ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৮ দফা নির্দেশনা
Published: 25th, March 2025 GMT
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকাসহ সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা এবং ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে পুলিশকে ৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনাগুলো হলো—আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্টের সংখ্যা বাড়ানো, টহল বৃদ্ধি, আবাসিক হোটেল ও বস্তিতে অভিযান পরিচালনা, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও দেশবিরোধী ধ্বংসাত্মক আন্দোলন ও সমাবেশে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা।
এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও ভাড়া আদায় বন্ধ করা, কন্ট্রোল রুম স্থাপন, ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন পণ্যবহনকারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা এবং মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অষ্টম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সভায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে আগামীকাল স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এ ছাড়া ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাতে আইনশৃখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেটা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ঈদের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, কন্ট্রোল সেন্টারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ঈদের সময় ট্রাফিক, যানজট নিয়ন্ত্রণ—যেমন পদ্মা সেতু ও যমুনা সেতুতে দ্রুত টোল আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনকারী এবং সমুদ্রবন্দর, নৌবন্দর থেকে ছেড়ে আসা নির্মাণসামগ্রী বহনকারী লম্বা যানবাহনসমূহ ঈদের আগে তিন দিন ও পরের তিন দিন যেন মহাসড়কে চলাচল না করে, এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
ঈদের সময় লঞ্চ ও বাসে যেন বাড়তি ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা না হয়, সে বিষয়ে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা বৃদ্ধি করা হবে।
ঈদের আগে গার্মেন্ট ও শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান আছে বলে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা, এ বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স ও অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি শেষে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হচ্ছে কাল
ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটানা ১০ দিন বন্ধের পর আগামীকাল রোববার ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘ ছুটির পর আবারও স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে যাচ্ছে আর্থিক খাত। বন্ধের এই সময়ে অনলাইন ও এটিএম বুথের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের সুযোগ থাকলেও শেয়ারবাজারে কোনো লেনদেন হয়নি।
আর্থিক খাত–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নিকট অতীতে এক টানা ১০ দিন ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধের নজির নেই। ব্যাংক বন্ধ থাকায় ব্যবসা–বাণিজ্যেও একধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। বন্ধের এ সময়ে লেনদেন করতে গিয়ে ব্যাংক গ্রাহকদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। কারণ, এ সময়ে অনেক গ্রাহক এটিএম থেকে প্রয়োজনীয় সেবা পাননি। বেশির ভাগ ব্যাংক তাদের নিজেদের গ্রাহক ছাড়া অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্য এটিএম সেবা সীমিত করে দিয়েছিল। এ কারণে এটিএম থেকে অনেকে টাকা তুলতে পারেননি। তবে অনলাইন বা ইন্টারনেটনির্ভর লেনদেন চালু ছিল।
এদিকে করোনাভাইরাসের মহামারির ছুটির পর শেয়ারবাজারে টানা ১০ দিন লেনদেন বন্ধ ছিল। এতে শেয়ারবাজারে কোনো কার্যক্রম চলেনি। তবে এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে খুব বেশি আক্ষেপ ছিল না। কারণ হিসেবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এমনিতে শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে দরপতন হচ্ছে। তাতে প্রায় প্রতিদিনই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। লেনদেন বন্ধ থাকায় সেই ক্ষতি হয়নি। এ ছাড়া ১০ দিন সরকারি ছুটি থাকায় বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে খুব বেশি ক্ষোভ দেখা যায়নি।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে একটানা ১০ দিন বন্ধ ছিল। এ কারণে বন্দর থেকে আমদানি পণ্যও খুব বেশি খালাস হয়নি। তবে বন্ধের মধ্যে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখতে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম চালু ছিল। তবে অন্য সব অফিস আদালত ছুটির আমেজে থাকায় বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্য খুব বেশি খালাস করেনি। এ কারণে বন্দরে আমদানি পণ্যের কনটেইনারের সংখ্যাও বেড়ে যায়।
এদিকে ছুটি শেষে আগামীকাল ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে স্বাভাবিক লেনদেন চালু হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ব্যাংকের লেনদেন। আর শেয়ারবাজারে সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত একটানা লেনদেন চলবে।