ভোলার চরফ্যাসনে নির্যাতন সইতে না পেরে বিষপানে সাদিয়া বেগম নামে দুই সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি স্বজনের। শনিবার বিকেলে ওমরপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রোববার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ভোলা মর্গে পাঠিয়েছে। 

ঘটনার পরপরই সাদিয়া বেগমের লাশ ঘরে রেখে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্বজন তাঁকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত গৃহবধূ লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের কর্তার হাট এলাকার আবদুল মালেকের মেয়ে। 

স্বজনের অভিযোগ, ১০ বছর আগে ওমরপুর ইউনিয়নের মৃত শফিউল্লাহর ছেলে নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে জুনাইদ (৬) ও সামিয়া (৩) নামের দুই সন্তান রয়েছে। এক বছর আগে নাজিম উদ্দিন এক নারীকে গোপনে বিয়ে করেন। তাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছিলেন। চার মাস আগে বিষয়টি জানাজানি হলে বিরোধের সূত্রপাত। এর পর থেকে নাজিম উদ্দিন প্রায়ই সাদিয়াকে নির্যাতন করত।  সাদিয়া ও দুই সন্তান নিয়ে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে নাজিম উদ্দিনের ইন্ধনে শাশুড়ি রাজিয়া বেগম, ননদ নাজমা, আকলিমা, তাসলিয়া ও দেবর নুরে আলম তাঁকে মাঝেমধ্যেই মারধর করত। নির্যাতন সইতে না পেয়ে শনিবার বিষপান করেন সাদিয়া। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ঘরে ফেলে রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা সাদিয়াকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

সাদিয়ার মা ইয়ানুর বেগম জানান, সাদিয়ার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রায়ই তাঁকে মারধর করত। সাদিয়া তাঁর বড় ভাইকে ফোনে বিষয়টি জানান। শনিবারও তিনি ফোন করে তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে জানান। তিনি স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।  

চরফ্যাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বজন

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ