নিহত সেলিম তালুকদারের মেয়ের দায়িত্ব নিল জামায়াত
Published: 17th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত সেলিম তালুকদার রমজানের মেয়ে রোজার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার সেলিম তালুকদারের শ্বশুর বাড়িতে রোজাকে দেখতে এসে এ ঘোষণা দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান।
ড. শফিকুর রহমান বলেন, “এই শিশুটি নাম পরিবারের পক্ষ থেকে রাখা হয়েছিল রোজা। আমরা ওর নাম দিচ্ছি সাইমা সেলিম। এই শিশুর বড় হওয়া পর্যন্ত আমরা তার সঙ্গে থাকব। সে আমাদের পরিবারের সদস্য, আমাদের সবার কাছে আমানত। এই শিশুর পড়ালেখা, চিকিৎসাসহ তার বিয়ের দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামের।”
আরো পড়ুন:
বরগুনার নির্যার্তিত পরিবারের ব্যয় বহন করবে জামায়াত
ধর্ষকের বিচার সাত দিনেই দেখতে চাই: জামায়াতের আমির
তিনি আরো বলেন, “আমরা সবাই মিলেমিশে একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়ব। এই বাংলাদেশে প্রত্যেকটি মানুষ মানুষের দুঃখে সাড়া দেবে। বাংলাদেশে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র গঠন করবে। কোরআনের ভিত্তিতে এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি আমরা।”
জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার খুনিদের দ্রুত বিচার হোক, ন্যায় বিচার হোক দাবি করে জামায়াতের আমির বলেন, “বিচার হলেই শহিদদের পরিবার ও দেশবাসী শান্তি পাবে। সরকার প্রত্যেক শহিদ পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেটা দেওয়া হলে পরিবারগুলোর উপকার হবে। আহত যারা আছেন তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সংগঠন থেকে তৌফিক অনুয়ায়ী তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।”
তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সেলিম ছিলেন মেজো। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গেলে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ১৫ দিন হাসপাতালে থাকার পর গত ৩১ জুলাই রাতে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সেলিমের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরের টিঅ্যান্ডটি এলাকায়। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেডের সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি করতেন। মারা যাওয়ার এক বছর আগে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার মতিউর রহমান চুন্নুর মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেন সেলিম। তিনি মারা যাওয়ার ৪ দিন পর সুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা করিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন অন্তঃসত্ত্বা তিনি। মারা যাওয়ার আগে সেলিম তালুকদার জানতেন না তিনি সন্তানের বাবা হবেন।
গত শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝালকাঠির একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সেলিমের স্ত্রী কন্যা সন্তান জন্ম দেন।
ঢাকা/অলোক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা
খুলনায় মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় মনোয়ার হোসেন টগর নামে এক যুবক এবং শনিবার (২ আগস্ট) ভোরে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে আল-আমিন সিকদার নামে এক ভ্যানচালক খুন হন।
দিঘলিয়ায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
পুলিশ জানায়, শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নন্দনপ্রতাপ গ্রামে আল-আমিন সিকদার (৩৩) নামে এক ভ্যানচালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আল-আমিন ওই গ্রামের কাওসার শিকদারের ছেলে।
দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন বলেন, “আল-আমিনের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. আসাদুল ঝিনাইদহ থেকে এসে অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর আসাদুল পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।”
ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
নগরীতে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরদিকে, শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকায় নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতে খুন হন মনোয়ার হোসেন টগর (২৫) নামে এক যুবক। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক টগরের বাড়িতে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা তাকে ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এসআই আবদুল হাই বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হত্যাকারীরা টগরের পূর্ব পরিচিত। তাদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
ঢাকা/নুরুজ্জামান/ইভা