স্টেশনে ভিক্ষা করলেও স্বপ্ন ব্যাংকার হওয়ার
Published: 16th, March 2025 GMT
ষোলশহর থেকে প্রতিদিন শাটলযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রেলস্টেশনে আসে ছোট্ট শিশু সুমন (৯)। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত হাত পেতে ভিক্ষা করে; আয় ১৫০-২০০ টাকা। তবে অন্যদের মতো পড়াশোনা করে সে হতে চায় ব্যাংকের ম্যানেজার!
শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন চত্বরে চায়ের আড্ডার রাইজিংবিডি ডটকমের কাছে এমনই এক স্বপ্নের কথা জানায় সুমন।
সুমনের বাড়ি চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায়। একমাত্র ছোটভাই আর তার মা মিলে তিনজনের পরিবার। বাবা মারা যান কয়েক বছর আগে। এরপরই পরিবারের বেহাল দশা। এখন তার মা বুয়ার কাজ করেন। আর সুমন ভিক্ষা করে যা পায়- তা দিয়ে কোনো মতে চলছে তাদের পরিবার।
আরো পড়ুন:
চবির বি ইউনিটে পাসের হার ২০ শতাংশ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)
মূল সনদ নিলে সমাবর্তনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই
শিক্ষার্থীসহ যে কেউ বন্ধুসহ স্টেশন চত্বরে বসলেই সে সহাস্যে হাত পাতে, তার প্রয়োজন কিছু টাকা। এভাবেই স্টেশন ঘুরেঘুরে টাকা তোলেন সে। অনেকে তার চাওয়া পূরণ করেন, আবার অনেকে করেন না।
স্কুলে না গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির কারণ জানতে চাইলে সুমন জানায়, মানুষের কাছে হাত পাততে তার অনেক লজ্জা লাগে, তবুও সে চায়। প্রতিদিন বিকেলে শাটল দিয়ে এখানে আসে, রাত ৯টায় আবার শাটল দিয়ে চলে যায়। এ সময়ে চবি শিক্ষার্থীদের কাছে হাত পেতে তার প্রতিদিন আয় হয় প্রায় ১৫০ টাকা।
“তবে আজ (শনিবার) তার আয় হয়েছে ২০০ টাকা। আমি এ টাকাগুলো মাকে দিই। মা চাল-ডাল কেনেন,”-যুক্ত করে সুমন।
সুমন বলে, “পড়াশোনা করতে আমার অনেক ইচ্ছা আছে। পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে ব্যাংকের ম্যানেজার হতে চাই। কিন্তু আমার তো সামর্থ্য নেই। কেউ যদি আমার পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেয়, আমি পড়বো।”
এদিকে, সুমনের বিষয়ে কথা হয় ‘এক টাকায় শিক্ষা’ ফাউন্ডেশনের চবির ভলেন্টিয়ার শিক্ষক ও ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সানু আক্তার নদীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, “সুমনের সঙ্গে আমার এ মাসের ১২ তারিখে পরিচয় হলো। এখন তার সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হয়। বর্তমানে ক্লাসরুম বন্ধ আছে। ঈদের পর থেকে সে ক্লাসে নিয়মিত আসবে আশা করি।”
সংগঠনটি সম্পর্কে তিনি জানান, “এক টাকায় শিক্ষা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। অর্থের অভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তের শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা।”
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন সময়সূচি আগামী ১০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি এখন সকাল সোয়া ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে এ ট্রেন চলাচল করবে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।
আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি কক্সবাজার স্টেশন ছাড়বে সকাল ১০টায়। এখন এ ট্রেন ছাড়ে ১০টা ২০ মিনিটে। গত মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেসের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান।
রেলওয়ের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদা ও সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনার জন্য কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামমুখী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এখন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করে আরও দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন।
কক্সবাজার রেললাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর। প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে চলাচল শুরু করে পর্যটক এক্সপ্রেস। এটাও দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেন। এরপর ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের কথা বলে গত বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। গত বছরের ১২ জুন থেকে আবার চালু হয় ট্রেন। আর নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে থামবে।
আর প্রবাল এক্সপ্রেস যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।