আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির (ছায়াপথের) কেন্দ্রীয় আণবিক অঞ্চল থেকে আসা রহস্যময় এক সংকেত শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এখন সেই সংকেতের পেছনে থাকা শক্তির উৎস জানতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের ধারণা, ডার্ক ম্যাটারের সঙ্গে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে সংঘটিত কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে এই রহস্যময় শক্তি উৎপন্ন হতে পারে।

মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা রহস্যময় শক্তির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানী শ্যাম বালাজি বলেন, ‘আমাদের গ্যালাক্সির কেন্দ্রে পজিটিভ চার্জযুক্ত হাইড্রোজেনের বিশাল মেঘ অবস্থান করছেন। বিজ্ঞানীরা কয়েক দশক ধরে এসব রহস্যের কারণ অনুসন্ধান করছেন। সাধারণত গ্যাস নিরপেক্ষ হয়; সেখানে এসব গ্যাসের ইলেকট্রন কোনোভাবে নেগেটিভ চার্জে পরিণত হওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তি গ্রহণ করছে। আমাদের গ্যালাক্সির এই অংশ থেকে বিকিরণকারী শক্তির চিহ্ন সেখানে থাকা কোনো উৎস থেকে আসছে।’

আরও পড়ুনছায়াপথে রহস্যময় বস্তুর সন্ধান, চিন্তায় বিজ্ঞানীরা২০ জুন ২০২৪

দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশে থাকা ডার্ক ম্যাটারের রহস্য জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। অনেকের ধারণা, মিল্কিওয়ের কেন্দ্রীয় আণবিক অঞ্চলেই ডার্ক ম্যাটারের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। কারণ, ডার্ক ম্যাটারের মাধ্যমে তৈরি পদার্থ আলোর সঙ্গে কোনো মিথস্ক্রিয়া করে না।

মহাকর্ষীয় প্রভাবের মাধ্যমে ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতি এখনো শনাক্ত করা যায়নি। আর তাই এবার বিজ্ঞানীরা অধরা এই রহস্য উন্মোচনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করছেন।

আরও পড়ুনমহাবিশ্বের শুরু কখন২৩ নভেম্বর ২০২৪

ডার্ক ম্যাটারের জন্য সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব হচ্ছে, এই পদার্থ উইকলি ইন্টারঅ্যাকটিং ম্যাসিভ পার্টিকেলস (ডাব্লিউআইএমপিএস) নামে পরিচিত কণার একটি গ্রুপ। ডার্ক ম্যাটার শনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ক্ষুদ্র ডার্ক ম্যাটার কণা একে অপরকে আঘাত করছে আর নতুন চার্জযুক্ত কণা তৈরি করছে। এই নতুন উৎপাদিত চার্জযুক্ত কণা পরবর্তীকালে হাইড্রোজেন গ্যাসকে আয়নিত করতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রহস যময় করছ ন রহস য

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ