নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন সাদিয়া, দাবি স্বজনের
Published: 23rd, March 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে নির্যাতন সইতে না পেরে বিষপানে সাদিয়া বেগম নামে দুই সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি স্বজনের। শনিবার বিকেলে ওমরপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রোববার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ভোলা মর্গে পাঠিয়েছে।
ঘটনার পরপরই সাদিয়া বেগমের লাশ ঘরে রেখে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্বজন তাঁকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত গৃহবধূ লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের কর্তার হাট এলাকার আবদুল মালেকের মেয়ে।
স্বজনের অভিযোগ, ১০ বছর আগে ওমরপুর ইউনিয়নের মৃত শফিউল্লাহর ছেলে নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে জুনাইদ (৬) ও সামিয়া (৩) নামের দুই সন্তান রয়েছে। এক বছর আগে নাজিম উদ্দিন এক নারীকে গোপনে বিয়ে করেন। তাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছিলেন। চার মাস আগে বিষয়টি জানাজানি হলে বিরোধের সূত্রপাত। এর পর থেকে নাজিম উদ্দিন প্রায়ই সাদিয়াকে নির্যাতন করত। সাদিয়া ও দুই সন্তান নিয়ে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে নাজিম উদ্দিনের ইন্ধনে শাশুড়ি রাজিয়া বেগম, ননদ নাজমা, আকলিমা, তাসলিয়া ও দেবর নুরে আলম তাঁকে মাঝেমধ্যেই মারধর করত। নির্যাতন সইতে না পেয়ে শনিবার বিষপান করেন সাদিয়া। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ঘরে ফেলে রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা সাদিয়াকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাদিয়ার মা ইয়ানুর বেগম জানান, সাদিয়ার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রায়ই তাঁকে মারধর করত। সাদিয়া তাঁর বড় ভাইকে ফোনে বিষয়টি জানান। শনিবারও তিনি ফোন করে তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে জানান। তিনি স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
চরফ্যাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স বজন
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়
সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।
সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।
সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।
সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।
সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।
সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।
সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।