেলে।

দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন বলেন, “আল-আমিনের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. আসাদুল ঝিনাইদহ থেকে এসে অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর আসাদুল পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।”

ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

নগরীতে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরদিকে, শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকায় নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতে খুন হন মনোয়ার হোসেন টগর (২৫) নামে এক যুবক। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে। 

স্থানীয়রা জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক টগরের বাড়িতে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা তাকে ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এসআই আবদুল হাই বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হত্যাকারীরা টগরের পূর্ব পরিচিত।  তাদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।” 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ