যশোরে একের পর এক নদীর সর্বনাশ ঘটিয়েছে কম উচ্চতার ও অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত সেতু ও কালভার্ট। যশোরে কম উচ্চতার ১১ সেতুতে ‘নদী হত্যা’, ‘নদের টুঁটি চেপে ধরেছে ৫১টি সেতু-কালভার্ট’—এমন সব শিরোনামে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যশোরের নদীর পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। সম্পাদকীয়ও প্রকাশ করা হয়। এরপরও কম উচ্চতার সেতুর নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না। যশোরে আরেকটি নদী হুমকির মুখে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
যশোরে যথাযথ উল্লম্ব-অনুভূমিক জায়গা না রাখায় সেখানকার পাঁচটি নদীর ওপর আটটি সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। নির্মাণাধীন ওই সেতুগুলোর বিষয়ে কোনো সুরাহার আগেই আরও একটি কম উচ্চতার সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। সদর উপজেলার গোয়ালদাহ বাজারে হরিহর নদের ওপর ‘অপরিকল্পিত’ এই সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
যশোরের ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সেখানে চারটি নদ-নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান সরকার। ওই চার নদীর মধ্যে সদর উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হরিহর নদও রয়েছে। সেটি বিবেচনায় না রেখেই সেখানে সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হলো। এমনকি এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে আলোচনা করেনি এলজিইডি।
পাউবোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই নদ খননের সময় সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ, এখন নদীর তলদেশ যে অবস্থায় রয়েছে, সেখান থেকে আরও ৭–৮ ফুট গভীর করে খনন করা হবে। সে ক্ষেত্রে সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি না,
তা নিয়ে ঝুঁকি রয়েছে। অপর দিকে উচ্চতা কম হওয়ায় পানিপ্রবাহও বাধাগ্রস্ত হবে।
সেতুর মাঝখান বরাবর যেখান থেকে পানি চলাচল করে, সেখানকার ফাঁকা জায়গা রাখা হচ্ছে ৩০ ফুটের মতো। এ ছাড়া সেতুর উচ্চতা হচ্ছে সমতল ভূমির সমান। পাউবো বলছে, নদীর তলদেশে পানির স্তর থেকে সেতুটির উচ্চতা হবে ২ দশমিক ৪৬ মিটার বা প্রায় ৮ ফুট। অথচ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বলছে, গেজেটে চার ধরনের নৌপথ রয়েছে। এর মধ্যে চতুর্থ নৌপথের ক্ষেত্রেও পানির স্তর থেকে সেতুর পাটাতন পর্যন্ত ন্যূনতম ১৬ ফুট উচ্চতা থাকতে হবে। তার মানে যে সেতু এখন নির্মাণ করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই এ শর্ত পূরণ করছে না। এ ছাড়া আরও গুরুতর বিষয় হচ্ছে, সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে বিআইডব্লিউটিএ থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এ সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। এলজিইডির এমন স্বেচ্ছাচারিতা কেন?
এভাবে সেতু বানিয়ে নদী ও নৌপথ ধ্বংসের কোনো মানে হয় না। যশোরে সেই কর্মকাণ্ডই ঘটছে একের পর এক। নদী ও নৌপথকে হুমকিতে ফেলা এমন প্রকল্প বন্ধ হোক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নায়িকা হতে আসিনি, তবে...
গুটি, সুড়ঙ্গ, মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন থেকে ওমর—সব সিনেমা-সিরিজেই প্রশংসিত হয়েছে আইমন শিমলার অভিনয়। অল্প সময়ের উপস্থিতিতেও নিজের ছাপ রাখতে পেরেছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। ধূসর চরিত্রেও তিনি সাবলীল, অন্য তরুণ অভিনেত্রীদের থেকে এখানেই আলাদা শিমলা। তবে একটা কিন্তু আছে। এখন পর্যন্ত তাঁর অভিনীত আলোচিত চরিত্রগুলোর সবই চাটগাঁইয়া। শিমলা নিজে চট্টগ্রামের মেয়ে, একটা সময় পর্যন্ত বন্দরনগরীর বাইরে চেনাজানা ছিল সীমিত। এক সিরিজে তাঁর চাটগাঁইয়া ভাষা আলোচিত হওয়ায় পরপর আরও কাজে তাঁকে চাটগাঁইয়া চরিত্রের জন্য ভেবেছেন নির্মাতা।
এ প্রসঙ্গ দিয়েই অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপের শুরু করা গেল। শিমলা জানালেন, এ নিয়ে তাঁর নিজেরও অস্বস্তি আছে। চেষ্টা করছেন ‘চাটগাঁইয়া দুনিয়া’র বাইরে যেতে। সঙ্গে এ–ও জানিয়ে রাখলেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাঁর নিজের চরিত্র পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ কমই ছিল।
‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুটিংয়ের ঠিক আগে জেনেছি চরিত্রটি সম্পর্কে। তখন তো কিছু করার থাকে না। তবে যেসব কাজ করেছি, সবই আলোচিত পরিচালক আর অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে; এ অভিজ্ঞতার মূল্যও কম নয়। শিহাব (শিহাব শাহীন) ভাইয়ের সঙ্গে মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, কাছের মানুষ দূরে থুইয়া, রবিউল আলম রবি ভাইয়ের সঙ্গে ফরগেট মি নট আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া (শহীদুজ্জামান) সেলিম ভাইয়ের কথা বিশেষভাবে বলব। সুড়ঙ্গ ও ওমর—দুই সিনেমায় তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন,’ বলছিলেন তিনি।
ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রাহিমের সিনেমা জংলিতেও আছেন শিমলা। এ ছবিতে অবশ্য তাঁর চরিত্রটি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে না। সে জন্য সিনেমাটি নিয়ে তিনি বেশি উচ্ছ্বসিত। ‘মুক্তির পর থেকে সিনেমা তো বটেই, আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে প্রশংসা পাচ্ছি কিন্তু দুঃখের কথা, আমি নিজেই এখনো দেখতে পারিনি। ব্যক্তিগত ঝামেলা, শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। শিগগিরই আমার টিমের সঙ্গে দেখতে চাই,’ বলছিলেন তিনি।
আইমন শিমলা