এ দেশের মুসলমানরা সংখ্যায় মেজরিটি হলেও কালচারালি মাইনরিটি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম ও আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাইখ আহমাদুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, “এ দেশের মুসলমানরা সংখ্যায় মেজরিটি হলেও আমরা কালচারালি মাইনরিটি। আমাদের সাংস্কৃতিকভাবে সংখ্যালঘু করে রাখা হয়েছে। এ দেশের দাড়ি টুপি নিয়ে কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে শুধুমাত্র কুরআন হাদিসের কথা বলবে, সেটা নিয়েও জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কিছু মিডিয়া ইসলামের প্রতি যে বিমাতাসুলভ আচরণ করে চলেছে, আমাদের ভাঙতে হবে।”

বুধবার (১৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘ইউনিভার্সিটি টিচার্স কনসোর্টিয়াম’ আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ স্থগিত

বহিষ্কৃত ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়, অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত

তিনি বলেন, “আমাদের বুক থেকে জগদ্দল পাথর সরে গেছে। কিন্তু সাংস্কৃতিক যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুসলমানরা যত বেশি শিক্ষিত হবে, তত বেশি এ দেশে সংখ্যালঘুরা ভালো থাকবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি তত বেশি সুন্দর হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইসলামের প্রতি এক ধরনের ভীতি এ দেশে এমনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, যেন ইসলাম মানেই আতঙ্কের নাম।”

তিনি আরও বলেন, “আজকের মুসলমানদের রক্তচোষারা ফিলিস্তিনের গাজার মানুষের রক্ত দিয়ে সকাল-বিকেল নাস্তা করে, খাবার খায়। তারা যুদ্ধ বিরতি ভঙ্গ করে পরিকল্পিতভাবে ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবসকে নির্বাচন করে সেহরির সময় আঘাত করেছে; এটা পরিকল্পিত। প্রতি বছর দেখবেন তারা ঠিক রমজান মাসে আঘাতটা করে। তারা পরিকল্পনা করে রমজান মাসে, ঈদের দিনে বাছাই করে করে তারা আঘাত করে।”

আহমাদুল্লাহ বলেন, “আমরা আজ নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দু-চার কলম লেখা, তাদের সহমর্মিতায় কখনো রাস্তায় মানববন্ধন করা, তাদের পক্ষে একটু প্রতিবাদ করার দায়িত্বটুকুও পালন করছি না। আমি একজন বাংলাদেশী হিসেবে লজ্জিত হই। কারণ ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো এ রকম নির্লজ্জভাবে এতটা নীরবতা, স্তব্ধতা, পৃথিবীর কোন দেশে আমার চোখে পড়েনি।”

আহমাদুল্লাহ আরো বলেন, “জাপানের মত দেশে যেখানে মুসলিমদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, সেখানে ফিলিস্তিন ইস্যুতে এত বড় মিছিল হয়েছে। কিন্তু আমার দেশে হচ্ছে না। পৃথিবীর বিভিন্ন অমুসলিম দেশে এমনকি খোদ আমেরিকা পর্যন্ত মানব ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক বর্বরোচিত, অসভ্যতার বিরুদ্ধে মানুষ ফুঁসে উঠেছে, রাস্তায় নেমে এসেছে, ইহুদি কোম্পানিগুলো বয়কট করেছে। আমার দেশে সেটা পর্যন্ত হচ্ছে না।”

শায়খ বলেন, “পশ্চিমা বা ইউরোপের দেশগুলোতে গেলে দেখা যায়, যারা আমাদের ‘সংখ্যালঘু সংখ্যালঘু’, ‘অধিকার অধিকার’ বলতে বলতে মুখে ফেনা ছুটায়, তারা শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে হ্যারাসমেন্ট করায়। তাদের এই যে ভালো মানুষের মুখোশটা আছে, এটা সরানোর দায়িত্ব আমাদের। আমাদের দেশীয় পরিষদ দেখেছি, বিভিন্নভাবে ইসলামের উপর আঘাত করা হচ্ছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, স্টেট ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক আকতার হোসেন, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল কালাম সরকার প্রমুখ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহম দ ল ল হ ইসল ম র র ম সলম আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।

হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ