ষোলশহর থেকে প্রতিদিন শাটলযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রেলস্টেশনে আসে ছোট্ট শিশু সুমন (৯)। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত হাত পেতে ভিক্ষা করে; আয় ১৫০-২০০ টাকা। তবে অন্যদের মতো পড়াশোনা করে সে হতে চায় ব্যাংকের ম্যানেজার!

শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন চত্বরে চায়ের আড্ডার রাইজিংবিডি ডটকমের কাছে এমনই এক স্বপ্নের কথা জানায় সুমন।

সুমনের বাড়ি চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায়। একমাত্র ছোটভাই আর তার মা মিলে তিনজনের পরিবার। বাবা মারা যান কয়েক বছর আগে। এরপরই পরিবারের বেহাল দশা। এখন তার মা বুয়ার কাজ করেন। আর সুমন ভিক্ষা করে যা পায়- তা দিয়ে কোনো মতে চলছে তাদের পরিবার।

আরো পড়ুন:

চবির বি ইউনিটে পাসের হার ২০ শতাংশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)
মূল সনদ নিলে সমাবর্তনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই

শিক্ষার্থীসহ যে কেউ বন্ধুসহ স্টেশন চত্বরে বসলেই সে সহাস্যে হাত পাতে, তার প্রয়োজন কিছু টাকা। এভাবেই স্টেশন ঘুরেঘুরে টাকা তোলেন সে। অনেকে তার চাওয়া পূরণ করেন, আবার অনেকে করেন না। 
স্কুলে না গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির কারণ জানতে চাইলে সুমন জানায়, মানুষের কাছে হাত পাততে তার অনেক লজ্জা লাগে, তবুও সে চায়। প্রতিদিন বিকেলে শাটল দিয়ে এখানে আসে, রাত ৯টায় আবার শাটল দিয়ে চলে যায়। এ সময়ে চবি শিক্ষার্থীদের কাছে হাত পেতে তার প্রতিদিন আয় হয় প্রায় ১৫০ টাকা।

“তবে আজ (শনিবার) তার আয় হয়েছে ২০০ টাকা। আমি এ টাকাগুলো মাকে দিই। মা চাল-ডাল কেনেন,”-যুক্ত করে সুমন।

সুমন বলে, “পড়াশোনা করতে আমার অনেক ইচ্ছা আছে। পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে ব্যাংকের ম্যানেজার হতে চাই। কিন্তু আমার তো সামর্থ্য নেই। কেউ যদি আমার পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেয়, আমি পড়বো।”

এদিকে, সুমনের বিষয়ে কথা হয় ‘এক টাকায় শিক্ষা’ ফাউন্ডেশনের চবির ভলেন্টিয়ার শিক্ষক ও ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সানু আক্তার নদীর সঙ্গে।

তিনি বলেন, “সুমনের সঙ্গে আমার এ মাসের ১২ তারিখে পরিচয় হলো। এখন তার সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হয়। বর্তমানে ক্লাসরুম বন্ধ আছে। ঈদের পর থেকে সে ক্লাসে নিয়মিত আসবে আশা করি।”

সংগঠনটি সম্পর্কে তিনি জানান, “এক টাকায় শিক্ষা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। অর্থের অভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর  উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তের শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা।”

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩ 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় মঞ্জু টেক্সটাইলে এন্ড ডাইং কারখানায় গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে কারখানার দুই নিরাপত্তাকর্মীসহ তিন জন দগ্ধ হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুল হান্নান, গার্ড কবির হোসেন ও সিনিয়র অফিসার সাইফুল ইসলাম।

কারখানার সুপারভাইজার মিজানুর জানান, নাইট ডিউটি শেষে সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা চলে যাওয়ার ঠিক পরপরই তিতাস গ্যাস সংযোগের আরএমএস রুমে গ্যাসের অতিরিক্ত চাপে বিকট শব্দে একটি দেয়াল ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীসহ তিনজন দগ্ধ হন। বিস্ফোরণ ও আগুনের তীব্রতায় আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ, সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক

মাইক্রোবাসে বিস্ফোরণ, অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ৫ ছাত্রনেতা

তিনি জানান, কারখানায় দায়িত্বে থাকা টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত গ্যাসের চাবি বন্ধ করে নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দগ্ধ তিনজনকে দ্রুত রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। আগুনে কারখানার কিছু কাপড় ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ইউনিট সেখানে যায়। তবে তার আগেই কারখানার লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। বিস্ফোরণ ও আগুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি তিনজন দগ্ধ হয়েছেন এবং তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/অনিক/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ