চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। তাঁরা দুজনই যুবদলের কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, যুবদলের দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে মারামারির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ভুজপুর থানার শান্তিরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রমজান আলী (২৫)। তিনি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব তারাকো গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে। আহত হয়েছেন মুহাম্মদ হাসান (২৩)। তিনিও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা।

ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ঘটনায় ভুজপুর থানায় গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে একটি হত্যা মামলা করেছে রমজানের পরিবার। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই যুবদলের কর্মী। এর মধ্যে চারজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মুহাম্মদ হাসান (২৩), মুহাম্মদ মহিম (২০), মুহাম্মদ ফোরকান (১৯) ও পেয়ার আহমদ (২৭)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই দাঁতমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে আহত যুবদল কর্মী হাসানের একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় নিহত রমজান আলীর পক্ষের যুবদলের কর্মীদের দায়ী করে আসছিলেন হাসানের পক্ষের লোকজন। তবে চুরির ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। চুরির বিষয়টি নিয়ে গতকাল রাতে সাড়ে নয়টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে রমজান ও মুহাম্মদ হাসান গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রমজান আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

যুবদলের নেতা-কর্মীরা জানান, রমজান আলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজিম উল্লাহ বাহারের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। তাঁর ওপর হামলাকারীরা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব সরোয়ার আলমগীরের অনুসারী। ঘটনার বিষয়ে জানতে আজিম উল্লাহ বাহারকে কল করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব সরোয়ার আলমগীর বলেন, পুলিশ আসামিদের না ধরায় গত ছয় মাসে ভুজপুরে পাঁচটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা যে পক্ষেরই হোক, তাঁদের পুলিশ গ্রেপ্তার করুক, সেটি তিনি চান। সরোয়ার আলমগীর আরও বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে বিশ্বাসী, সন্ত্রাসী-খুনি দলে রাখতে চাই না। ওই ইউনিয়নের বিএনপির দুজন নেতার প্রশ্রয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে।’

ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মূলত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনার জেরে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের লোকজনই বিএনপি ও যুবদলের কর্মী। তাঁদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়েও দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। তিনি আরও বলেন, ঘটনায় জড়িত চারজনকে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ম হ ম মদ ব এনপ র র ঘটন উপজ ল ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী

নোয়াখালীর হাতিয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির পাঁচ কর্মী। তাদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য একই দলের অন্য নেতার অনুসারীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা। 

আহত ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পায়েল (২৫)। তাদের বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারোবেকী গ্রামে। আহত সবাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের কর্মী-সমর্থক।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারের একটি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিহাব উদ্দিনের ভাষ্য, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। কিছু আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ জন্য চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। 

ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের ভাষ্য, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে আসার পথে হামলায় তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওই আসামিরাই বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোক।

তবে আলমগীর কবিরের দাবি, হামলায় তাঁর কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন না। এমন অভিযোগ সত্য নয়। 

হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপি নেতা তানভীর হায়দার ও আলমগীর কবিরের লোকজনের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
  • দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী