এ দেশের মুসলমানরা কালচারালি মাইনরিটি: আহমাদুল্লাহ
Published: 19th, March 2025 GMT
এ দেশের মুসলমানরা সংখ্যায় মেজরিটি হলেও কালচারালি মাইনরিটি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম ও আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাইখ আহমাদুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, “এ দেশের মুসলমানরা সংখ্যায় মেজরিটি হলেও আমরা কালচারালি মাইনরিটি। আমাদের সাংস্কৃতিকভাবে সংখ্যালঘু করে রাখা হয়েছে। এ দেশের দাড়ি টুপি নিয়ে কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে শুধুমাত্র কুরআন হাদিসের কথা বলবে, সেটা নিয়েও জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কিছু মিডিয়া ইসলামের প্রতি যে বিমাতাসুলভ আচরণ করে চলেছে, আমাদের ভাঙতে হবে।”
বুধবার (১৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘ইউনিভার্সিটি টিচার্স কনসোর্টিয়াম’ আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ স্থগিত
বহিষ্কৃত ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়, অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত
তিনি বলেন, “আমাদের বুক থেকে জগদ্দল পাথর সরে গেছে। কিন্তু সাংস্কৃতিক যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুসলমানরা যত বেশি শিক্ষিত হবে, তত বেশি এ দেশে সংখ্যালঘুরা ভালো থাকবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি তত বেশি সুন্দর হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইসলামের প্রতি এক ধরনের ভীতি এ দেশে এমনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, যেন ইসলাম মানেই আতঙ্কের নাম।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের মুসলমানদের রক্তচোষারা ফিলিস্তিনের গাজার মানুষের রক্ত দিয়ে সকাল-বিকেল নাস্তা করে, খাবার খায়। তারা যুদ্ধ বিরতি ভঙ্গ করে পরিকল্পিতভাবে ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবসকে নির্বাচন করে সেহরির সময় আঘাত করেছে; এটা পরিকল্পিত। প্রতি বছর দেখবেন তারা ঠিক রমজান মাসে আঘাতটা করে। তারা পরিকল্পনা করে রমজান মাসে, ঈদের দিনে বাছাই করে করে তারা আঘাত করে।”
আহমাদুল্লাহ বলেন, “আমরা আজ নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দু-চার কলম লেখা, তাদের সহমর্মিতায় কখনো রাস্তায় মানববন্ধন করা, তাদের পক্ষে একটু প্রতিবাদ করার দায়িত্বটুকুও পালন করছি না। আমি একজন বাংলাদেশী হিসেবে লজ্জিত হই। কারণ ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো এ রকম নির্লজ্জভাবে এতটা নীরবতা, স্তব্ধতা, পৃথিবীর কোন দেশে আমার চোখে পড়েনি।”
আহমাদুল্লাহ আরো বলেন, “জাপানের মত দেশে যেখানে মুসলিমদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, সেখানে ফিলিস্তিন ইস্যুতে এত বড় মিছিল হয়েছে। কিন্তু আমার দেশে হচ্ছে না। পৃথিবীর বিভিন্ন অমুসলিম দেশে এমনকি খোদ আমেরিকা পর্যন্ত মানব ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক বর্বরোচিত, অসভ্যতার বিরুদ্ধে মানুষ ফুঁসে উঠেছে, রাস্তায় নেমে এসেছে, ইহুদি কোম্পানিগুলো বয়কট করেছে। আমার দেশে সেটা পর্যন্ত হচ্ছে না।”
শায়খ বলেন, “পশ্চিমা বা ইউরোপের দেশগুলোতে গেলে দেখা যায়, যারা আমাদের ‘সংখ্যালঘু সংখ্যালঘু’, ‘অধিকার অধিকার’ বলতে বলতে মুখে ফেনা ছুটায়, তারা শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে হ্যারাসমেন্ট করায়। তাদের এই যে ভালো মানুষের মুখোশটা আছে, এটা সরানোর দায়িত্ব আমাদের। আমাদের দেশীয় পরিষদ দেখেছি, বিভিন্নভাবে ইসলামের উপর আঘাত করা হচ্ছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, স্টেট ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক আকতার হোসেন, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল কালাম সরকার প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহম দ ল ল হ ইসল ম র র ম সলম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।