১৫ রমজানের পর থেকে বাজার জমলেও বিক্রি নিয়ে হতাশ ব্যবসায়ীরা। এটি নোয়াখালী জেলার ঈদবাজারের চিত্র। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকানে প্রচুর লোকজনের সমাগম হলেও বেচাবিক্রি কম। বিক্রি গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। এর জন্য দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও অস্থিরতাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
কলেজছাত্রী সাবিনা আক্তার, রুবিনা আক্তার, আফরোজ, গৃহবধূ ফারজানা ইয়াছমিন, শিক্ষিকা আকলিমা আক্তারসহ অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেন, অভিজাত শপিং সেন্টারের মালিকরা এক দামের নামে (ফিক্সড রেট) ক্রেতাকে  ঠকাচ্ছেন। প্রতিটি শাড়ি ও থ্রি-পিসে তারা দ্বিগুণ মুনাফা করছেন। এটি প্রতারণা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন যথাযথ তদারকি করলে ক্রেতা উপকৃত হবেন।  
শপিং মল বিশাল সেন্টারের মালিক শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গত বছর ২০ রমজানে দোকানে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড় ছিল। প্রচুর বেচাকেনা হয়েছিল। এ বছর অর্ধেক বিক্রিও নেই। ঈদ উপলক্ষে দোকানে দেড় কোটি টাকার পোশাক তোলা হলেও বিক্রি নেই।’ তিনি বলেন, যাদের হাতে টাকা রয়েছে তারা সবাই পলাতক ও আত্মগোপনে থাকায় কেনাকাটা কম, তাই ব্যবসায় মন্দা চলছে।’
কোলকাতা বাজারের ম্যানেজার মো.

আলা উদ্দিন বলেন, ‘আগামী ২৩ মার্চ সরকারি কর্মকর্তাদের মার্চ মাসের বেতনভাতা হবে। এর পর বিক্রি বাড়তে পারে।’ নোয়াখালী সুপারমার্কেট 
ব্যবসায়ী পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসরাম রায়হান বলেন, ‘অন্যান্য বছর ৫-৬ রমজানের পরই বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়। কিন্তু এবার ২০ রমজান পেরিয়ে গেলেও কাঙ্খিত বেচা বিক্রি নেই।’
আল মদিনা ক্লথ ষ্টোরের ব্যবস্থাপক মোঃ আসাদুজ্জামান তারেক বলেন, এবার ঈদে জর্জেট ২২০০ থেকে ৫০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিশাল সেন্টারের মো. সোহেল বলেন, পাকিস্তানি সাদা বাহার, সারারা, ভারতীয় গাউনের চাহিদা বেশি। এছাড়া কিশোরিদের সারারা, গাউন, লেহেঙ্গা ও পার্ট ফ্রগ বেশী ছলছে। এসব পোশাকের দাম ৫ থেকে ৯ হাজার টাকা।  
দেশী পোশাক বেনারশী কিংবা জামদানি শাড়ির খ্যাতি দেশজুড়ে থাকলেও ঈদ বাজারে তারা প্রতিফলন নেই। ক্রেতারা বিচিত্র নামের ও বাহারি ডিজাইনের পাকিস্তানি ও ভারতীয় শাড়ির প্রতি ঝুঁকছেন। প্রতিটি দোকানে ৫ হাজার থেকে ২৭ হাজার টাকা দামের ভারতীয় ও পাকিস্তানী শাড়ি রয়েছে। এবার পাকিস্তানী পোশাকের কাছে দেশীয় তৈরি ও ভারতীয় পোশাক কিছুটা মার খেয়েছে। 
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্যাহ আল ফারুক বলেন, ‘রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ক্রেতা সাধারণ ও ঈদে ঘরমুখী মানুষের নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।’
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত শপিং সেন্টারে একদামের নামে (ফিক্সড রেট) ক্রেতা ঠকানোর বিষয়টি তার জানা ছিল না। ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমম্বয়ে গঠিত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে। ’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।

আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।

আরো পড়ুন:

মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি

তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন

সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।

দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।

৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।

কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”

তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় যুবদল নেতা শাহিনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া  
  • শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা আইনজীবী ফোরামের পদযাত্রা
  • রাবি উপাচার্যের চেয়ার টেনে পদ্মায় ফেলার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি