Risingbd:
2025-06-16@06:03:14 GMT

ইতিকাফের মর্যাদা ও বিধান

Published: 20th, March 2025 GMT

ইতিকাফের মর্যাদা ও বিধান

আরবি ‘ইতিকাফ’ অর্থ অবস্থান করা। পরিভাষায় ইতিকাফ বলা হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদে অবস্থান গ্রহণ করা। ইতিকাফ পবিত্র রমজানের গুরুত্বপূর্ণ আমল। মহানবী (সা.) রমজান মাসে নিয়মিত ইতিকাফ করতেন। পূর্ববর্তী নবী-রাসুলরাও ইতিকাফ করেছেন বলে কোরআন, সুন্নাহ ও ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)

আবু হুরাইরা (রা.

) বলেন, ‘রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)

রমজান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করা সুন্নত। সার্বিক বিবেচনায় এটি রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এটা রমজানের ফল ও ফসল ঘরে তোলার সময়। কেননা রমজানের শেষ দশকেই শবে কদর হয়ে থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে অধিক পরিমাণ ইবাদত করতেন এবং নির্বিঘ্নে ইবাদতের জন্য তিনি ইতিকাফ করতেন। উপমহাদেশের বিখ্যাত দার্শনিক আলেম শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভি (রহ.) বলেন, ‘মসজিদের ইতিকাফ হচ্ছে হৃদয়ের প্রশান্তি, আত্মার পবিত্রতা ও চিত্তের নিষ্কলুষতা। চিন্তার পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা। ফিরিশতাকুলের গুণাবলি অর্জন এবং লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য ও কল্যাণ লাভসহ সব ধরনের ইবাদতের সুযোগ লাভের সর্বোত্তম উপায়। এ জন্য রাসুল (সা.) নিজে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইতিকাফ পালন করেছেন এবং তাঁর বিবিরাসহ সব সাহাবায়ে কিরামের অনেকেই এই সুন্নতের ওপর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আমল করেছেন।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা : ২/৪২)

আরো পড়ুন:

রমজান মাসে এই ভুলগুলো করছি না তো!

রমজানে আল্লাহর ক্ষমা লাভের উপায় 

ইতিকাফের বিধানাবলী

১. প্রতিটি মহল্লার মসজিদে ইতিকাফ করা মহল্লাবাসীর জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়াহ। অর্থাৎ মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে একদল মানুষ ইতিকাফ করলে অন্যরা দায়মুক্ত হয়ে যাবে। আর কেউ না করলে সবাই গুনাহগার হবে। 
২. এক মহল্লায় একাধিক মসজিদ থাকলে প্রত্যেক মসজিদে ইতিকাফ করা উত্তম। তবে তা জরুরি নয়। বরং যে কোনো মসজিদে ইতিকাফ করলে মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে যথষ্টে।
৩. সুন্নত ইতিকাফের সময় ১০ দিন। রমজানের শেষ দশকে তা আদায় করা হয়। এর সময় শুরু হয় রমজান মাসের ২০ তারিখ সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে এবং শেষ হয় শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে। 
৪. ইতিকাফকারী ২০তম রোজার সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে নিয়ত করে ইতিকাফের স্থানে প্রবেশ করা জরুরি। যদি কেউ ২০ রমজান সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথেই ইতিকাফে বসতে না পারে, বরং পরের দিন অর্থাৎ ২১ রমজান থেকে ইতিকাফ শুরু করে, তবে এটি মাসনুন ইতিকাফ বলে গণ্য হবে না, বরং এটি নফল ইতিকাফ হবে।

৫. ইতিকাফ ইবাদত। তাই তা স্বেচ্ছায় ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পালন করতে হবে। কাউকে টাকার বিনিময়ে ইতিকাফ করানো ও করা সম্পূর্ণ নাজায়েজ। এভাবে ইতিকাফ করানোর দ্বারা মহল্লাবাসী দায়মুক্ত হতে পারবে না।
৬. সুন্নাত ইতিকাফকারীর জন্য মানবীয় ও শরয়ি প্রয়োজন ছাড়া অন্য কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। সুতরাং সে প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ, ফরজ গোসল ও গায়ের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বের হতে পারবে।
৭. মসজিদের ভেতর ওজুর ব্যবস্থা না থাকলে ওজুর জন্য বের হতে পারবে। 
৮. ইতিকাফকারী ওজু করার জন্য মসজিদ থেকে বের হলে, তার জন্য ওজুর আগে বা ওজুর সময় দ্রুত সাবান দিয়ে হাত, মুখ ধুয়ে নেওয়ার অনুমতি আছে। তবে শুধু হাত, মুখ ধোয়ার জন্য বাইরে বের হওয়া জায়েজ হবে না।

৯. ইতিকাফের শেষ সময় হলো ঈদের চাঁদ ওঠার দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত। সূর্যাস্তের আগে চাঁদ দেখা গেলেও মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর মসজিদ থেকে বের হতে পারবে।
১০. যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছে, তার জন্য উত্তম হলো ঈদের নামাজ আদায় করে ঘরে ফেরা।
১১. মসজিদের এক তলা থেকে অন্য তলায় গেলে বা একাংশ থেকে অন্য অংশে গেলে ইতিকাফ নষ্ট হয় না। 
১২. ইতিকাফ অবস্থায় সিগারেট খাওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয়। শুধু সিগারেট খেতে মসজিদের বাথরুমে গেলেও ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে।
১৩. ইতিকাফ অবস্থায় শুধু নারীর ছবি দেখলে ইতিকাফ ভঙ্গ হয় না। তবে এর ফলে বীর্যপাত ঘটলে রোজা ও ইতিকাফ উভয় নষ্ট হয়ে যাবে।
১৪. হোটেল বা ভবনের মসজিদে ইতিকাফ করলে সুন্নত ইতিকাফ আদায় হয় না। সুন্নত ইতিকাফের জন্য মহল্লার মসজিদ হওয়া আবশ্যক।

১৫. একান্ত প্রয়োজন হলে মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করা যাবে। যেমন অনলাইনে কোনো কাজ করে দেওয়া। এটা কেবল নিরুপায় হলেই করা যাবে। 
১৬. নারীরা ঘরের একটি স্থান নির্ধারণ করে সেখানে ইতিকাফ করবে। তাদের জন্য মসজিদে ইতিকাফ করা মাকরুহ।
১.৭ নাবালেগ শিশু যার জ্ঞান-বুদ্ধি পরিপক্ক হয়েছে, সেও সুন্নত ইতিকাফ করতে পারবে। তবে তাকে রোজা রাখতে হবে।
১৮. ইতিকাফরত ব্যক্তি উপকারী বই-পুস্তক পড়তে পারবে।
১৯. ইতিকাফ অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা নাজায়েজ নয়, যদি না তা কোনো হারাম কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে অনিয়ন্ত্রিত মোবাইল ব্যবহার ইতিকাফের মাহাত্ম্য নষ্ট করতে পারে।  

নিম্নোক্ত কারণে সুন্নত ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যায়

১. কোনো প্রাকৃতিক বা শরয়ি কারণ ছাড়া মসজিদ থেকে বের হওয়া।
২. রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা।
৩. ইতিকাফের অবস্থায় সহবাস করা।
৪. মহিলা ইতিকাফে থাকলে হায়েজ বা নিফাস শুরু হওয়া।
৫. কোনো কারণে ইতিকাফের স্থান থেকে বাইরে বের হয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় অবস্থান করা।
৬. ভুলে মসজিদ থেকে বের হয়ে গেলেও ইতিকাফ ভেঙ্গে যায়। সে ক্ষেত্রে এক দিনের ইতিকাফ কাজা করতে হবে।

তথ্যসূত্র : রদ্দুল মুহতার ২/৪৪২; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৭/১৬৯; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ৫/৩৬১; ইমদাদুল ফাতাওয়া : ২/১৫২; আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৫
 

শাহেদ//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স য় ম স ধন রমজ ন রমজ ন র শ ষ দশক মহল ল ব স মসজ দ থ ক রমজ ন ম স র জন য ম মসজ দ র অবস থ য় ব র হওয় র মসজ দ র সময় করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

জামিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে হাতাহাতি, স্টেনোগ্রাফার আহত

লক্ষ্মীপুরে আদালতে একটি জামিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন বিচারকের আদালত বর্জন করেছে আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবীদের সাথে আদালতের কর্মচারীদের হাতাহাতি ও এজলাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে আহত হন ওই এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আদালত বর্জন করায় ভোগান্তিতে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা। 

জানা গেছে, রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামান (৩৫) এর বিরুদ্ধে গত ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর গত ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আইনজীবীরা। 

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, বাদী এবং আসামিদের মধ্যে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। ৫ জুন দিবাগত গভীর রাতে আসামিরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাদীর ভবনের সামনে থাকা একটি লোহার গেট কেটে নিয়ে এবং গেটের পিলার ভেঙে একটি পিক-আপ গাড়িতে করে রায়পুরের দিকে নিয়ে যায়। রায়পুর বাসাবাড়ি এলাকায় গেলে পিকআপ গাড়িটি টহল পুলিশ আটক করে। পরে গাড়িটি জব্দ ও চালক রুবেলকে আটক করে পুলিশ। মামলায় বাদী আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থণা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদি আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নয়। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা অন্য আইজীবীদের দ্বারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। অন্যদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন। 

আদালত সূত্র আরও জানায়, আসামিরা ৯ জুন জামিনের জন্য আবেদন করলে পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্ত সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। 

বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার বন্ধে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং গ্রেপ্তারের পর থেকে আসামিরা জামিনের শুনানির সুযোগ পাননি। চারদিন তাদের হাজতবাস হয়েছে। ৬ জুন আসামি গ্রেপ্তার হলেও বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা জামিন শুনানির জন্য কোন আইনজীবী পাননি এবং লিগ্যাল এইড অফিসের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নিতে অনীহার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিন অযোগ্য ধারায় গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে উভয় দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হলো। 

আদালত আসামিদের রিমান্ড না মঞ্জুর করে চারদিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনা করে আসামি কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকা বন্ডে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের জামিন হওয়ায় পর থেকেই আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এ ঘটনায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিচারকের অপসারণের দাবি জানান।

ঈদের বন্ধ শেষে রবিবার (১৫ জুন) আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবী সমিতি বৈঠক করে ওই আদালতের বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালতের বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিন সকাল থেকে ওই বিচারকের কক্ষে বিচারপ্রার্থীরা এসে উপস্থিত হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বিচারপ্রার্থী জানান, আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এ সময় ৭-৮ জন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে হট্টগোল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এ সময় আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। 

আহত আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘‘আইনজীবীরা হট্টগোল করায় বিচারকের নির্দেশে আমি দরজা বন্ধ করতে গেলে আমার ওপর আইনজীবীরা হামলা করে। এতে আমার বাম চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম হয়।’’  

উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান জানান, কয়েকজন আইনজীবী এজলাসে গিয়ে আদালত বর্জনের বিষয়টি জানিয়ে দিতে গিয়েছেন। আদালত কর্মচারীরা উল্টো তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে তিনি নিজেও আহত হন।

ঢাকা/লিটন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ